পিয়ালী দাস,বীরভূমঃ
গত লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ১৪ হাজার ব্যবধান বেড়েছে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী শতাব্দী রায়ের।রাজ্যে বিজেপির দাপটে নিজের লোকসভা কেন্দ্রে জয়ী হতে সক্ষম হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী।
তবু তিনি স্বস্তিতে নেই। বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা এলাকার মধ্যে চারটি বিধানসভা এলাকায় বিজেপি থেকে তিনি পিছিয়ে আছেন।শতাব্দী রায় জেতার পর তার প্রতিক্রিয়া তে তিনি জানান, সাঁইথিয়া, সিউড়ি, দুবরাজপুর, রামপুরহাট, এই চার বিধানসভা এলাকায় কেন মানুষ তাকে ভোট দিয়ে সমর্থন করেননি সে বিষয়ে তিনি মানুষের সাথে কথা বলবেন।দ্বিতীয়বার হ্যাটট্রিক করেও যে উচ্ছ্বসিত হওয়ার কথা ছিল শতাব্দী রায়ের সেই পরিমাণ উচ্ছাস তিনি প্রকাশ করতে পারছেন না।
আরও পড়ুনঃ বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে শতাব্দী জয়ী হলেও বিমর্ষ কেষ্ট
পিছিয়ে পড়া চার বিধানসভা এলাকার পৌরসভাগুলোতে রীতিমত পর্যদুস্ত হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।তৃণমূল কংগ্রেস থেকে পৌর এলাকার ভোটাররা বিমুখ হয়েছেন তা ভোটের ফল ঘোষণার পরই পরিষ্কার হয়ে গেছে। এই ফল ঘোষণার পর বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল থিথিয়ে পড়েছেন। প্রতাপশালী এই তৃণমূল নেতার বদলে গেছে শারীরিক ভাষা।
যাকে বীরভূমের বাঘ বলা হয় সেই বাঘ যেন মনে হচ্ছে শীতঘুমে চলে গেছে।অনুব্রত মণ্ডল জানান বীরভূমের সমস্ত বিধায়ক, ব্লকের সভাপতি, অঞ্চল সভাপতি দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তারা যেন নিজের এলাকায় গুলো সামলে নেন।তবে অনুব্রত মণ্ডলের এই নির্দেশ কার্যকরী হবে কিনা সে নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে দলের অন্দরে। কারণ নির্বাচন প্রচার এগিয়ে অনুব্রত মণ্ডল যেভাবে ব্লক সভাপতি থেকে শুরু করে অঞ্চল সভাপতি দের ভোটের মার্জিন বাড়াবার জন্য টার্গেট বেঁধে দিয়েছিল তা কিন্তু অধিকাংশ তৃণমূল নেতাদের কাছে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছিল বলে দাবি অধিকাংশ কর্মীদের।
বীরভূমে দুটি কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস জিতেছে, ফলে হয়তো অনুব্রত মণ্ডলের রক্ষা হয়েছে,কিন্তু মানুষ চার বিধানসভা এলাকায় পরিষ্কারভাবে তৃণমূল কংগ্রেস কে বুঝিয়ে দিয়েছে জেলা জুড়ে যে নেতাদের বাড়বাড়ন্ত, উদ্ধত আচরণ তা কিন্তু মানুষ ভালো ভাবে মেনে নেয়নি। অনুব্রত মণ্ডল স্বীকার করেছেন হিন্দু ভোট তৃণমূল কংগ্রেসে পড়েনি বলেই চলে।
বিরোধীদের দাবি, জেলা জুড়ে যে সংগঠনের কথা অনুব্রত মণ্ডল মুখে আউড়েছে সেটা পুরোটাই ছাই। আদতে বীরভূম জেলায় তৃণমূলের সংগঠন বলতে কিছুই নেই। তৃণমূল কংগ্রেসের লোকের ভিড় বাড়িয়েছে শুধুই নিজেদের আখের গোছানোর জন্য।কারণ দলটা দেওয়া এবং নেওয়ার পন্থাতেই বিশ্বাসী।এই ফল শাসক দলকে চিন্তার মুখে ফেলেছে তাতে সন্দেহ নেই।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584