সিমা পুরকাইত,দক্ষিণ ২৪ পরগনাঃ




ভেজাল দুধের রমরমায় আতঙ্কিত দেশবাসী তখন দুধে ভাতে বাঙালির বাড়িতে দুধ ফিরিয়ে আনতে তখন দক্ষিন সুন্দরবনে মহিলা দুগ্ধ উৎপাদন সমবায় সমিতি খাঁটি গরুর দুধ বিক্রি করে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা নিজেদের পরিবারে সুদিন আনতে শুরু করেছেন।একই সাথে দুধে ভাতে বাঙালির ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন খাঁটি দুধ।
মেশিনে পরীক্ষা নিরিক্ষার পর সমবায় সমিতির মধ্যে দিয়ে এই দুধ রপ্তানি হচ্ছে দেশের সর্বত্র।যে দুধ দিয়ে প্রস্তুত হচ্ছে সুস্বাদু ঘি দই মিষ্টি ছান সহ দুগ্ধজাত বিভিন্ন খাদ্য।অসৎ উপায়ে অন্যায় ভাবে মুনাফা অর্জনের জন্য যখন দুধের মত শিশু অসুস্থ বৃদ্ধদের খাদ্যে বিভিন্ন কেমিক্যাল মেশানো হচ্ছে এমনকি নকল দুধ প্রস্তুত করা হচ্ছে তখন সমবায় সমিতির মহিলারা তার বিরুদ্ধে শুদ্ধ খাঁটি দুধ পৌঁছে দিয়ে অর্থনৈতিক ভাবেও সাবলম্বী হয়ে উঠছে।স্বাধীনতার পর অবহেলিত কাকদ্বীপ ব্লকের ঋষি বঙ্কিম গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশির ভাগ গ্রাম।রাস্তাঘাট থেকে পানীয় জলের সমস্যা আজও রয়েছে গ্রামে ।মেঠো দেওয়াল টালি আর খড়ের ছাউনি দেওয়া ঘরে আজও বাস করেন গ্রামের প্রবীন নবীনরা।অভাব আর অনটন নিত্যসঙ্গী হলেও এই সমবায় সমিতিকে কেন্দ্র করে গৃহস্থের বাড়ির মহিলাদের হাত ধরে কিছুটা হলেও ঘুচেছে অভাব।ঋষি বঙ্কিম গ্রাম পঞ্চায়েতে বাস প্রায় প্রায় সাতাশ হাজার মানুষের।পেশা বলতে চাষ আবাদ।গ্রামে শিক্ষাগত যোগ্যতা রয়েছে ৮৪ শতাংশ মানুষের তবুও চাকুরীর অভাব।খেটে খাওয়া মানুষের রোজগার বাড়াতে এবার সংসারে হাল ধরেছে গ্রামের মহিলারা।এই পঞ্চায়েতে রয়েছে ২৪৫টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী।গোষ্ঠীর মহিলাদের হাত দিয়ে শুরু হয় ২০১৫ সালে সুন্দরীনী প্রকল্পের কাজ।গোবিন্দপুর মহিলা দুগ্ধ সমবায় সমিতি নাম দিয়ে শুরু হয় গ্রাম্য মহিলাদের মাধ্যমে গরুর দুধ সংগ্রহের পালা।প্রথম দিকে পিছুপা হলেও সময়ের সাথে সাথে বদলেছে দুগ্ধ সংগ্রহের হাল।প্রতিদিন দেড় হাজার লিটারের বেশী দুধ সংগ্রহ হয় এই সমিতিতে।অ্যানালাইজ মেশিনের মধ্যে দিয়ে পরীক্ষার পর নায্য দাম দিয়ে দেওয়া হয়,তার পর সেই দুধ চলে যায় জেলার জয়নগরে। সেখান থেকে দেশের সর্বত্র।পঞ্চায়েতের মাধ্যমে এমন উদ্যোগে খুশি গ্রামের মহিলারা। ১৯৯৭ সালে সুন্দরীনী প্রকল্প চালু হওয়ার পর তেমন প্রভাব পরেনি পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে।ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল সরকারের উদ্যোগে এই প্রকল্পের বিস্তৃতি ঘটে।খাঁটি দুধের স্বল্পতা যেমন কমবে তেমনি অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পাবে।একই সাথে গরুর স্বাস্থ্য সম্পর্কেও সচেতনতা বাড়ছে বলে দাবি সমবায় সমিতির জোনাল আধিকারিক গৌতম জানা।বেশি দাম পেতে ইউরিয়া কিংবা জল মেশালে তা ধরে ফেলবে অ্যানালাইজ মেশিন।ফলে সরকরি ধাহ্য( ৪দশমিক৫) ফ্যাটে কিলোয় ৩৫ টাকা দাম পাবেনা গরু চাষিরা।একটা সময় দুধ দিয়ে ন্যায্য দাম পেতেন না গ্রামের মহিলারা।এই প্রকল্পে দুধ দিয়ে দশ দিন অন্তর ন্যায্য দাম পাচ্ছেন বলে জানান এলাকাবাসী।গোবিন্দরামপুর,বামা নগর,গঙ্গাধরপুর বহু গ্রামে দুগ্ধ কারবার নিয়ে ব্যস্ততা এখন তুঙ্গে।এই কারবারে জেলায় শুধু নয় রাজ্যেও প্রথম স্থান অধিকার করেছে বলে দাবি ঋষি বঙ্কিম গ্রাম পঞ্চায়েত সভাপতি সুপ্রকাশ বেরার।ভেজাল দুধ নয় সঠিক আর খাঁটি দুধের রমরমা বাড়াতে সচেতনতা শিবির করবেন বলে জানান গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মহুয়া মালি দাস।




আরও পড়ুন: হাতির তান্ডবে তছনছ,দেখা নেই বনকর্মীদের
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584