নিজস্ব সংবাদদাতা,পশ্চিম মেদিনীপুরঃ
কেউ বা সারাদিন মাঠে কাজ করে সংসার চালাত আবার কেউ বা অন্যের বাড়িতে কাজ করতে যেত।কিন্তু সকলের বাড়ির অবস্থায় ছিল নুন আনতে গিয়ে পান্তা ফুরিয়ে যাওয়ার অবস্থা।তার উপর ছিল বাড়ির পুরুষদের বেকারত্ব।
ফলে একদিকে যেমন দারিদ্রতা অন্য দিকে তেমনই রোজ রোজ অশান্তি লেগেই থাকতো।কিন্তু বর্তমানে ওসিএল সিমেন্ট কোম্পানি শালবনী প্রোজেক্টের সহায়তায় হাতের কাজ করে দারিদ্রতাকে দূরে সরিয়ে এগিয়ে চলেছে শালবনীর গৃহবধূরা।
নিজেদের হাতের তৈরি, মাদুর,ব্যাগ,আসন সহ বিভিন্ন ধরনের জিনিস তৈরি করে মাসের শেষে এখন তারা অনায়াসেই ছয় সাত হাজার টাকা রোজগার করছে।এতে যেমন সংসারে দারিদ্রতা দূর হয়েছে তেমনই সংসারে ফিরে এসেছে শান্তি।অন্যের দাসত্ব হয়ে কাজ করা নয়,নিজেরাই স্বাবলম্বী হয়ে এখন নিজেদের সংসার নিজেরাই চালিয়ে নিচ্ছে।
২০১৪ সালে শালবনীর গোয়াপিয়াশালের সামনে তৈরি হয় ওসিএল সিমেন্ট কারখানা।সেই কারখানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক হয়ে আসেন কবি ও সাহিত্যিক ডঃ জয়ন্ত কুমার ঘোষ। সেখানে কাজ করতে গিয়েই তিনি লক্ষ্য করেন এলাকার মানুষের দারিদ্রতা,বাড়িতে অশান্তি ছিল অহরহ।
তাই তিনি ঠিক করেন এলাকার মহিলাদের যদি স্বাবলম্বী করা যায় তাহলেই বাড়িতে ফিরবে শান্তি।সকলের মুখেই ফুটবে হাসি।যা ভাবা তাই করা।
তিনি নিজে কারখানা সংলগ্ন কামারমুড়ি,বেঁউচা,কুলাপাছুড়িয়া, গোদাপিয়াশাল,কাছারিরোড প্রভৃতি গ্রামের পিছিয়ে পড়া মহিলাদের গিয়ে বোঝান নিজেদের হতে হবে স্বাবলম্বী।তিনি তাদের হাতের কাজের জন্য প্রশিক্ষক রেখে ২০১৭ সালে একবছর ধরে প্রশিক্ষণ দেন হাতের কাজের।
আরও পড়ুনঃ মেখলা শিল্প ঘিরে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা গোয়ালপোখরে
১২৫ জন গৃহবধূকে নিয়ে চলে কর্মশালা।প্রশিক্ষণ শেষে জয়ন্ত বাবু নিজ উদ্যোগে কোম্পানীর তরফ থেকে হ্যান্ডলুম মেশিন,সেলাই মেশিন এনে সঙ্গে কাচামালের ব্যবস্থা করে দেন।এখন তারা নিজেরাই তৈরি করছে মাদুর,ব্যাগ,আসন, ফুলদানি সহ নানান জিনিস।
বিভিন্ন সংস্থা এসে সেই জিনিস কিনে নিয়ে যায় এবং তারা আবার নানান জিনিস তৈরি করার অডার্রও দিয়ে যান। এতে যে লভ্যাংশ হয় সেটা কর্মরত গৃহবধূ ভাগ করে দেওয়া হয়।
মাসের শেষে অন্তত পক্ষে এখন ছয় সাত হাজার টাকা অনায়াসেই রোজগার করে নিতে পারেন তারা। বর্তমানে ৭৫ জন মহিলা কর্মরত আছেন।
কর্মরত এক গৃহবধূ মৌমিতা ধবলদেব বলেন, “বাড়িতে রোজগারের মতো কেউ ছিল না,ফলে দারিদ্রতা যেন গ্রাস করে ফেলেছিল।এখান হাতের কাজ করে এখন সংসার নিজেই চালিয়ে নিচ্ছি।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584