পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ শারীরিক অক্ষমতার প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করে সফল বীরভূমের শ্রী শ্রী অরবিন্দ ইনস্টিটিউট অফ সাইটলেস স্কুলের দুই ছাত্র সঞ্জয় ও মনোজিৎ।
তারা দুজনেই জন্মান্ধ। এই পৃথিবী কি জিনিস তা তাদের চোখের দেখা কোনোদিন হয়নি, হয়েছে শুধু অনুভব করা। তা সত্ত্বেও হাজার ইচ্ছায়, হাজার প্রতিকূলতার মাঝেও এবছর বসেছিল জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় – মাধ্যমিকে। প্রস্তুতি বেশ ভালোই ছিল। সেই মত পরীক্ষাও বেশ ভালো হয়েছিল। এবার ছিল শুধু ফলাফলের অপেক্ষা। ফল বেরোতেই আনন্দ কোথায় থাকে! আমরা যখন প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়ের লড়াইয়ে দৌড়ে বেড়ায়, তখন সঞ্জয় আর মনোজিতের মত ছাত্র ছাত্রীরা কেবলমাত্র ভালো ফলের আশায় বাঁচে। হ্যাঁ আর এই আশায় তাদের বাঁচিয়ে রাখলো। সঞ্জয় মণ্ডল ও মনোজিৎ দাস দুজনেরই খুবই ভালো নাম্বার পেয়ে সফল হয়েছে।
সঞ্জয় পেয়েছে ৫৮১ এবং মনোজিৎ পেয়েছে ৫৮০।
বিষয় অনুযায়ী সঞ্জয়ের প্রাপ্ত নাম্বার – বাংলা ৮০, ইংরেজি ৮৫, গণিত ৯২, ভৌত বিজ্ঞান ৮৬, জীবন বিজ্ঞান ৮৩, ইতিহাস ৭৩ এবং ভূগোল ৮২।
বিষয় অনুযায়ী মনোজিৎ-এর প্রাপ্ত নাম্বার – বাংলায় ৮০, ইংরেজি ৮১, গণিত ৯৪, ভৌত বিজ্ঞান ৯৩, জীবন বিজ্ঞান ৯০, ইতিহাস ৬৫, ভূগোল ৭৭।
এবিষয়ে আরও বলে রাখা ভালো যে এবছর এই সাইটলেস স্কুলে দুজনই পরীক্ষায় বসেছিল আর তাদের দুজনই খুব উজ্জ্বলতার সাথে সফল।
সঞ্জয় আর মনোজিৎ কেবল শারীরিক ভাবেই অন্যদের থেকে পিছিয়ে পড়া ছাত্র তাই নয়। এরা আর্থিক বা অন্যান্য যেকোন বিষয়েই বলুন না কেন অনেকটাই আমাদের আশেপাশে ঘুরে বেড়ানো পাঁচজনের থেকে পিছিয়ে। সঞ্জয়ের বাড়ি বীরভূমের মকদম নগরে। বাড়ির অবস্থা খুব একটা ভালোও নয়। বাবা রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল অন্যের জমিতে চাষ করে সংসার চালান। সঞ্জয় শ্রী শ্রী অরবিন্দ ইনস্টিটিউট অফ সাইটলেস স্কুলে থেকেই পড়াশুনা করতো।
অন্যদিকে মনোজিৎ এর বাড়ি রামপুরহাট। মনোজিৎ এর বাবা ও মা দুজনেই পরলোকগত। দাদারা ছাড়া নেই আর কেউই।
এমন হাজার প্রতিকূলতাকে দূরে সরিয়ে আজ তাদের এমন সাফল্যে স্কুল, আত্মীয় থেকে আরম্ভ করে গোটা বীরভূমবাসী গর্বিত।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584