প্রিয়রঞ্জন কাঁড়ার
পাড়ার মোড়ে গোপাল মিত্তিরের বাড়ির একতলার অব্যবহৃত গ্যারেজটা ভাড়া নিয়েছেন ছন্দা শাস্ত্রী নামে কেউ। পাড়ার ছেলেদের তাস পেটানোর আখড়াটা এভাবে বেদখল হয়ে যাক, সেটা অনেকেই চায় না। একজন বহিরাগত শুধুমাত্র একটা গ্যারেজ ভাড়া নিয়ে ঠিক কী করতে চান, মাথায় ঢুকলো না কারও।
হঠাৎ একদিন সকাল থেকে ঝাঁ-চকচকে টেবিল-চেয়ার, দেব-দেবীর ফটো, এসব আসতে শুরু করলো। তাস পেটানোর দল জুলুজুলু চোখে সব দেখতে লাগলো। দলের সর্দার গ্যাঁড়াদা সবাইকে আগাম বলে রেখেছে, ওই নচ্ছার মেয়েমানুষকে এক সপ্তার মধ্যে পাড়া-ছাড়া করতে না পারলে সে জীবনে আর কোনওদিন তাসে হাত দেবে না। পড়ন্ত বিকেলে সেই মহিলা গাড়ি হাঁকিয়ে পাড়ায় ঢুকে গাড়ি থেকে পেল্লায় সাইজের একটা সাইনবোর্ড নিয়ে নামলেন।
সাইনবোর্ডে তাঁর নামের আগে লেখা ‘তান্ত্রিক জননী’। নামের নিচে লেখা, ‘লিখিত গ্যারান্টিতে একদিনে বশীকরণ’। তান্ত্রিক জননীর বয়েস কিন্তু বছর পঁচিশ এবং দেখে অবিবাহিতা বলেই মনে হয়। গোধূলি লগ্নেও তাঁর রূপের ছটায় পাড়ায় যেন নতুন সূর্যোদয় হলো। ছোকরারা অবাক হয়ে দেখলো, গ্যাঁড়াদার মুখ থেকে সেই রাগ-রাগ ভাবটা দিব্যি মিলিয়ে গেছে।
আরও পড়ুনঃ পঞ্চস্বরে পঞ্চম
পরদিন সকালে দলবল নিয়ে গ্যাঁড়াদা ছন্দা শাস্ত্রীর চেম্বারে হাজির। গ্যাঁড়াদা একটি মেয়েকে বশীকরণ করতে চায় শুনে ছন্দা মন্ত্রপূত ছাইয়ের একটা মোড়ক আর মন্ত্র-লেখা একটা কাগজের টুকরো তার হাতে ধরিয়ে দিলেন। গ্যাঁড়াদা মন্ত্রটা একবার বিড়বিড় করেই মোড়ক খুলে পুরো ছাইটা ছন্দা শাস্ত্রীর মাথায় ঢেলে দিয়ে বললো, ‘আমি মস্তান হলেও ভদ্র বাড়ির ছেলে।
পাড়ায় ব্যাবসা করে পাড়ার ছেলের বুকে হাফশোল দিয়ে বেপাড়ার কোনও ছেলের গলায় মালা দেওয়া যাবে না, মাইরি। মা কালীর দিব্যি, আপনার ছাই আপনি নিজেই ব্যর্থ করে দিলে আপনাকে অন্য কোথাও আর করে খেতে দেবো না।’
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584