শিবশঙ্কর চ্যাটার্জ্জী, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ
এ যেন সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো। একের পর এক ঝড় ঢেয়ে আসছে। থামছেই না কিছুতেই। আমপানের ঘূর্ণিঝড়ের রেশ যেতে না যেতেই গত এক সপ্তাহে তিন তিনটি ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হতে হল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাকে।
গত বৃহষ্পতিবার রাতে আমফানের হাত থেকে বাঁচলেও রেহাই মিলল না মঙ্গলবার রাতে বালুরঘাটের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্যাপক ঝড় বৃষ্টির হাত থেকে।
মঙ্গলবার রাতে ঝড়ের দাপটে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটের ৩ নং চকভৃগু গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ কুয়ারন, মহন্ত পাড়া, কুয়ারন গীর্জা পাড়া সহ একাধিক এলাকার মানুষদের। মঙ্গলবার ঝড়ের দাপটে দক্ষিণ কুয়ারন, মহন্ত পাড়া, কুয়ারন গীর্জা পাড়া এলাকার প্রায় ৫০-এরও বেশী পরিবারের বাড়ি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ঝড়ে কারো বাড়ির টিন উড়ে গিয়েছে তো কারো বাড়ির মাটির দেওয়াল ভেঙ্গে গিয়েছে। আবার কারো বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির মধ্যে কোন কোন পরিবার কোনমতে মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুনঃ উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা শ্রমিকদের ঘরে পাঠানোর উদ্যোগ প্রশাসনের
তাদের একমাত্র আস্তানা মেরামতেই তারা ব্যস্ত। অনেক পরিবার আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। তারা কখনো প্রতিবেশীর বারান্দায় বা কখনো খোলা আকাশের নীচে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। ঘর বাড়ি ভেঙে যাওয়া এই সব গরিব আদিবাসী পরিবারগুলি এখন সরকারি সাহায্যের আশায় দিন গুনছেন।
সব হারানো দক্ষিণ কুয়ারন এলাকার বাসিন্দা এলিজাবেথ সরেন বলেন, ‘টিন ঝড়ে উড়ে গেছে। বেড়ার বাড়ি ভেঙে গেছে। থাকার জায়গা নেই।’ তিনি জানান, স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য এসে দেখে গিয়েছেন। ছবি তুলে নিয়ে গেছে। ত্রিপল দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে গেছে।
এলাকার বাসিন্দা জানান, ‘বাড়ি ভেঙ্গে গেছে। থাকব কোথায় তার জায়গা নেই। সরকার আমাদের জন্য কিছু ব্যবস্থা করুক।’ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির মধ্যে অন্যতম দাউদ তিরকি এদিন বলেন, ‘ঝড়ে ঘর-বাড়ি ভেঙে গিয়েছে। বর্তমানে আমার পরিবারের থাকার কোন ব্যবস্থা নেই।
বৃষ্টি হলে প্রতিবেশীর বাড়ির বারান্দাতে আশ্রয় নিচ্ছেন। কখনো পরিবার নিয়ে রাস্তায় থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।’ তিনি জানান, সরকার যদি কিছু ব্যবস্থা করে তাহলে হয়ত থাকতে পারব।
তবে কাকতলিয় ভাবে আজ দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বনমন্ত্রী আমফানের ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে এক প্রশাসনিক বৈঠক করতে বালুরঘাটে আসছেন।
হয়তো সেই বৈঠকে জেলা আধিকারিকরা গতকালকের ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারটি নিয়ে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করলেও করতে পারেন বলে জানা গেছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584