শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
কলকাতা হাইকোর্টের একটি ঘরে বসিয়ে নেওয়া হয়েছিল নদিয়ার এক যুবকের ইন্টারভিউ। তারপর চাকরি দেওয়ার নামে তার কাছ থেকে সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় বেশ কিছু যুবক। ওই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে ৭ জনকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ। ধৃত সাতজনের মধ্যে দু’জন বেলেঘাটা, দু’জন চিনার পার্কের বাসিন্দা। বাকিদের বাড়ি নদীয়া ও উত্তর ২৪ পরগনায়।
পুলিশের কাছে অভিযোগে প্রতারিত নদিয়ার বাসিন্দা ওই যুবক জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি সরকারি চাকরি খুঁজছিলেন। সেই সূত্রেই কিছুদিন আগে তারই জেলার এক বাসিন্দা তাঁকে বলেন, হাইকোর্টে লোক নেওয়া হবে, ইন্টারভিউ চলছে। সেই এই যুবকদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। তবে চাকরির জন্য কিছু টাকা দিতে হবে বলে জানান ওই যুবক। চাকরির আশায় তিনি ওই যুবককে ধাপে ধাপে সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা দেন।
এরপর তাঁকে চিঠি দিয়ে ইন্টারভিউয়ের জন্য হাইকোর্টে ডাকা হয়। আদালতের একতলায় ভিতরের দিকে একটি ফাঁকা ঘরে চেয়ার-টেবিলে বসা এক ব্যক্তি ইন্টারভিউ নেয়। প্রশ্নোত্তর শেষে জানিয়ে দেওয়া হয়, চাকরি হলে পোস্টের মাধ্যমে নিয়োগপত্র চলে যাবে। এমনকি ওই যুবককে নিয়োগ পত্র পাঠানো হয়। তা নিয়ে হাইকোর্টে আসার পর নদীয়ার অভিযোগকারীকে বাইরে বসা এক যুবক হাজিরা খাতায় সই করায়।
আরও পড়ুনঃ লকডাউনের জেরে মাধ্যমিকের মার্কশিট বিলির দিনবদল মধ্যশিক্ষা পর্ষদের
‘রেজিস্ট্রি বুক’ নামে একটি খাতায় নিয়োগপত্রের খুঁটিনাটি লিখে রাখা হয়। সেই প্রতারক জানায়, এখন লকডাউন চলায় ভিতরে প্রবেশ নিষিদ্ধ। তাই বাইরে সইয়ের বন্দোবস্ত। হাইকোর্ট নির্দিষ্ট কয়েকদিন খুলছে। সেই দিনে তাঁকে আসতে হবে। সেই তারিখে হাজির হয়েই আদালত বন্ধ দেখে ওই যুবকের সন্দেহ হয়। খোঁজ করে রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে নিয়োগপত্র দেখালে জানতে পারেন, তার নিয়োগপত্রটি জাল। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে ওই যুবক পুলিশের দ্বারস্থ হন।
আরও পড়ুনঃ ভয়ের কিছু নেই, মাত্র ৫% রোগী আশঙ্কাজনকঃ মুখ্যমন্ত্রী
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, একই ভাবে আরও অনেক যুবক-যুবতীকে চিঠি পাঠিয়ে ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হয়েছিল। এরপর ডাকে তাঁদের কাছেও যায় নিয়োগপত্র। পুরো বিষয়টিতে হাইকোর্টের ভিতরের বেশকিছু লোকজনও জড়িত রয়েছে। তদন্তে নেমে হেয়ারস্ট্রিট থানার পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ এবং টাকা নেওয়া ব্যক্তির নাম ও ফোন নম্বর জোগাড় করে। মোবাইলের সূত্র ধরে তাকে আটক করা হয়। জানা যায়, এভাবে তারা অন্তত ৩৫ থেকে ৪০ জনকে ঠকিয়েছে। তার সূত্রেই ধীরে ধীরে আরও ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584