এখন থেকে করোনায় মৃতের ৬ জন আত্মীয় থাকতে পারবেন সৎকারে

0
76

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

করোনায় কোনও পরিজনের মৃত্যু হলে শুধুমাত্র তার মৃত্যুর খবর টুকু ছাড়া আর কিছু জানতে পারতেন না তার প্রিয়জনরা। হাসপাতাল থেকে সোজা দেহ চলে যেত শ্মশানে। পরে সেই নিয়ম সামান্য পরিবর্তন করে প্লাস্টিকে মোড়া অবস্থায় দূর থেকে যাতে পরিবারের লোক দেখতে পারেন, সেই নিয়ম জারি করা হয়।

Corona dead body | newsfront.co
প্রতীকী চিত্র

কিন্তু তার পরেও মুখ দেখানো হাওড়ার শিবপুরের শ্মশানের ঘটনা সহ একাধিক জায়গায় তোলাবাজির অভিযোগ প্রকাশ্যে এলে মামলা দায়ের করা হয় হাইকোর্টে। এবার রাজ্যে সংক্রমণে কিছুটা লাগাম এলে এবং সুস্থতা কিছুটা বাড়লে হাইকোর্টের নির্দেশানুসারে নিয়ম আরও একটু শিথিল করল রাজ্য প্রশাসন।

স্বাস্থ্য দফতরের নয়া নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, এখন থেকে করোনায় কারও মৃত্যু হলে তাঁর শেষকৃত্যে পরিবারের সর্বোচ্চ ৬ জন অংশ নিতে পারবে।

আরও পড়ুনঃ ছত্রধরকে আদালতে গৃহবন্দি করে করোনা পরীক্ষা করার আবেদন এনআইএ-র

শুধু তাই নয়, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এ-ও বলা হয়েছে, এবার থেকে করোনা রোগীর দেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুরসভা অনুমোদিত এজেন্সিগুলিকে ফোন করে নিজেরাই ভ্যান ভাড়া করতে পারেন পরিজনেরা।

এজেন্সিগুলির নাম্বার দিয়ে দেওয়া হবে কলকাতা পুরসভার ওয়েবসাইটে। ভ্যান ভাড়া করার জন্য পুরসভার উপর নির্ভর করতে হবে না। এ জন্য আলাদা করে কোনও প্রোটোকলও মানতে হবে না করোনায় মৃতদের নিকটাত্মীয়দের।

৯ দফা এই নির্দেশিকায় যা যা উল্লেখ রয়েছে তা হল…

১) করোনা রোগীর মৃত্যুর পরে হাসপাতালের তরফে দেহটি তুলে দেওয়া হবে রোগীর নিকটাত্মীয়কে। এরকমই নিকটাত্মীয়রা সর্বোচ্চ ৬ জন সংখ্যায় দেহ নিয়ে যেতে পারবেন সৎকার করার নির্দিষ্ট জায়গায়। বাড়িতে বা নির্দিষ্ট সৎকারস্থল ছাড়া অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া যাবে না।

২) দেহ নিয়ে যাওয়ার ভ্যান একমাত্র সরকারি ওয়েবসাইটে থাকা নম্বরে ফোন করে সরকার অনুমোদিত সংস্থা থেকেই নিতে হবে।

৩) পরিজনের হাতে দেহ তুলে দেওয়ার আগে তা ভাল করে নির্দিষ্ট ব্যাগে মুড়তে হবে, মুখ চাপা দেওয়া থাকবে স্বচ্ছ প্লাস্টিকে। সবরকম নিয়ম মেনে দেহটি স্যানিটাইজ় করে নিতে হবে।

৪) যাঁরা সৎকারের সঙ্গে জড়িত থাকবেন তাঁদের মাস্ক, গ্লাভস তো বটেই, সেই সঙ্গে পিপিই-ও পরতে হবে সম্ভব হলে।

৫) যে গাড়িতে দেহ বহন করা হবে তা স্যানিটাইজ় করতে হবে।

৬) সৎকারের আগে শেষবারের মতো একবার মৃতের মুখের অংশটি খোলা যেতে পারে। এই সময়ে মন্ত্রপাঠ বা জল ছেটানো, ফুল ছোঁয়ানো—এই ধরনের কোনও ধর্মীয় আচার পালনের প্রয়োজন হলে তা করা যেতে পারে। কিন্তু দেহের কোনও অংশ স্পর্শ করা যাবে না, ভিড়ও করা যাবে না এই সময়ে।

৭) সৎকারে উপস্থিত সকলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবেন, সৎকার হয়ে গেলে সনিয়ম মেনে স্যানিটাইজ় করবেন নিজেদের। সৎকারস্থলও জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ উত্তরে কল্পতরু বঙ্গ মুখ্যমন্ত্রী

৮) যদি কোনও করোনায় মৃত রোগীর দেহ ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত পড়ে থাকে, কেউ নিতে না আসেন, তবে রাজ্য সরকারের খরচে, হাসপাতাল ও পুরকর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয় করে সৎকারের ব্যবস্থা করতে হবে।

৯) পুরসভার যে তিনটি শ্মশানকে করোনা রোগীর মৃতদেহ সৎকারের জন্য চিহ্নিত করেছে, অর্থাৎ নিমতলা, ধাপা এবং বিরজুনালা, সেখানেই সৎকার করতে হবে। কোন অবস্থাতেই অন্য কোনও শ্মশানে বা বাড়িতে করোনা রোগীর দেহ নিয়ে যাওয়া যাবে না।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here