শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
ডিভোর্সের মামলা নিয়ে বচসার জেরে শাশুড়িকে গুলি করে খুন করে মুহূর্তের মধ্যে নিজের মাথাতেও গুলি করে আত্মঘাতী হল এক যুবক।
শুধু তাই নয় ঘটনা তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারল, সোমবার সকালে স্ত্রী শিল্পী আগরওয়ালকেও ওই একই বন্দুকে খুন করে এদিন দুপুরেই কলকাতা বিমানবন্দরে নামে অমিত। নেমে সোজা চলে যায় ফুলবাগানের কাঁকুড়গাছি শ্বশুর শাশুড়ির ফ্ল্যাটে।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ফুলবাগান থানা এলাকার কাঁকুরগাছির একটি আবাসনে। জানা গিয়েছে, এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা নাগাদ পরপর তিন বার গুলির আওয়াজ শুনতে পান প্রতিবেশীরা। এরপরেই পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দু’জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে। শ্বশুরের দিকে গুলি চালালেও লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় প্রাণে বেঁচে যান তিনি। তদন্তে নেমেছে ফুলবাগান থানার পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ফুলবাগানের রামকৃষ্ণ সমাধি রোডের একটি আবাসনে থাকতেন বছর সত্তরের সুভাষ ধান্ধানিয়া এবং তাঁর স্ত্রী ললিতা। তাঁদের মেয়ে শিল্পীর সঙ্গে অমিত আগরওয়াল নামে ওই যুবকের তাঁরা বিয়ে দিয়েছিলেন। মেয়ে জামাই দুজনে বেঙ্গালুরুতে থাকতেন। কিন্তু মেয়ে-জামাইয়ের মধ্যে তেমন বনিবনা না হওয়ায় বিচ্ছেদের মামলা শুরু হয়। ২ বছর ধরে সেই মামলা চলছে।
এদিন বিকেল সাড়ে ৬ টা নাগাদ আচমকাই ধান্ধানিয়াদের ফ্ল্যাটে হাজির হয় অমিত। শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে ডিভোর্সের মামলার কথা বলতে বলতে উত্তেজিত হয়ে পড়ে সে। শ্বশুর সুভাষ ধান্ধানিয়ার দাবি, ইতিমধ্যে অমিত যে তার মেয়ে খুন করেছে তা তিনি জানতেন না।
উল্টে এই ডিভোর্সের মামলা এতদিন ধরে চলা সহ বিভিন্ন বিষয়ে বচসায় জড়িয়ে পড়ে সে। জামাইকে শান্ত করার চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। উলটে জামার পিছন থেকে আচমকাই বন্দুক বের করে ললিতাদেবীকে খুব কাছে গুলি করে অমিত।
আরও পড়ুনঃ সর্বদলীয় বৈঠকের আমন্ত্রণ জানিয়ে দিলীপকে ফোন মুখ্যমন্ত্রীর
তারপর তার দিকে গুলি চালায়। অমিতের শ্বশুর সুভাষ ধান্ধানিয়া ভীষণ আতঙ্কিত হয়ে পাশের ফ্ল্যাটে পালানোর চেষ্টা করেন। সেই সময়ই নিজের মাথায় গুলি চালিয়ে অমিত আত্মঘাতী হয়।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখে, সুভাষ ধান্ধানিয়ার ফ্ল্যাটে একদিকে পড়ে রয়েছে ললিতাদেবী এবং অন্যদিকে অমিতের মৃতদেহ। পাশে পড়ে রয়েছে তার আগ্নেয়াস্ত্র। মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় প্রতিবেশীদের বয়ানও নেওয়া হবে।
আবাসনের ওই ফ্ল্যাট সিল করে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে এসে পরীক্ষা করে দেখবে ফরেনসিক দল। এদিকে বেঙ্গালুরু পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে কি পেয়েছে তা জানতে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে তাঁদের সঙ্গেও। সুভাষ ধান্ধানিয়া এবং এই পরিবারের আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলে ঘটনাটি পরিষ্কার ভাবে জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।
(খবরটি প্রথম প্রকাশের সময় আগরওয়াল দম্পতির বলে একটি ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল। ছবিটি খবরের ঘটনার সাথে যুক্ত দম্পতির নয়। ভুল ধরা পড়ার সাথে সাথেই ছবিটি প্রত্যাহার করা হয়। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।)
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584