সিমা পুরকাইত, দক্ষিন ২৪ পরগনাঃ
অভাবের তাড়ানায় নিজের সদ্যোজাতকে বিক্রির অভিযোগ উঠল মায়ের বিরুদ্ধে। আর এই সন্তান বিক্রিতে সাহায্যকারী হিসাবে উঠে এল ডায়মন্ড হারাবার থানার অন্তর্গত কপাটহাট এলাকার পারুলিয়া মোড়ে অবস্থিত একটি বেসরকারি নার্সিং হোমের নাম।অবশেষে সংবাদমাধ্যম কর্মী এবং চাইল্ড লাইনের তৎপরতায় তা রুখে দেওয়া হয়।
ঘটনার প্রকাশ এই যে, জয়নগর থানার অন্তর্গত গোচরনের বাসিন্দা এক মহিলা ২৫ আগষ্ট তারিখে গর্ভবতী অবস্থায় ভর্তি হয় উল্লিখিত বেসরকারি নার্সিংহোমে।সেখানে সে ২৬ আগষ্ট একটি পুত্র সন্তান প্রসব করে। ২৭ আগষ্ট নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় পঞ্চাশ হাজার টাকায় ডায়মন্ড হারবারের ধন বেড়িয়ার নিঃসন্তান এক দম্পতিকে বিক্রি করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
সংবাদ মাধ্যমের কর্মীরা বিষয়টি জানতে পেরে তারা চাইল্ড লাইনে জানায়।।ঘটনার খবর পেয়ে চাইল্ড লাইনের সদস্য নূরউদ্দিন পুরকাইত ডায়মন্ড হারাবার থানার পুলিশের সাহায্য নিয়ে ওই বেসরকারি নার্সিংহোমে পৌঁছায়। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ নীতিশ ঘড়ুইয়ের কথায় অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায় এবং ঘটনাটি যে তারা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে তা উপস্থিত সংবাদিক পুলিশ এবং চাইল্ড লাইন কর্মীদের কাছে পরিস্কার হয়ে যায়।
জানা যায়,১০ টাকার স্ট্যাম্প পেপারে সই করে এই লেনদেন পর্ব চলেছে এবং জন্মের তিনদিনের মাথায় সেই সদ্যোজাতকে হস্তান্তরিত করা হয়েছে।এরপরই সদ্যোজাত শিশুকে মায়ের কাছে ফেরাতে উদ্যোগী হয় পুলিশ।
ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই নিঃসন্তান দম্পতি সদ্যোজাত শিশুকে নিয়ে নার্সিংহোমে হাজির হলে জানা যায়,তাঁরা প্রসূতির প্রসবের সমস্ত খরচ এবং অতিরিক্ত পঞ্চাশ হাজার টাকার বিনিময়ে এই সন্তান নিয়েছেন এবং স্ট্যাম্প পেপারে লিখিত করে নিয়েছেন পরবর্তীতে সন্তানের কোন অধিকার জন্মদাত্রী দাবি করতে পারবে না।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সদ্যোজাত শিশুর জন্মদাত্রী মা তার শিশুকে গ্রহণে অস্বীকার করে। উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান যে,ইতিমধ্যে তিনি তিন সন্তানের জননী।চতুর্থ সন্তানের ভরনপোষণের দায়িত্ব বহনের অপারগ তিনি তাই এই সন্তানকে তিনি ওই নিঃসন্তান দম্পতিকে দিয়ে দিয়েছেন বলে দাবি করেন।যদিও তার বিনিময়ে টাকার লেনদেন প্রসূতি অস্বীকার করেন।
আরও পড়ুনঃ কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার হাবে বিধ্বংসী আগুন!
পুর বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা বলেন জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ দেবাশীষ রায়। প্রশ্ন উঠছে, স্বাস্থ্য দফতর পুলিশ প্রশাসনের নজর এড়িয়ে কিভাবে নার্সিংহোমের সহযোগিতায় এভাবে আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে শিশু বিক্রির ঘটনা ঘটছে।এর পিছনে কি শুধুই নার্সিং কর্তৃপক্ষ নাকি অন্য কোন চক্র কাজ করছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করার কথা জানালেও আসলে সত্য কি প্রকাশ হবে থাকছে সে প্রশ্নও।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584