নিজামুদ্দিন সেখ,নিউজফ্রন্ট রেজিনগর
:মাথার উপর ছাদ বলতে বিস্তীর্ণ আকাশ, নেই এক ফালি গাছের ছায়াও,রোদ আর বৃষ্টি সবই যেত মাথার উপর দিয়ে, এমনি ভাবে চলত বেলডাঙ্গা-২ পূর্ব চক্রের অমরপুর শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের ক্লাস থেকে স্কুলের যাবতীয় অফিসের কাজ।
দু হাজার সালে একজন সহায়িকা নিয়ে শুরু হয়েছিল পথ চলা, বিদ্যালয় আছে বেশ ।গুটি কতক পড়ুয়া নিয়ে, ছোট্ট ছোট্ট পায়ে শুরু হয়েছিল পথ চলা, দিনের দিনের বড়েই চলছিল পড়ুয়া,কিন্তু নেই কোন আশ্রয়,ফাঁকা জায়গাতেই চলত স্কুলের পঠন-পাঠন।তারপর স্কুলে আরও দুজন সহায়িকা আসেন।সহায়িকা দিলরুবা বিবি আসার পর স্কুলের সার্বিক অবস্থা দেখে চিন্তায় পড়েন তিনি,তখন নেই নেই করে স্কুল প্রায় বেশ কয়েক বছর অতিক্রান্ত ফাঁকা জায়গায়। স্কুলের জায়গা খোঁজার জন্য তারা গ্রামের সবার কাছে দরবার করেন, যান পরিচালন কমিটির কাছেও কিন্তু কারও কাছে কোন সহযোগিতা পাননি,ফিরতে হয়েছে শুন্য হাতে তবুও হতাশ হননি,অন্যদিকে ছাত্রদের কথা চিন্তা করে কপালে দুশ্চিন্তার ভাজ। কোথায় চলবে স্কুল।তারপর দরবার করেন হাই স্কুলের একটি জায়গা পাওয়ার জন্য ,এমনকি কিনে নিতে চেয়েছিলেন সহায়িকারা, যেখানে স্কুল হলে যাতায়াতের সুবিধা হত ছাত্র- ছাত্রীদের –কিন্তু না, কেউ এগিয়ে এল না সাহায্যে।সহায়িকারাও বদ্ধ পরিকর, স্কুল তারা স্থাপন করবেনই ,হাজার বাধা সহে চার জন নারী নামলেন জায়গা অনুসন্ধানে,অবশেষে পেলেন মাঠের জমি, বাঁধা সেখানেও উচ্চ মূল্য,কিন্তু হাতে সামান্য বেতন মাত্র হাজার টাকা- যত টুকু জমি নুন্যতম প্রয়োজন ,তা্র দাম প্রায় লাখ খানিক,কি হবে উপায়? চারজনে সিদ্ধান্ত নিলেন—বেতনের টাকা তেই কিনবেন স্কুলের জায়গা।কিন্তু গৃহেও ত আর্থিক অনটন,তবুও স্কুল ত করতেই হবে।জমাতে শুরু করলেন বেতনের টাকা- প্রায় ২৫ মাস পর টাকা জমিয়ে কিনলেন স্কুলের জায়গা-৬ শতক মত, তারপর ২০১৫ সাল নাগাদ প্রশাসনের সহযোগিতায় শুরু হয় মাথার উপর আশ্রয় বানানোর প্রক্রিয়া,সে পথেও এসেছে কিছু রাজনিতির বাধা-অহেতুক সমস্যা ও অবাঞ্ছিতের প্রবেশ,তা সত্ত্বেও দমে যাননি মহায়সী ফজিলা বেগম,দিলরুবা বেগম ,রইশা বিবি আর হাসিনা বানুরা।
আজ ঘর হচ্ছে,আসছে অন্যান্য পরিকাঠামোও ফলে খুশির হাওয়া স্কুল চত্তরে।মুখ্য সহায়িকা-ফজিলা বিবি জানালেন-“আজ আমাদের স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা তিন শত এর কাছাকাছি, আজকের দিনের থেকে, চলে যাওয়া দিন গুলো ছিল খুবই অনিশ্চয়তা পূর্ণ ,স্কুল করতে পা পারলে ছাত্রদের মুখের দিকে তাকাতে পারতাম না,আজ আমারা খুব মনের শান্তি অনুভব করছি,এটা আমাদের চার সহায়িকা ও আমাদের পরিবারের সহযোগিতায় সম্ভব হয়েছে”।(বাইট)। হাসিনা বানু ,সহায়িকা (বাইট)।তাদের এই প্রচেষ্টায় খুশি-মিড-মিল কর্মী রা। অনেকে অর্থ সমুদ্র থেকে দান করেন জল, সমুদ্র আর টেরও পায়না,কিন্তু যদি কেউ এক বিন্দু জলের সমস্ত দান করেন,তাহলে তার দান মহত্বের চরম নিদর্শন হয়ে থাকে,যা করেছে এই সহায়িকারা, তাদের কুর্নিশ জানালেন-এলাকার বিশিষ্ট শিক্ষক অচিন্ত্য গনাই।তাদের এই দান স্মৃতির পাতায় অমর হয়ে থাক আশা –সকলের।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584