পিয়া গুপ্তা, উত্তর দিনাজপুরঃ
সোমবার সকালে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে এক মহিলার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মৃতার বাড়ির লোকজনের হাতে ওয়ার্ডের বেশ কয়েকজন নার্স নিগৃহীত হয়।এই ঘটনার পরে দোষীদের শাস্তির দাবি ও উপযুক্ত নিরাপত্তার দাবিতে নার্সরা এদিন সকাল থেকেই মেডিক্যাল কলেজে তাদের ডিউটি বাদ দিয়ে আন্দোলন শুরু করে। এই আন্দোলনের জেরে হাসপাতালের ওয়ার্ড গুলিতে চিকিৎসা পরিষেবা কার্যত লাটে ওঠে।
এদিন সকাল থেকেই নার্সরা ওয়ার্ডগুলি কার্যত ফাঁকা রেখেই মেডিক্যাল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপালকে তার চেম্বারে ঘেরাও করে রাখে।বিকেল ৪ টে পর্যন্ত তাকে আটকে রাখার পরে ভাইস প্রিন্সিপাল তার চেম্বার থেকে বেড়িয়ে যেতে সক্ষম হলেও আন্দোলনকারী নার্সরা তার চেম্বারেই অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যেতে থাকে। এই সময়ের মধ্যে একাধিক ওয়ার্ড নার্সবিহীন থাকার পাশাপাশি বহু রোগী চিকিৎসা পরিষেবা পায়নি। নার্সদের দিনভর আচরনে চরম ক্ষুব্ধ ভাইস প্রিন্সিপাল।
রবিবার রাতে করনদিঘীর, খিকিরটোলা গ্রামের বাসিন্দা লিপিকা সিনহা, রবিবার রাতে বুকে ব্যাথা নিয়ে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।
সোমবার সকালে ওই মহিলার মৃত্যু হয়। এই ঘটনার জেরে মৃতার পরিবারের লোকজন কর্তব্যরত নার্সদের নিগৃহ করে বলে অভিযোগ।পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার পাশাপাশি নার্সদের নিগৃহের দায়ে মৃতার ২ ভাইকে গ্রেপ্তার করে।নার্সদের নিরাপত্তার ব্যপারে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে শুরু করে।
এরপরেও ওই ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবি ও নিরাপত্তার দাবিতে মেডিক্যাল কলেজের নার্সরা এদিন সকাল থেকেই মেডিক্যাল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপালের চেম্বারের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে।দুপুর ১২ তা নাগাদ অন্যান্য ওয়ার্ড থেকে বাকি নার্সরাও এসে ওই বিক্ষোভে সামিল হয়।নার্সরা ভাইস প্রিন্সিপালের চেম্বারে ঢুকে দরজা বন্ধ করে তাকে কার্যত আটকে রাখে।এমনকি মাঝপথে ভাইস প্রিন্সিপাল টয়লেটে গেলেও আন্দোলনকারী নার্সরা তাকে বাইরে থেকে পাহারা দেয়।
বিকেল ৪ টে পর্যন্ত ওয়ার্ডগুলি ফাঁকা রেখেই নার্সদের এই আন্দোলন চলে।বিকেল সাড়ে ৩ টে নাগাদ ভাইস প্রিন্সিপাল তার চেম্বার থেকে বেড়িয়ে যেতে সক্ষম হলেও আন্দোলনকারী নার্সরা তার চেম্বারেই বিক্ষোভ দেখাতে থাকে।
ওই সময়ের মধ্যে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডগুলি ঘুরে দেখা গিয়েছে, ওয়ার্ডগুলির বেশিরভাগই নার্সশূন্য অবস্থায় রয়েছে।২/১ টি ওয়ার্ডে একজন নার্স কোনওরকমে সামলাচ্ছে।ওই সময়ের মধ্যে বেশকিছু রোগী ভর্তি হলেও তাদের নূন্যতম চিকিৎসা শুরু হয়নি। সামগ্রিক পরিস্থিতিতে রোগীর পরিবারের সদস্যরা নার্সদের উপরে চরম ক্ষুব্ধ।
আরও পড়ুনঃ বাজকুল কলেজে ছাত্র ছাত্রীদের অবস্থান বিক্ষোভ
আন্দোলনকারী নার্সরা জানিয়েছে, ওই ঘটনায় দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি ও তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
ভাইস প্রিন্সিপাল সুজিত কুমার মুখার্জী জানিয়েছেন, “ওই ঘটনায় নার্সরা নিগৃহীত হওয়ার পরে আমরা তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।ওয়ার্ডে সি সি ক্যামেরার সংখ্যা আরও বাড়ানো হচ্ছে। তবে নিরাপত্তার দাবিতে নার্সরা এদিন আন্দোলনের নামে যা করেছে, তা সমর্থন করা যায় না।চিকিৎসা পরিষেবা কোনওভাবেই ব্যহত করা যাবে না। নার্সদের নিরাপত্তার দিকটি সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি এই ধরনের আন্দোলন ভবিষ্যতে বরদাস্ত করা হবে না।’’
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584