নিজস্ব প্রতিবেদন, নিউজ ফ্রন্টঃ
শুধুমাত্র টাইপ করার ভুলের সুযোগ নিয়ে পকসো আইনে যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেনি তামিলনাড়ুর ট্রায়াল কোর্ট। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও ঘটনাটি এরকমই।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তামিলনাডুর তিরুভারুর জেলার এক প্রত্যন্ত গ্রামের ঘটনা। প্রতিবেশীর যৌন লালসার শিকার হয় দু বছরের এক শিশু কন্যা। শিশুটির মা অভিযোগ জানান পুলিশের কাছে। তিনি লক্ষ্য করেন শিশুটির গোপনাঙ্গে এবং অন্তর্বাসে রয়েছে কিছু সাদা তরল পদার্থ এবং তা পুরুষের বীর্য বলেই শনাক্ত করেন তিনি। মেডিক্যাল রিপোর্টেও একই কথা বলা হয়। ঘটনায় অভিযুক্তকে পকসো আইনে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নির্যাতিতার মায়ের বয়ান রেকর্ড করার সময় বীর্য (semen) শব্দটি টাইপ করার ভুলে লেখা হয় semmann, তামিল ভাষায় যার অর্থ লাল রঙের মাটি। অর্থাৎ বয়ানের মানে দাঁড়ায়, বাচ্চাটির অন্তর্বাসে লাল রঙের মাটি দেখা গিয়েছিল। সেক্ষেত্রে তিরুভারুর মহিলা কোর্ট এই লাল রঙের মাটিকেই প্রামাণ্য ধরে নিয়ে যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করে ২০১৮ সালে। ট্রায়াল কোর্টের যিনি টাইপিস্ট তাঁর একটি বানান ভুল বাঁচিয়ে দেয় যৌন নির্যাতনের মতো মারাত্মক অভিযোগে অভিযুক্ত কে।
আরও পড়ুনঃ আদালত থেকে জেলগুলিতে ডিজিটাল মাধ্যমে পৌঁছবে জামিনের নির্দেশ, উদ্যোগী সুপ্রীম কোর্ট
এরপরে সম্প্রতি ট্রায়াল কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মাদ্রাজ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন নির্যাতিতার মা। বিচারপতি পি ভেলমুরুগানের এজলাসে মামলার শুনানি হয় এবং সমগ্র ঘটনাটি স্পষ্ট হয়ে যায়। ট্রায়াল কোর্টের বিচারক এবং অভিযোগের তদন্তকারী আধিকারিক দুজনের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণেই মুক্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল অপরাধী সেকথাও স্পষ্ট করেন তিনি। শুধু এই একটি শব্দের ভুলের সাহায্যেই তাঁর মক্কেলকে বাঁচান ডিফেন্স কাউন্সিল। তিনি প্রমাণ করেন কোন যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেইনি।
আরও পড়ুনঃ “এরা করোনার থেকেও ক্ষতিকারক”, গোপালের জামিন খারিজ করে মন্তব্য আদালতের
ট্রায়াল কোর্টের রায়কে তৎক্ষণাৎ খারিজ করে দেন হাইকোর্টের বিচারপতি এবং ট্রায়াল কোর্টের এই দায়িত্বজ্ঞানহীন বিচার প্রক্রিয়ার তীব্র ভর্ৎসনা করেন তিনি। আদালত জানায় অভিযুক্ত ব্যক্তি এই জঘন্য ঘটনায় পকসো আইনের ৯ ধারায় অপরাধী যা পকসো আইনের ১০ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য। এই মামলার রায়ে উচ্চ আদালত জানায়, শিশুদের ওপর যৌন নিগ্রহের মতো ঘটনায় অভিযুক্ত কোনভাবেই যাতে না আইন মোতাবেক শাস্তির হাত থেকে বাঁচতে পারে তা নিশ্চিত করাই আদালতের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584