ব্যবসা বন্ধেও করোনা গাইডলাইন মেনে মাতৃবন্দনা সোনাগাছির

0
120

শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ

করোনা আতঙ্ক কেড়ে নিয়েছে তাদের পেশার অধিকার। উত্তর কলকাতার এই জমজমাট নিষিদ্ধপল্লী গত ৪ মাস ধরে শুনশান। পেটের দায়ে পেশা পালটাতে বাধ্য হয়েছেন অনেকেই। কিন্তু হাজারো প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে লড়ে আদালত থেকে পুজো করার অধিকার কোনও পরিস্থিতিতেই হারাতে নারাজ এখানকার মেয়েরা। আর সেই কারণেই করোনা গাইডলাইন মেনে সম্পূর্ণ বিনা চাঁদায় এবারে পুজোয় মাতৃবন্দনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সোনাগাছি।

Durga pujo | newsfront.co
ফাইল চিত্র

ব্যবসা বন্ধে কর্মহারা হাজার হাজার মেয়ে। তার ওপর করোনা সংক্রমণের ভয়। দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি প্রথমে ঠিক করেছিল, এবার পুজো বন্ধ রাখবে। তবে সেই অবস্থান বদলে পুজো চালিয়ে যাওয়ার পথেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। তাঁদের দাবি একটাই, অশুভ শক্তিকে বিনাশ করে শুভ শক্তির জয় নিশ্চিত করেন মা দুর্গা। করোনার মত অশুভ পরিস্থিতিতে মাতৃবন্দনা থামিয়ে দিলে অশুভ শক্তির কাছে মাথা নত করে নেওয়া হবে। আর সেটা তারা হতে দেবেন না।

প্রসঙ্গত, করোনা আবহের আগে এশিয়ার বৃহত্তম এই যৌনপল্লী উত্তর কলকাতার সোনাগাছিতে একটা সময় প্রায় ৭০০০ কর্মী কাজ করতেন। দিনে অন্তত ২০০০০ খদ্দের আসতেন। তবে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ভয়ে সেই সোনাগাছিই এখন কার্যত শ্মশান।

আরও পড়ুনঃ কলকাতা থেকে নিজের গাড়িতে মেদিনীপুরে রোগীর বাড়িতে পৌঁছে দিলেন চিকিৎসক

বিগত বছরগুলোতে সোনাগাছির মেয়েরাই ১০ টাকা করে চাঁদা দিয়ে ফান্ড তৈরি করতেন। সেই টাকায় হত পুজোর ভোগ। অনেক হিন্দু বাড়ি থেকেও ফল সহ পুজোর আরও সামগ্রী আসত। প্রতিমা আনা হত কুমোরটুলি থেকে। শুধু তাই নয়, সোনাগাছির মাটি দিয়ে প্রথামত মূর্তি তৈরি শুরু করতেন বহু মৃৎশিল্পী।

কিন্তু করোনাকালে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে অনেক কিছুই। তাই দুর্বার ঠিক করেছে এবার এক পয়সাও চাঁদা না তুলেই পুজো হবে এবার। প্রতিমার জন্য একটি সংস্থার সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। সেই সংস্থা প্রতিমা দিতে রাজি হলে চিন্ময়ী মূর্তিতে পুজো হবে। আর সেটা না হলে ঘটেই দুর্গাপুজো করবে দুর্বার।

আরও পড়ুনঃ অনলাইন ক্লাসে অপারগ, টেলিফোনেই শিক্ষাদানের সিদ্ধান্ত রাজ্যের

দুর্বারের সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত সমাজকর্মী মহাশ্বেতা মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই সময়টা মায়ের পুজোতে থাকতে চায়। তবে এবার যা অবস্থা, তাতে সবাইকে আসতে দেওয়া যাবে না। প্রথমে তো ভেবেছিলাম পুজো বন্ধ রাখব। তবে একটা মিটিং করে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি পুজো করব। একটি ইভেন্ট প্ল্যানার কোম্পানির সঙ্গে কথা চলছে। ওরা ঠাকুর দিলে প্রতিমায় পুজো হবে। তারা ১৫ দিনে জানাবে বলেছে। সেটা না হলে ঘটপুজো হবে, তবে আমরা আশাবাদী। পুজো হবেই।”

তিনি আরও বলেন, এবার কোনও চাঁদা তোলার ব্যাপার থাকছে না। পুজোর সমস্ত খরচ নিজেদের পুরনো ফান্ড বহন করবে দুর্বার। দুর্গাপুজো উদ্যোক্তাদের ফোরাম যে গাইডলাইন দিয়েছে তা মেনেই হবে পুজো। ২৫ থেকে ৩০ জনের বেশি মানুষকে কোনওভাবেই জড়ো হতে দেওয়া যাবে না। প্রত্যেকবারের মতো প্রশাসনিক সহায়তা নিয়েই পুজো করা হবে বলে জানিয়েছেন মহাশ্বেতা দেবী ।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here