হুল্লোড় বাজ ‘খারাপ ছেলে’র দল পুজোর আনন্দ ভাগ করে নিল অনাথ শিশুদের সাথে

0
99

কার্তিক গুহ,ঝাড়গ্রামঃ

Shared Happiness with Orphaned Child
নিজস্ব চিত্র

পাঁচ বছরের ছোট্ট বিপুল।খুব ছোট বেলায় বাবা মাকে হারিয়ে ঠাঁই হয়েছে অনাথ আশ্রমে, কিংবা বছর আটের মঞ্জরী।বাবাকে মনে নেই।মায়ের কাছে বড় হওয়ার পরে হঠাৎ করেই একদিন মা হারিয়ে গেল।তারপরে আত্মীয়ের বাড়িতে ঠাঁই হয়েছিল বটে।কিন্তু সেখানে নিয়মিত খাবার জুটত না।শেষ পর্যন্ত তারও ঠাঁই হয়েছিল অনাথ আশ্রমে। এরকমই ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন প্রান্তের প্রায় ৫৫ জন অনাথ ও দুঃস্থ শিশু, কিশোর-কিশোরীর হাতে পুজোর নতুন জামা তুলে দেওয়া হল। এই নতুন জামা তুলে দিল ‘খারাপ ছেলেরা’। হ্যাঁ,শুনে একটু চমকাতেই হয়,খারাপ ছেলেই বটে।বাইক দাবড়ে শহরের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত কয়েক বছর আগেও যারা ঘুরে বেড়াতো।যাদের কাছে জীবনের মানে ছিল হুল্লোড় আর লেট নাইট পার্টি।সেই সমস্ত যুবকরাই এখন মানুষদের পাশে দাঁঁড়ান, বাড়িয়ে দেন সাহায‍্যের হাত।এই অসম্ভব সম্ভব হয়েছে কীভাবে? তাহলে ফিরে যেতে হবে বছর দেড়েক আগে। ঝাড়গ্রাম শহরের রাস্তায় শীতে কুঁকড়ে গিয়ে কাঁপছিল কয়েকজন পথের মানুষ।সেই সময় বাইক দাবড়ে যাওয়ার সময় চোখে পড়ে বিষয়টি। অমনি দেবাংশু, প্রতীক, দেবা, সিতম, বিজয়রা শীতে কাতর মানুষ গুলির কাছে গিয়ে তাঁঁদের শীত নিবারণের চেষ্টা করেছিলেন। তখনই তাঁদের মনে হয়, মানুষ এত কষ্টে থাকে! তার পর থেকেই সমাজসেবার দিকে মন।কিন্তু নিজেরাতো খারাপ ছেলে, তাই সেই সংগঠনের নাম দিয়ে ফেললেন “Bad Boy’s Foundation।” আর এই‌ এক বছরের মধ্যেই সংগঠন একেবারে পক্ত হয়ে উঠেছে।দুঃস্থ মানুষদের সাহায্য করা, কারোর খাওয়ার বেঁচে গেলে তা গরীব মানুষের হাতে তুলে দেওয়া, রাতবিরেতে কেউ বিপদে পড়লে ভরসা এই খারাপ ছেলেরাই। এবার মহালয়ার পুণ্যলগ্নে সেই রকম কিছু মলিন মুখে হাসি ফুটিয়ে দিল ওই খারাপ ছেলেরাই।তার জন্যে অবশ্য প্রস্তুতি ছিল বেশ কয়েক মাস ধরে। ফেসবুকের মাধ্যমে এবং বিভিন্ন ভাবে প্রচার করে প্রতীকরা জানিয়ে দিয়েছিলেন, ”আমাদের পাশে দাঁঁড়ান অন্তত দেড় হাজার ছোট ছেলেমেয়ে, যাদের নতুন জামার সংস্থান নেই, তাদের নতুন জামা দিতে হবে। মোটিভেশন বক্স তৈরি করে বিভিন্ন জায়গায় রাখা হয়েছিল। ফলও মিলল হাতেনাতে। ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন বস্ত্র প্রতিষ্ঠান যেমন এখানে বস্ত্র দান করেছেন, তেমনই ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন পেশার মানুষজনও দান করেছেন এখানে। এই ভাবে আস্তে আস্তে সংগ্রহ হয়েছে বহু জামাকাপড়। আর মহালয়ার দিন থেকেই শুরু হল সেই জামাকাপড় বিতরণের প্রক্রিয়া। সংস্থার সম্পাদক দেবাংশু পাহাড়ি জানালেন , মহাষষ্ঠী পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার শিশুদের বিলিয়ে দেওয়া হবে এই জামাকাপড়।আর মহালয়ার সন্ধ্যায় শহরের মঙ্গলম টাওয়ার এলাকায় এক পথ সভার মাধ্যমে এই কর্মসূচির সূচনা হল। অনুষ্ঠানে ছিলেন ঝাড়গ্রামের প্রাক্তন কাউন্সিলর জয়দীপ মল্লদেব, চিকিৎসক বিকাশ মণ্ডল, আইনজীবী কৌশিক সিনহা প্রমুখ।

Shared Happiness with Orphaned Child
নিজস্ব চিত্র

আরও পড়ুন: কলেজের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান 

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here