নিজস্ব সংবাদদাতা, মুর্শিদাবাদঃ
করোনা আবহে ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে শিক্ষাঙ্গন বন্ধ রাখা হয়েছে। গতবছর একবার বিদ্যালয়ে পঠনপাঠন শুরু হলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মুখে আবারও তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে বর্তমানে করোনার প্রকোপ কমতে থাকায় অন্যান্য সমস্ত প্রকার জমায়েত চললেও, শিক্ষাঙ্গন বন্ধ রাখা হয়েছে। তাই অবিলম্বে স্বাস্থ্য বিধি মেনে বিদ্যালয় খোলার দাবি জানাল স্টুডেন্টস ইসলামিক অর্গানাইজেশন অফ ইন্ডিয়া, রাণীনগর ১ ব্লক শাখা।
ইসলামপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে শুরু হয়ে, নাজিরপুর, গোয়াস. বালুমাটি ঘুরে পুনরায় ইসলামপুর বাসস্ট্যান্ডে এসে শেষ হয়। সংগঠনের মুর্শিদাবাদ জেলা শিক্ষাঙ্গন সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া বলেন,”দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ফলে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ভেঙে পড়েছে।”
উল্লেখ্য যে, অন্যদিকে দীর্ঘ সময় স্কুল বন্ধ থাকার ফলে স্কুলছুট উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রসঙ্গে গোলাম কিবরিয়া স্কুলছুটদের পুনরায় বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে আকর্ষণীয় ও উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান। আজকের সাইকেল র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য তৌসিফ আহমেদ, ব্লক সভাপতি আমির চাঁদ খান, ব্লক সম্পাদক জহুরুল হাসান, প্রাক্তন ব্লক সভাপতি সোহেল রানা প্রমুখ।
সংগঠনের দাবি সমূহঃ
১) কোভিড-১৯ এর সতর্কতা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় খোলার জন্য সরকারকে তাৎক্ষণিক ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয়, বিদ্যালয় খুলে দিতে হবে।
২) স্কুলছুট সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি অন্তরায়। এই স্কুলছুট কোভিড-১৯ ও লকডাউনের কারণে মারত্মক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বৃদ্ধির হার রোধ করতে সরকারের উচিত আকর্ষণীয় এবং গঠনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা। স্কুলছুটদের পুনরায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে শিক্ষকদের মাধ্যমে প্রতিটি বাড়িতে পৌঁছাতে হবে।
৩) ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সমস্ত পড়ুয়াকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দিতে হবে। ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন ও পুরো পদ্ধতি সরলীকরণ করতে হবে। ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্যাম্পের আয়োজন করা যেতে পারে।
আরও পড়ুনঃ শিক্ষারত্ন পুরস্কারের জন্য মনোনীত জলঙ্গীর ফরিদপুর হাইস্কুলের প্রাক্তন সহকারী প্রধান শিক্ষক
বিদ্যালয় চালানোর পরামর্শ:
ক) প্রথম পর্যায়ে গ্রিন জোনে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলি অবিলম্বে চালু করতে হবে। অবশ্যই বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষে ন্যূনতম শিক্ষার্থী নিয়ে পরিচালিত হতে হবে। বিদ্যালয়ের নতুন করে খোলার প্রথম সপ্তাহে শিক্ষার্থীরা সকাল ৯ টা বা সকাল ১০ টা থেকে শুরু করে সর্বাধিক তিন ঘন্টা ক্লাসে অংশ গ্রহণ করবে। প্রয়োজনে, অন্য একটি ব্যাচ দুপুর ১টা থেকে অথবা ২টা থেকে শুরু করে তিন ঘন্টার জন্য উপস্থিত থাকতে পারে ( ক্লাসের সময় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের দ্বারা নির্ধারিত হবে)।
খ) মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে যেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০০ সেখানে একসাথে ৫০% শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকতে পারে। যে সমস্ত বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০০র অধিক সেখানে ২৫% শিক্ষার্থী একসাথে ক্লাসে যোগ দিতে পারে।
গ) শ্রেণিকক্ষে প্রতিটি বেঞ্চে একজন করে শিক্ষার্থী বসবে। শিক্ষার্থীদের একে অপরের থেকে দুই মিটার দৈহিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
ঘ) শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং অন্যান্য স্কুল কর্মী যারা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছে বা কোভিড-১৯ আক্রান্তের সম্ভবনা রয়েছে অথবা কোয়ারান্টাইনে রয়েছে তাদের স্বাস্থ্য বিভাগের দ্বারা নির্ধারিত দিনের সংখ্যা অতিক্রম করেই কেবল স্কুলে আসতে পারবে।
ঙ) যে সমস্ত পড়ুয়াদের পরিবার কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছে তাদের বিদ্যালয় আসা থেকে বিরত রাখতে হবে।
চ) স্কুল প্রাঙ্গণ, আসবাব, স্টেশনারি, স্টাফ রুম, জলের ট্যাঙ্ক, রান্নাঘর, ক্যান্টিন, পরীক্ষাগার, গ্রন্থাগার, এবং শৌচাগারকে নিয়মিত জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
ছ) রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে যেহেতু জলবাহিত রোগের সংক্রমণের ঘটনাও ঘটেছে তাই বিদ্যালয়ের জলের উৎস যেমন ট্যাঙ্ক এবং নলকূপ কে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
জ) প্রতিটি বিদ্যালয়ে ডিজিটাল থার্মোমিটার, মাক্স, স্যানিটাইজার এবং সাবানের পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্যবস্থা ও সংরক্ষণ রাখতে হবে।
ঝ) বিদ্যালয়ের স্টাফ রুমেও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। যে জায়গাগুলিতে পানীয় জল পাওয়া যায়, হাত ধোয়া হয় সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গোল মার্ক কাটতে হবে যাতে করে কোভিড-১৯ এর নিয়মাবলী কঠোরভাবে অনুসরণ করা যায়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584