শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
কেন্দ্রের সংশোধিত কৃষি আইনের কারণে চাষিরা সহায়ক মূল্য পেলেও বাজারে সবজির মূল্যবৃদ্ধি রীতিমতো বিপদে ফেলে দিয়েছে সাধারণ মানুষকে। যদিও রাজ্য প্রশাসনের দাবি কেন্দ্রের এই আইনের কারণে মজুতদাররা অতিরিক্ত সবজি মজুত করার ফলে বাজারে আকাল দেখা দিয়েছে।
কিন্তু তার পাল্টা নতুন কোনও কৃষি আইন আনতে এখনই প্রস্তুত নয় রাজ্য প্রশাসন। কারণ রাতে ক্রেতাদের সুবিধা হলেও কৃষক স্বার্থবিরোধী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।কৃষি কর্তারা জানাচ্ছেন, রাজ্যের কৃষকরা স্বাধীনতার পর থেকে কখনই তাঁদের ফসল নির্দিষ্ট কোনও মান্ডিতে বিক্রি করতে বাধ্য ছিলেন না।
এখানে বাজারের সুবিধার জন্য নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি তৈরি হয়েছিল। নতুন আইনে সেই ‘শৃঙ্খল’ ভাঙা হয়েছে। ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের গ্যারান্টি নতুন আইনে দেওয়া নেই বলে বলা রয়েছে। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নির্দিষ্ট হলে চাষিদের ৩০% সেই দাম পেয়ে থাকেন। বাকিরা বাজার চলতি দামেই বিক্রি করেন।
আরও পড়ুনঃ আলু-পিঁয়াজের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব অধীর চৌধুরী
কৃষি কর্তাদের যুক্তি, রাজ্যের কৃষক বন্ধু প্রকল্পে ৪২ লক্ষ চাষি নথিভূক্ত হয়েছেন। কিন্তু সরকারি দামে ধান বিক্রি করেন মাত্র ১২ লক্ষ চাষি। বছরে ১৫০ লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হলেও সরকার ধান কেনে মাত্র ৫০ লক্ষ মেট্রিক টন। ফলে বাকিটা এজেন্ট মারফত বেচতে হয় চাষীদের। আর সেখানেই তৈরি হয় কৃত্রিম সংকট।
আরও পড়ুনঃ বাংলা দখলে শাহর সেনাপতি এবার অমিত
কেন্দ্রীয় আইনে চুক্তি চাষ, কৃষি ক্ষেত্রে অবাধ মজুতদারি, বেসরকারি বিনিয়োগ, প্রাইভেট মার্কেট ইয়ার্ড, ই–ব্যবস্থায় কৃষি পণ্য বিক্রি ইত্যাদি রয়েছে। ২০১৪ সালে পর পর দুটি সংশোধনী এনে কৃষি বিপণন দফতর এগুলির সবই রাজ্যে ছাড়পত্র আগেই দিয়ে রেখেছে। তাই নতুন আইন আনা হলে রাজ্যকে ক্ষেত্রগুলি পরিবর্তন করতে হবে।
আর সেক্ষেত্রে বিধানসভা নির্বাচনের আগে চাষীদের স্বার্থ অক্ষুণ্ন না থাকলে তাতে প্রভাব পড়তে পারে ভোটবাক্সে। কিন্তু ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে বিকল্প কোনও পথ আনতে হবে রাজ্যকে। তাই আপাতত বিকল্প পথের রাস্তা খুঁজছেন নবান্নের শীর্ষ প্রশাসনের কর্তারা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584