শ্যামল রায়,কালনাঃ
বধূ কে ভূতে ধরেছে এই গুঞ্জনে বাড়ির লোকেরা ওঝার দ্বারস্থ হন।ভূত তাড়ানোর নামে পূজার কেরামতিতে অসুস্থ গৃহবধূকে জুতো মুখে নিয়ে সারা গ্রাম ঘোরানো অভিযোগ ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।ঘটনাটি ঘটেছে কালনা থানার অন্তর্গত সাতগাছি গ্রাম পঞ্চায়েতের মাঝের পাড়া গ্রামে।এই ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে কালনা ২ নম্বর ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক মিলন দেবঘড়িয়া জানান ‘যে ভূত তাড়ানোর নামে এই ধরনের অবৈজ্ঞানিক চিন্তা ভাবনার বিরুদ্ধে সকলকে সচেতন হতে হবে।ওঝা কোন যুক্তির উপর ভর করে এই ধরনের বিধান দিয়েছে পুলিশকে খতিয়ে দেখতে বলেছি ওঝা যদি এই ধরনের কাজ করে থাকে অবশ্যই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। খুব তাড়াতাড়ি ওই এলাকায় কুসংস্কার বিরোধী এবং সচেতনতা বাড়ানোর উপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।’
সোমবার তিনি জানিয়েছেন যে ইতিমধ্যে পুলিশের গোচরে আনা হয়েছে গোটা ঘটনাটি পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওরা যদি এই ধরনের কেরামতি করে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার।এছাড়াও ওই এলাকায় বাসিন্দাদের মধ্যে বৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনা প্রচারের স্বার্থে এবং কুসংস্কার দূর করতে এলাকায় সচেতনতা বাড়াতে এক শিবিরের আয়োজন করা হবে খুব শীঘ্রই।এই ধরনের অবৈজ্ঞানিক এবং ওঝার কেরামতির বিরুদ্ধে সকলকে সচেতন হতে অনুরোধ করেছেন তিনি।
জানা গিয়েছে যে কয়েক দিন ধরে ওই বধূ মারাত্মকভাবে অসুস্থ ছিলেন।শুক্রবার রাতে ওই মহিলাকে ভূত ভর করেছে বলে বাড়ির লোকেরা জানায় এবং ৩০ নভেম্বর অসুস্থ গৃহবধূর ভূত তাড়ানোর নামে পূজার নিদানে ওই বধূকে জুতো মুখে নিয়ে গ্রাম ঘোরানো হয় এবং ওঝার নিদানে ঝাড়-ফুঁক চলে বধূর শরীরে।এই সব কান্ড কারখানায় অসুস্থ বধু আরো মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে জানা গিয়েছে।
ওই এলাকায় তপশিলি জাতি সম্প্রদায়ের পরিবারের লোকজনের সংখ্যা বেশি এবং ৩০বছরের বধূর উপর এই ধরনের অত্যাচার সচেতনশীল অনেকেই বিরোধিতা করলেও শোনেনি পরিবারের লোকজন।
বধূ টির ঘনঘন খিচুনি এবং অজ্ঞান হয়ে পড়ার কারনেই বাড়ির লোকেদের কথা যে প্রেতাত্মা তাকে ভর করেছে। তাই ভূত তাড়ানোর নামে ওঝার দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই পরিবার।
ভূতে ভর করেছে এবং ওঝার কেরামতিতে ও অনেকের কাছে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল ডাইনি তথা প্রেতাত্মা ঘটনা ঘিরে।পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হরে কৃষ্ণ মন্ডল জানিয়েছেন যে এই ধরনের কাজকর্ম নিন্দনীয়। ভূত তাড়ানোর নামে ওঝার নিদান এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না। এলাকায় সচেতনতা বাড়াতে আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করব।
তবুও মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে ওঠেনি। কালনা বিজ্ঞান মঞ্চে সদস্যরা জানিয়েছেন যে এটা একটা কুসংস্কার ভূত বলে কোন কিছু নেই। বিজ্ঞান মঞ্চের সদস্যরা জানিয়েছেন যে ওই এলাকায় কুসংস্কার বিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলবেন তারা।আরো জানা গিয়েছে যে ওই বধুর ভুতে ধরে নি হিস্টিরিয়া রোগ থাকতে পারে এর থেকেই এই ধরনের অজ্ঞান এবং অসুস্থতা বোধ করার কারণ। এলাকায় মানুষের মধ্যে কুসংস্কার মুক্ত করতে পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমানের বাউল শিল্পী স্বপন দাস এলাকায় গানের মধ্যে দিয়ে সচেতনতা বাড়াতে মঙ্গলবার এলাকায় আসছেন।গানের মধ্যে দিয়ে ভূত বিষয়টি আদতে কি তুলে ধরবেন বাসিন্দাদের কাছে, জানিয়েছেন বাউল শিল্পী স্বপন দাস।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584