নবনীতা দত্তগুপ্ত, বিনোদন ডেস্কঃ
আজ প্রায় দু’মাস হল রোজগারে টান পড়েছে বাংলা টেলিভিশনের শিল্পী ও কলাকুশলীদের। তাঁরা প্রতিদিনের কাজের পারিশ্রমিক প্রতিদিন পায়। সহজ কথায় ‘নো ওয়ার্ক নো পে’র আওতায় তারা। কাজ না করলে মাইনে নেই। ফলে চরম সংকটে তাদের জীবন। তার উপরে কালারস বাংলা চ্যানেলের চারটি সিরিয়াল বন্ধ করে দিল চ্যানেল। মঙ্গলচণ্ডী, কনক কাঁকন, চিরদিনই আমি যে তোমার, নিশির ডাক। এরপর অন্যান্য চ্যানেলগুলিও এহেন পথে হাঁটবে কিনা সেই প্রশ্নও ঘুরে ফিরে আসছে বারবার।
অনেকেই শুটিং শুরু করার আবেদন জানিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। এ প্রসঙ্গে আরও একটা কথা বলা জরুরি, অভিনেতাদের মধ্যে অনেকেই বাড়িতে বসে নানা ভাবনায় তৈরি করছেন শর্ট ফিল্ম। আর তা দেখে তাঁদের নিয়ে নানা কথাকথিও হচ্ছে। বলা হচ্ছে- “অভিনেতাদের আর কিসের কষ্ট। এই তো কী সুন্দর সেজেগুজে শর্ট ফিল্ম করছে!” এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন অভিনেতা সায়ক চক্রবর্তী এবং স্নেহা চট্টোপাধ্যায়।
সম্প্রতি পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ করার অনুমতি মিলেছে। পাশাপাশি দূরত্ব এবং নিয়ম মেনে আউটডোর শুটিং করার অনুমতিও মিলেছে। কিন্তু কথা হল, ধারাবাহিকে সব শুটিংই কোনও না কোনও ফ্লোরে হয়। কিছু কলকাতায়, কিছু শহরতলিতে। আউটডোর খুব কমই হয় ধারাবাহিকে। ফলে, এই অনুমতিতে কোনও লাভই হয়নি।
কিন্তু আর কতদিন চলবে এ ভাবে? আর কতদিন এ ভাবে কর্মহীন থাকবে অভিনেতা এবং টেকনিসিয়ানেরা? এই প্রশ্ন তুলে বাংলা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির সফল পরিচালক অয়ন সেনগুপ্ত একটি আবেদন জানিয়েছেন সাংবাদিকদের কাছে। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, বর্তমানে উদ্ভুত পরিস্থিতির শিকার অভিনেতা থেকে শুরু করে অগণিত টেকনিসিয়ান। আমার মতো এই ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই আছেন যাঁরা এই মুহূর্তে গৃহবন্দি! তাঁরা শিল্পী-কলাকুশলী। তাঁরা শুধুমাত্র নির্ভর করে আছেন এ ইন্ডাস্ট্রির উপর।
আজ দু’মাস হয়ে গেল আমাদের রোজগার বন্ধ, শুটিং বন্ধ মানে রোজগারও বন্ধ। কিন্তু খরচ হয়ে চলেছে একইভাবে, কোথাও কোথাও বরং খরচ বেড়েছেও! ইএমআই, ক্রেডিট কার্ডের বিল, ইলেকট্রিক বিল, সন্তানের স্কুল ফি বন্ধ হয়নি কিছুই.. অন্যদিকে বাজারদর ক্রমশ ঊর্দ্ধমুখী। শুধু রোজগার বন্ধ। ঘরে বসে মোবাইলে শুটিং করে মানসিক ক্ষিদে মিটেছে হয়তো! কিন্তু রোজগার হয়নি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে!
আরও পড়ুনঃ এক দুর্গতির গল্প নিয়ে আসছে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ‘দুর্গা দুর্গতি’
আজ অনেক কিছুই স্বাভাবিক হয়েছে। খুলেছে দোকান, চালু হয়েছে বাস, সরকারি-বেসরকারি কর্মসংস্থান, মদের দোকান। আগামীদিনে খুলবে আরও অনেককিছুই। আমরা জানি না আমাদের ভবিষ্যৎ কী! জানি না শুটিং কবে শুরু হবে, জানি না রোজগার হবে কবে!
আরও পড়ুনঃ থ্রিলারের রং ‘ব্ল্যাক’
আজ অনিশ্চিত হাজার হাজার শিল্পী-কলাকুশলীর ভবিষ্যৎ! কোনও সরকারই কোনও আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেননি, পাইনি কোনও প্রতিশ্রুতিও! জানি না কবে কাজ করতে পারব। একটা ইন্ডাস্ট্রি, যেখান থেকে সরকার ভালো রেভিনিউ পায়, তাদের জন্য কোনও ব্যবস্থা কি করা যায় না?
আপনার/আপনাদের কাছে আবেদন এ বিষয়টা নিয়ে একটু লিখুন,পাশে দাঁড়ান আমাদের। এখনও বিশ্বাস করি সাংবাদিকের কলমের জোর মারাত্বক। তাই আপনার/আপনাদের কাছে এ আবেদন, একটু ভেবে দেখবেন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584