নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝাড়গ্রামঃ
ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চর্ম বিভাগের আউটডোরে দেরিতে ডাক্তার বসায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন রোগী ও পরিজনরা। জানা গিয়েছে, হাসপাতালে চর্মরোগের দু’জন চিকিৎসক রয়েছেন। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ অর্চনা সাহা বেশ কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে আসছেন না। চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত চিকিৎসক দেবলীনা মণ্ডলকে দিয়ে কোনোরকমে ছ’দিনের পরিবর্তে চারদিন আউটডোর খুলে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে, নিয়ম অনুযায়ী ছুটি না নেওয়ায় ও কাজে না আসায় অর্চনাদেবীকে পর পর দু’বার শো-কজ করলেন হাসপাতাল সুপার। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, নিয়ম মেনে ছুটি না নিয়েই অচর্নাদেবী কাজে যোগ দিচ্ছেন না। ফলে রোগী সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন দিন করে মোট ছ’দিন আউটডোরে বসতেন দুই চিকিৎসক। গত ২৮অক্টোবর থেকে ছুটির জন্য লিখিতভাবে আবেদন করেছিলেন অর্চনাদেবী। কিন্তু সেই আবেদন গৃহীত হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এখন ছুটি নিতে হলে অনলাইনে আবেদন করতে হয়। ১৫ দিনের বেশি ছুটি নিতে হলে স্বাস্থ্য দফতর থেকে অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু অর্চনাদেবী ১৫ দিনের পরও যোগদান না করায় গত ১৯ নভেম্বর শো-কজ করেন হাসপাতালে সুপার ইন্দ্রনীল সরকার। শো-কজের জবাবে অর্চনাদেবী জানিয়েছেন, তিনি কলকাতায় রয়েছেন। অথচ ১৯ নভেম্বর রাতে কদমকাননের মাঝেরপাড়া এলাকায় বাচ্চাদের শীতবস্ত্র বিতরণ করছিলেন তিনি ও তাঁর স্বামী। অর্চনাদেবীর স্বামী ২০নভেম্বর সেই ছবি দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন। যা জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে এসে পৌঁছেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, বাচ্চাদের জামাকাপড় দেওয়া খুব ভালো উদ্যোগ। কিন্তু চাকরিতে যোগ দিয়ে মানুষকে পরিষেবা দেওয়া আরও বেশি জরুরি। তাঁকে জানানো সত্ত্বেও কাজে যোগ দিচ্ছেন না। তবে অচর্নাদেবীর শো-কজের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাঁকে ফের আবার এদিন শো-কজ করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একজন চিকিৎসক দিয়ে ইর্মাজেন্সি, আউটডোর, ওয়ার্ডে পরিষেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেন, চিকিৎসক অর্চনা সাহা কাজে যোগ না দেওয়ায় চিকিৎসা পরিষেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে। আমরা দু’বার শো-কজ করেছি। এরপর আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব। এদিন চর্ম বিভাগে চিকিৎসক দেরি করার ক্ষেত্রে কমিউনিকেশন গ্যাপ হয়েছিল। মানুষের ভোগান্তি হয়েছে। পরে ওই চিকিৎসক সমস্ত রোগীকে দেখেছেন। এসব আগামী দিনে আর হবে না। অর্চনাদেবী বলেন, অনলাইনে ছুটির আবেদন না জমা দেওয়ায় শো-কজ করা হয়েছিল, তার উত্তরও দিয়েছি। শারীরিক কারণে ছুটি নিয়েছিলাম। ৪২ দিন ছুটি পাওয়ার কথা। এখনও একমাস হয়নি। সেসময় নতুন সুপার যোগ দেননি, আইডি ও পাসওয়ার্ড না থাকায় অনলাইনে আবেদন জানাতে পারিনি। দ্বিতীয় শো-কজের চিঠি পাইনি।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584