নিজস্ব সংবাদদাতা,পশ্চিম মেদিনীপুরঃ
ধর্মীয় কুসংস্কার অনাচারের বিরুদ্ধে সারাজীবন লড়াই করে যিনি ভারতকে আধুনিক মূল্যবোধের শিক্ষা দিলেন তাঁর মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদে সারা দেশ যখন প্রতিবাদে ক্ষোভে উদ্বেল তখন মূর্তি ভাঙার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের শ্বশুর কুলের আত্মীয়রা।
গত ১৪ মে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলকাতায় বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে দেওয়াকে জামাইয়ের অপঘাতে মৃত্যু হিসেবে ধরে নিয়ে ক্ষীরপাইয়ের এই ভট্টাচার্য পরিবার শোকে চারদিন ধরে অরন্ধন উপবাস শুরু করেন।আজ ১৭ই মে চতুর্থীতে ক্ষীরপাইয়ের কাছারিপাড়ায় চলছে তাঁরই পারলৌকিক ক্রিয়াকর্ম।
আরও পড়ুনঃ বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদে মিছিল বহরমপুরে
বিদ্যাসাগরের শ্বশুরবাড়ি ঘাটাল মহকুমার ক্ষীরপাই শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডে।ওই ওয়ার্ডের শত্রুঘ্ন ভট্টাচার্যের মেয়ের সাথে ১৮৩৪ সালে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বিবাহ হয়।সেই থেকেই পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ক্ষীরপাই তথা ভট্টাচার্য পরিবারের জামাই।
বিদ্যাসাগরের নিজের গ্রাম বীরসিংহে যেহেতু তাঁর রক্ত সম্পর্কিত কেউ থাকেন না,তাই শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই আজ বিদ্যাসাগরের পারলৌকিক শ্রাদ্ধের আয়োজন করেছেন। ভট্টাচার্য পরিবার মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন, বিদ্যাসাগরের মুর্তিকে খুন করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে বাঙালিরা যেমন সেই মৃত্যুকে অপঘাতে মৃত্যু হিসেবে ধরে পারলৌকিক ক্রিয়াকর্ম করে থাকে।তেমনি তাঁরা বাঙালি সংস্কার মেনে আজ চতুর্থীতে পুরোহিতের মন্ত্র উচ্চারণ মধ্য দিয়ে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার প্রকৃত ক্ষোভ প্রতিবাদের মাঝে এই ধরনের লঘু আয়োজন আসলে প্রকৃত প্রতিবাদকে লঘু করবে বলেই সংশ্লিষ্ট মহলের অভিমত।বিদ্যাসাগর বাঙালি জাতির প্রাতঃস্মরণীয় মনীষী তারা মূর্তিতে আঘাত আসলে ভারতের আধুনিক মূল্যবোধের উপর আঘাত।হীন রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে এই আক্রমনের সঠিক প্রতিবাদের রাস্তাকে দিকভ্রান্ত করতে এই আয়োজনও আসলে মূর্তিতে আঘাতের চেয়ে কোন অংশে কম নয় বলেই মনে করেন শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষেরা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584