দীর্ঘদিন পর খুলেছে স্কুল, পড়ুয়াদের হাজিরা কম! স্কুল ফেরাতে দুয়ারে শিক্ষক

0
65

জৈদুল সেখ, মুর্শিদাবাদ:

খুলে গেছে মুর্শিদাবাদ জেলার সমস্ত স্কুল-কলেজ, বিদ্যালয়মুখী হয়েছেন পড়ুয়ারা। তবে অধিকাংশ স্কুলে সংখ্যাটা অনেকটাই কম। কয়েকমাস পর দশম শ্রেণীর মাধ্যমিক পরীক্ষা ও দ্বাদশ শ্রেণীর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কিন্তু উপস্থিতি সংখ্যা কম এই নিয়ে চিন্তিত শিক্ষক মহল।

Duare Shikkhak
স্কুলছুটদের ফেরাতে হাজির শিক্ষকেরা। নিজস্ব চিত্র

করোনা সংক্রমণের জেরে প্রায় দু’বছর বন্ধ থাকার পর চারটি শ্রেণির জন্য স্কুল খুলেছে। কিন্ত শুরু থেকেই জেলার বেশ কিছু স্কুলে উপস্থিতির হার খুব কম। স্কুল খোলার দশদিন পরও মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতি পড়ুয়াদের গরহাজিরা নিয়ে চিন্তা কাটেনি শিক্ষকদেরও। সেই তালিকায় রয়েছে মুর্শিদাবাদের নামু কান্দি হাইস্কুল, নবগ্রাম কেবিসিএস হাইস্কুল, জীবন্তি উদয়চাঁদ হাইস্কুল সহ একাধিক স্কুল। যদিও কান্দীর অন্তর্গত জীবন্তি উদয়চাঁদপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সামসুজ্জোহা বিশ্বাস বলেন, “অন্যান্য স্কুলের তুলনায় আমাদের স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি সংখ্যা ভালো, বিশেষ করে ছাত্রীদের বেশি। তবে আমাদের একটাই দাবী নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেনির সপ্তাহে ছয়দিন ক্লাস হোক। না হলে সিলেবাস শেষ করা যাবে না এবং শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়বে না।”

teachers

অন্যদিকে মুর্শিদাবাদের নামু কান্দি হাইস্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতি সংখ্যা খুবী শোচনীয়। তাই স্কুলছুটদের ফেরাতে শিক্ষকেরা হাজির হলেন শিক্ষার্থীদের দুয়ারে দুয়ারে। নামু কান্দি হাইস্কুলের শিক্ষক শুকুরুদ্দিন মল্লিক বলেন
“করোণা মহামারীর কারণে দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ের পঠন পাঠন বন্ধ থাকার পর ১৬ ই নভেম্বর থেকে বিদ্যালয়ে পঠন পাঠন শুরু হল নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে l কিন্তু আমরা লক্ষ্য করলাম যে মাত্র ২৫% বা তারও কিছু কম ছাত্র-ছাত্রী বিদ্যালয় আসছে l দীর্ঘদিন পর বিদ্যালয়ে এই নগন্য উপস্থিতি আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলল l এর মধ্যেই আবার সরকারি নির্দেশে এই সপ্তাহ থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের দু’ভাগে ভাগ করে দেওয়া হলো l সোম বুধ ও শুক্রবার আসবে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছাত্রীরা এবং মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার আসবে নবম ও একাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছাত্রীরাl

ফলস্বরূপ হাজিরা আরো অর্ধেক হয়ে গেল। আমরা ভাবতে শুরু করলাম কিভাবে এই হাজিরা বাড়ানো যায়। সেই মতো নামু কান্দি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মাননীয় শীষ মোহাম্মদ মহাশয় সহ নয়জন শিক্ষক বেরিয়ে পড়লাম গ্রামের উদ্দেশ্যে। গ্রামে ঘুরতে ও ছাত্র ছাত্রীদের বাড়ি চিনিয়ে দিতে আমাদের সাহায্য করলো কিছু বর্তমান ও কিছু প্রাক্তন ছাত্র ছাত্রী। আমাদের আগ্রহ দেখে অভিভাবক গণ খুব আপ্লুত। আমরাও তাদের ব্যবহার ও আপ্যায়নে খুব খুশি হয়েছি। ”

আরও পড়ুনঃ কৃষক আন্দোলনের একবছর পূর্তি! রাজধানীর বুকে বিশেষ আয়োজনের মাধ্যমে উদযাপন

কান্দীর কল্যাণপুর ও যশোহরি সহ বিভিন্ন গ্রামে শিক্ষার্থীদের বাড়িতে গিয়ে শিক্ষকেরা স্কুলে উপস্থিত হওয়ার জন্য সচেতন করেন। তন্মধ্যে কিছু অভিভাবক জানান, ধান ওঠার সময় তাই ছেলেমেয়েরা চাষ ও খামারের কাজে কিছুটা সাহায্য করে তবুও সামনের দিন থেকে পড়ুয়াদের স্কুল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন।

আরও পড়ুনঃ এসএসসি গ্রুপ ডি-এর নিয়োগে আবারও অস্বচ্ছতার অভিযোগ! ৫৪২ জনের বেতন বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের

নামু কান্দি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন” করোনার জেরে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় পড়ুয়াদের একাংশ ধান কাটার কাজে লেগে পড়েছে। কেউ আবার রাজমিস্ত্রীর জোগাড়ে, কেউ ভিন্‌ রাজ্যে কাজে চলে গিয়েছে। বেশ কিছু নাবালিকার বিয়েও হয়ে গিয়েছে। যারা কাজ করছে, আসছে না তাদের স্কুলে ফেরাতেই সহপাঠীদের এমন উদ্যোগ নিয়েছে।’’

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here