নিজস্ব সংবাদদাতা, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ
ক্রীড়াপ্রেমী বাবাকে হারানোর অনেক বছর পার করে এলেও আজও তাকে ভুলতে পারেনা বালুরঘাটের সাহেব কাছাড়ি পাড়ার সেই সময়ের ক্লাস সিক্সে পড়া বসু পরিবারের ছোট ছেলে সুব্রত বসু। ছোট্ট বেলায় বাবাকে হারানোর স্মৃতি এখনও তাকে তাড়া করে বেড়ায়। তাইতো আজকের দিনটা তার কাছে যেমন অন্যান্য দিনের থেকে আলাদা, তেমনি সারা দিনটাই চলে পরিবারের সাথে খেলা প্রেমী বাবার স্মৃতি রোমন্থন।
সালটা ছিলো ১৯৮০। ইডেনের দর্শক পূর্ণ মাঠে খেলা চলছিল ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের ফুটবল ম্যাচ। হঠাৎ করে কোন একটি বিষয় নিয়ে দুই দলের সমর্থক ও খেলোয়াড়দের মধ্যে গন্ডগোল শুরু হয়ে যায়। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আতঙ্কিত দর্শকদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় হুড়োহুড়ি।
সেই ঘটনায় পদপৃষ্ঠ হয়ে চলে যায় ১৬ টি তরতাজা প্রাণ। সেই ১৬ জন ফুটবল প্রেমী শহীদদের মধ্যে ছিলেন বালুরঘাটের বাসিন্দা সনৎ বসুও। তারপর থেকেই ১৬ ই আগষ্ট দিনটি সেই সমস্ত শহীদ হওয়া ফুটবলপ্রেমীদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে পালন করা হয় ফুটবলপ্রেমী দিবস হিসেবে।
আরও পড়ুনঃ ৯১ ছুঁই ছুঁই বৃদ্ধা কনকলতা দেবীর ব্যতিক্রমী স্বাধীনতা দিবস উদযাপন!
প্রয়াত সনৎ বসুর বাড়ি গিয়ে আজ দেখা গেল এই ক্রীড়া প্রেমী শহীদের বিধবা স্ত্রী আজও তার ফটো আগলে স্মৃতি রোমন্থন করে চলেছেন। প্রয়াত সনৎ বসুর পুত্র স্কুল শিক্ষক সুব্রত বসু তার বাবার ছবির সামনে পুষ্পার্ঘ্য জড়িয়ে তার বাবার স্মৃতি তর্পণ করে চলেছেন। প্রতি বছর সারা বাংলা জুড়ে বিভিন্ন সংস্থা ফুটবলপ্রেমী দিবস হিসেবে এই ১৬ জন ক্রীড়া শহীদকে স্মরণ করে থাকেন।
করোনা সংকটের মাঝেও বাংলার ক্রীড়াপ্রেমীরা ১৬ জন ক্রীড়া শহীদদের স্মরণ করেছেন। তারই মাঝে সনৎ বসুর পরিবারও ৪০ বছর ধরে এই ক্রীড়া শহীদদের স্মরণ করে চলেছেন নীরবে-নিভৃতে। সনৎ বসুর ছেলে সুব্রত বসু ও তার পরিবার এই দিনটিতে একটাই বার্তা সবার কাছে পৌঁছে দিতে চান, খেলা টা যেন খেলাই থাকে, খেলাকে ঘিরে আর যেন কোন পরিবারকে তাদের মত স্বজনহারা হতে না হয়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584