মুনিরুল তারেক, বাংলাদেশঃ
বাংলাদেশের মায়ানমার সীমান্ত এলাকা কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলিতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান (৩৬) নিহত হয়েছেন। ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া চেকপোস্টে এ ঘটনা ঘটে। নিহত এই সেনা কর্মকর্তা যশোরের ১৩ বীর হেমায়েত সড়কের সেনানিবাস এলাকার মৃত এরশাদ খানের ছেলে।

পুলিশের দাবি, সাবেক মেজর রাশেদ খান তার ব্যক্তিগত গাড়িতে সঙ্গীসহ টেকনাফ থেকে কক্সবাজার যাচ্ছিলেন। মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া চেকপোস্টে পুলিশ গাড়িটি থামিয়ে তল্লাশি করতে চাইলে তিনি বাধা দেন। তর্কে জড়িয়ে এক পর্যায়ে তার কাছে থাকা পিস্তল বের করলে পুলিশ আত্মরক্ষায় গুলি চালায়। এতে রাশেদ খান গুরুতর আহত হন। পরে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আজ ১ আগস্ট দুপুরে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ইদের দিন সারাদেশে জঙ্গি হামলা চালানো সতর্কবার্তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো হয়েছিলো। তাই বাড়তি সতর্কতায় ছিল জেলা পুলিশ। বিশেষ করে উখিয়া-টেকনাফে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা হওয়া রেড এলার্ট জারি ছিলো।
আরও পড়ুনঃ করোনা আক্রান্ত ব্রাজিলের ফার্স্ট লেডি ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তি মন্ত্রী
এমন সময়ে শুক্রবার রাতে শাপলাপুরের একটি পাহাড় থেকে নেমে বোরকার মত দেখতে পোশাক পরিহিত দু-তিনজন মানুষ গাড়িতে উঠলে স্থানীয় লোকজন গাড়ির আরোহীদের ডাকাত বা আততায়ী সন্দেহ করে পুলিশকে খবর দেয়। বিষয়টি গুরুত্ব নিয়ে পুলিশ মেরিন ড্রাইভ চেকপোস্টে গাড়িটি থামানোর চেষ্টা করে। কিন্তু গাড়ির আরোহী একজন তার পিস্তল বের করে পুলিশকে গুলি করার চেষ্টা করলে আত্মরক্ষার্থে পুলিশ গুলি চালায়। এতে ওই ব্যক্তি মারা যান।
আরও পড়ুনঃ ভারতের পর এবার টিকটক নিষিদ্ধ করার পথে আমেরিকা, অধিগ্রহণ করতে চাই মাইক্রোসফট
পুলিশ সুপার আরো জানিয়েছেন, এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। আটক রয়েছে ২ জন। পুলিশ পিস্তলটি জব্দ করেছে। এছাড়া গাড়ি তল্লাশি করে ৫০ পিস ইয়াবা, কিছু গাঁজা এবং দুটি বিদেশি মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। একই ধরনের মদের বোতল এবং নানা ধরনের মাদক মিলেছে তাদের অবস্থান করা রিসোর্টেও।
‘নিহত সাবেক মেজর সিনহা একটি তথ্য চিত্র ধারণের কাজে এক নারী ও অপর ৩ পুরুষ সঙ্গীসহ গত এক মাস ধরে হিমছড়ি এলাকার নীলিমা রিসোর্টে অবস্থান করছিলেন বলে জানতে পেরেছি। ঘটনার সময় তার গায়ে সেনাবাহিনীর গেঞ্জি পরিহিত ছিলেন। এ কারণে সন্দেহ আরও বেড়েছিলো’- যোগ করেন এসপি।
এদিকে, পুলিশের গুলিতে প্রাক্তন সেনা কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে একজন উপ-সচিবের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সরকার। তিনি ইতোপূর্বে এসএসএফে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বিএমএ লং কোর্সের ৫০তম ব্যাচের কর্মকর্তা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584