বেসুরো শতাব্দী’র মানভঞ্জনের চেষ্টা সৌগত – কুণালের

0
85

উজ্জ্বল দত্ত, কলকাতাঃ

‘বেসুরো’ বীরভূম সাংসদ শতাব্দী রায়কে ধরে রাখতে মরিয়া তৃণমূল। শতাব্দী রায় ফেসবুকে ফ্যানপেজে সরাসরি ব্যক্ত করেছেন তার ক্ষোভ। অসন্তোষ জানিয়েছেন দলের একাংশের প্রতি। জানিয়েছেন নিজের সমস্যার কথা। এই পরিস্থিতিতে আগামীকাল দিল্লি যাচ্ছেন সাংসদ শতাব্দী রায়।

political leaders | newsfront.co

সেখানে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও দেখা করতে পারেন তিনি। আর এরফলেই উস্কে উঠেছে জল্পনা। তবে কি এবার বিজেপিতে শতাব্দী? যে প্রশ্নের উত্তরে ধোঁয়াশা জিইয়ে রেখেছেন বীরভূম সাংসদ। এহেন অবস্থায় শতাব্দীর ক্ষোভ প্রশমনে তৎপর হল তৃণমূল। সাংসদ শতাব্দীর মানভঞ্জনের চেষ্টায় তাঁকে ফোন করলেন আরেক সাংসদ সৌগত রায়। জানতে চাইলেন ক্ষোভের কারণ। একইসঙ্গে দলের তরফে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও বীরভূমের সাংসদকে সৌগত রায় জানান বলে জানা গিয়েছে।

পাশাপাশি তাঁর বাড়িতে গিয়েছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও। এদিকে একদিকে দল যখন শতাব্দী রায়ের মানভঞ্জনে সচেষ্ট, তখন অন্যদিকে সাংসদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পাল্টা খোঁচা দিলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলও। তাঁর পাল্টা দাবি, “কে বলেছে কাজ করতে পারেনি? নিজের এমপি ফান্ডের টাকা নিজেই খরচ করেছেন।” প্রসঙ্গত, গতকাল ফেসবুকে ফ্যানপেজে দলের একাংশের প্রতি ক্ষোভ উগরে দেন শতাব্দী রায়। তারপরই তাঁর সেই পোস্ট ঘিরে শুরু হয় রাজনৈতিক জল্পনা।

ওয়াকিবহল মহলের মতে সাংসদের অভিযোগের নিশানায় অনুব্রত মণ্ডল-ই। নাম না করে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতির দিকেই আঙুল তুলেছেন তিনি। আর এবার তারই জবাব দিলেন অনুব্রত। আজ বাড়িতেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “কে বলেছে কাজ করতে পারেনি? নিজের এমপি ফান্ডের খরচ নিজেই করেছেন। আমরা এবিষয়ে জানি না। আর কাজ করতে পারেননি বলে কোনওদিন আমাকে জানাননি।”

আরও পড়ুনঃ আগামিকালই দিল্লি যাচ্ছেন শতাব্দী, বিজেপিতে যোগ নিয়ে জল্পনা

এর পাশাপাশি শতাব্দী রায়ের বিজেপিতে যাওয়ার প্রসঙ্গে জল্পনা নিয়ে তাঁর জবাব, “আমি একজন কর্মী। আমি এবিষয়ে কিছু বলব না। আর বিজেপিতে যাওয়ার কথা তো এখনও কিছু বলেননি। কিছুদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রীর সাথে নিজে হেঁটেছেন শতাব্দী রায়! আর কি!”প্রসঙ্গত, তৃণমূলের বীরভূমের সাংসদ স্পষ্ট জানান, “আমার তো একস্ট্রা কিছু চাওয়ার নেই। আমার ব্যক্তিগত আক্রমণও নেই। আমার শুধু একটাই কথা যে, আমাকে আমার প্রাপ্য সম্মানটুকু দেওয়া হোক।”

একইসঙ্গে তিনি আরও বলেন যে দিল্লি যাওয়ার আগে দলনেত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন কিনা, সেবিষয়ে এখনও কিছু ঠিক করেননি। পাশাপাশি, কাজ করতে সমস্যা নিয়ে জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে জানানোর বিষয়ে তাঁর সংক্ষিপ্ত জবাব, “অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে কথা হয়নি।” অন্যদিকে ‘পুরনো বন্ধুর বাড়িতে গল্প করতে এসেছিলাম৷’ বলে জানালেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। শুক্রবার বিকেলে কলকাতায় শতাব্দী রায়ের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এই কথাই জানালেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ৷

আরও পড়ুনঃ কাঁথি পুরসভার প্রশাসক কমিটির দায়িত্ব নিলেন মামুদ হোসেন, সুপ্রকাশ গিরি – রত্নদ্বীপ

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শতাব্দী রায়কে নিয়ে রাজনৈতিক জল্পনা তুঙ্গে৷ ফলে ‘বেসুরো’ শতাব্দীর মান ভাঙাতেই কি কুণাল ঘোষ গিয়েছিলেন? এই প্রশ্নের উঠেছিল আগেই৷ কিন্তু কুণাল ঘোষ গোটা ব্যাপারটাকেই ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ বলে এড়িয়ে গেলেন৷স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে ঠোঁটের কোণায় হাসি ঝুলিয়ে রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ জানালেন, দল শতাব্দীর সঙ্গে কথা বলবে ৷ তিনি শুধু পুরনো বন্ধুর সঙ্গে কথা বলে গেলেন ৷ ভিতরে কী কথা হয়েছে, তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রকাশ করতে চান না বলেও জানিয়েছেন৷ তাই শতাব্দী-ইস্যুতে ড্যামেজ কন্ট্রোল হল কি না, তা নিয়ে ধন্দ রয়েই গেল৷

যদিও আগামিকাল শনিবার তাঁর দিল্লি যাওয়ার কথা ৷ সেই বিষয়টি অবশ্য তিনি অস্বীকার করেননি৷ সেখানে গেলে সাংসদ হিসেবে তিনি বিজেপির সাংসদদের সঙ্গে দেখা করতেই পারেন বলে জানান৷ তবে তাঁর সংসদীয় এলাকায় যথেষ্ট কাজ করার পরও তিনি কোনও অনুষ্ঠানে ডাক পান না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শতাব্দী৷ কিন্তু তাঁর ক্ষোভের কারণ অনুব্রত মণ্ডল কি না জানাননি৷এই পরিস্থিতিতে কেন হঠাৎ এমন ‘বেসুরো’ মন্তব্য করলেন শতাব্দী, সেই কারণেই সম্ভবত কুণাল ঘোষ সেখানে হাজির হয়েছেন ৷ এখন দেখার তিনি শতাব্দীর মান ভাঙাতে পারেন কি না !

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here