তপন চক্রবর্তী,উত্তর দিনাজপুরঃ
‘আসি যাই মাইনা পাই’সেই গোত্রীয় শিক্ষক অরুনাংশু দাস নন।তিনি উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ সেরগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক।বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছাত্রীদের বিজ্ঞানকে সহজ সরল ভাবে বোঝানোর জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম এবং নিজের গ্যাটের পয়সা খরচ করে বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ছেলে মেয়েরা যাতে ভালো নম্বর পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ভালো ফল করতে পারে তার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেন,নানান বিষয়ের উপর মডেল তৈরী করলেও কারো কাছ থেকে কোন সহযোগিতা পাচ্ছেনা বলে দুঃখ করলেন।সেরগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে অরুনাংশু বাবুর হাতে তৈরী বিজ্ঞান মডেল গুলি দেখে এই প্রতিবেদকের একটাই কথা মনে হয়েছে একটি শিক্ষকের ছাত্র ছাত্রীদের উপর কতখানি স্নেহ ভালোবাসা থাকলে পরে শিক্ষক অরুনাংশু বাবু এই কাজ গুলো করতে পারেন।শিক্ষক অরুনাংশু বাবু একের পর এক তার হাতের বানানো মডেলগুলি দেখিয়ে শেষ করতে পারছেনা।
সেরগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে মডেলগুলি রাখবার মত কোন জায়গা না পাওয়ায় বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্বপূর্ন মডেল গুলি নষ্ট হতে বসেছে বলে তিনি অত্যন্ত আক্ষেপের সুরেই বললেন “এসব আমি কাদের জন্য দিনরাত এক করে করছি?বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কি আমাকে এসব গুরুত্বপূর্ন মডেলগুলি রাখবার একটি ঘর দিতে পারেন না,এইসব মডেলগুলি এই বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের স্বার্থেই ব্যবহার করা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে।শিক্ষক অরুনাংশু বাবু বলেন বিজ্ঞান শিক্ষা সহজভাবে এবং সহজ উপায়ে ছাত্র ছাত্রীদের বোঝাবার জন্য।তিনি অনেক মডেলের মধ্যে কিছু কিছু দেখিয়ে বললেন যেমন (১)চুম্বক আকর্ষণ বিকর্ষণ ধর্ম,(২)ফুসফুস কি ভাবে চলে (৩)শব্দ তরঙ্গ কি ভাবে পরিবাহিত হয়(৪)খাদ্য শৃঙ্খল(৫)কোষ বিভাজন,(৬)সূর্য ঘড়ি(৭)ইমবিবিষন,গাছের জল পরিবহন,(৮)সুচিছিদ্র ক্যামেরা(৯)তড়িৎ পরিবহন,(১০)তড়িৎ চুম্বক(১১)নিউটনের বর্ন চাকতি,(১২)পেরিস্কোপ(১৩)ট্যাঙ্কিতে জল ভরে গেলে কিভাবে সতর্ক হওয়া যাবে প্রভৃতি।সেরগ্রামের শিক্ষক অরুনাংশু বাবু জানান তিনি তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করে বলেছেন বিদ্যালয়ের প্রতিটি মডেল এই বিদ্যালয়ের সম্পত্তি।এগুলির রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্ব বিদ্যালয়ের।তাই তাকে একটি ঘর দেওয়া হোক যাতে মডেলগুলি সাজিয়ে রাখতে পারা যায়।এগুলি আমাদের বিদ্যালয়ে গ্যালারি করে সাজিয়ে রাখলে বিদ্যালয়ের সুনাম যথেষ্টই বাড়বে বলে তার বিশ্বাস।যদিও প্রধান শিক্ষক সন্তোষ দাস বলেন অরুনাংশু যে সমস্ত বিজ্ঞানের মডেল বানিয়েছে তার সবটাই গুরুত্বপূর্ন বলে তিনি মনে করেন।তিনি এক মাসের মধ্যে একটি ঘরের ব্যবস্থা করবার আপ্রাণ চেষ্টা করবেন বলে জানান।তিনি বলেন ‘অরুনাংশু নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে যেভাবে বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের কথা ভেবে এসব বানিয়েছে তা এক কথায় অভিনন্দনযোগ্য,আমাদের বিদ্যালয়ের গর্ব একথা বলতেই হবে।”শিক্ষক অরুনাংশু বাবু জানান তিনি এসব নিয়ে জেলার শিক্ষা দপ্তরের সাথে কথাও বলেছেন কিন্তু নিরুৎসাহিত হয়ে ফিরেছেন।
জেলার শিক্ষা দপ্তরের কাছে এসবের কোন দাম মূল্য নেই বলেই তার মনে হয়েছে।তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন সেরগ্রামের পরিবর্তে যদি তিনি অন্য কোন বিদ্যালয়ে অথবা এই জেলায় না থেকে অন্য কোন জেলার বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন তাহলে তার কাজের মূল্যায়ন হত।কিন্তু এই জেলায় সেই সম্ভাবনা নেই বলে ওনার মনে হচ্ছে ।
আরও পড়ুনঃ ঝাড়গ্রাম শহরে জীববিদ্যা বিষয়ক একদিনের কর্মশালা
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584