নবনীতা দত্তগুপ্ত, বিনোদন ডেস্কঃ
এক বধির মেয়ের আকাশে ওড়ার স্বপ্ন বাস্তব করতে স্টার জলসার পর্দায় আসছে ধারাবাহিক ‘তিতলি’। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্রের নাম তিতলি। এক মা-মরা প্রাণোচ্ছ্বল, দায়িত্বশীল কন্যে সে। সে জন্ম থেকে বধির নয়। বয়স যখন ৭ কি ৮ তখন বাড়ির কাছে একটি যুদ্ধ বিমান ক্র্যাশ হয়। সেই সময় ভয়ঙ্কর আওয়াজে নষ্ট হয়ে যায় তার শ্রবণশক্তি।
এরপর ধীরে ধীরে পড়ে থাকা সেই ভাঙা প্লেনটার সঙ্গে সখ্যতা হয় তিতলির। ভগ্ন প্লেনটা এখানে একটা চরিত্র হিসেবে ধরা দেবে বলে স্টার জলসা আয়োজিত ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্সে জানিয়েছেন প্রযোজক সুশান্ত দাস। তিতলি স্বপ্ন দেখে সে একদিন পাইলট হবে। কিন্তু একজন বধির মানুষ কী ভাবে প্লেন চালাবে সে এক বড় প্রশ্ন।
প্লেন চালাতে গেলে অডিও কমিউনিকেশন একটা বড় দিক। সেখানে দুর্বলতা থাকলে চলবে না। প্লেন ক্র্যােশ তার জীবনে বধিরতা এনে দিলেও ভাঙতে পারেনি স্বপ্ন।…প্রসঙ্গত, প্রযোজক সুশান্ত দাস বরাবরই অসম্ভবকে সম্ভব করে এসেছেন তাঁর বিভিন্ন ধারাবাহিকে। জয়ী, জবা, দিয়া, শালিক তার প্রমাণ। এখানেও অন্যথা হবে না বলে আশা করা যায়।
তিতলির স্বপ্নপূরণে তার পাশে এসে দাঁড়াবে সানি। সানি এক সম্ভ্রান্ত, অভিজাত পরিবারের ছেলে। তার পরিবারের সকলেই খুব ভাল। না, এখানে কোনও নেগেটিভ চরিত্রের আনাগোনা নেই বলেই জানিয়েছেন সুশান্ত দাস। সানির পরিজনেরা হৈ হৈ করে বাঁচে একসঙ্গে। লেগ পুলিং, শাশুড়ি-বউমার ঝগড়া, ষড়যন্ত্র এখানে থাকবে না। সানির বাবা ব্যবসায়ী।
কিন্তু সানি বাবার ব্যবসা দেখভাল করতে রাজি নয়। সে নিজে কিছু করতে চায়। প্যাশন নিয়ে বাঁচতে চায় সে। আর তাই সে একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিজের কেরিয়ার গড়ার প্ল্যান করে। সে নানা গ্রামের মহিলাদের হাতের নিত্যনতুন রান্নার রেসিপি নিয়ে নিজের চ্যানেলে তা দেখায়। পাশাপাশি তার চ্যানেলে থাকে স্ট্রিট ফুডের খাবারের আনাগোনা। ছেলে হয়েও রান্নাবান্না নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে সে ভালোবাসে।
বলা ভাল, আজকের ডিজিটাল দুনিয়ার প্রতিনিধি সানি। সে পরোপকারী। তিতলির সঙ্গে এরপর প্রেম হয় তার। ভালোবাসার স্বপ্নপূরণ করতে সে মরিয়া হয়ে ওঠে। তিতলির স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে থাকবে এক পাইলট আঙ্কেলের উপস্থিতি। এই চরিত্রে কে থাকছেন বা তাঁর চরিত্র সম্বন্ধে কিছু জানাননি সুশান্ত দাস। চমক হিসেবে রেখেছেন চরিত্রটিকে।
আরও পড়ুনঃ দিদা চাইতেন আমি ডাক্তার হইঃ ঊষসী রায়
মূলত প্রেমের কাহিনি এবং স্বপ্নের কথা বলবে এই ধারাবাহিক৷ টেলিভিশনে আরিয়ানের এটি দ্বিতীয় কাজ। তাঁর কথায়, সানি চরিত্রটার সঙ্গে মানুষ নিজেকে খুব ভাল রিলেট করতে পারবেন। এই সময়কার একটা চরিত্র সানি।
মধুপ্রিয়া চৌধুরীর এটি প্রথম কাজ। একটি বিউটি কনটেস্টের ছবি দেখে সুশান্ত দাস তাঁকে অফার দিলে সেটা লুফে নেন মধুপ্রিয়া।
সুশান্ত দাসের কাছে জানতে চাওয়া হয় ধারাবাহিকে অতিমারী কী ভাবে আসছে? কেননা মুখ্যমন্ত্রীর আদেশ ধারাবাহিকের চিত্রনাট্যে কোভিড-১৯ সচেতনতার কথা থাকতে হবে। সুশান্তের কথায়, একটি বিয়ের অনুষ্ঠান দিয়ে শুরু হবে ধারাবাহিক। সেখানে অল্প লোকজনের সমাগমে ভার্চুয়াল ম্যারেজ সেরিমানি দেখানো হবে। বিদেশ বিভুঁইয়ের পরিজনেরা অনলাইনে দেখবে বিয়ের অনুষ্ঠান সানির দাদা-বৌদিকে দিয়ে শুরু হবে ধারাবাহিকের পথচলা।
আরও পড়ুনঃ ‘যমুনা ঢাকি’ আসছে, ফিরছেন রুবেল-শ্বেতা
পর্ণশ্রী ফ্লাইং ক্লাবে আউটডোর শুটিং হবে ধারাবাহিকের। বাকি শুটিং চলবে নাজিরাবাদে। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন – মধুপ্রিয়া চৌধুরী, আরিয়ান ভৌমিক, কুশল চক্রবর্তী, মৈত্রেয়ী রায়, মিষ্টি সিং, রাজীব বসু, রিমঝিম মিত্র, কৌশিক ভট্টাচার্য, অরিত্র দত্ত, শঙ্কর চক্রবর্তী, নন্দিনী চ্যাটার্জি, অরিন্দম ব্যানার্জি সহ আরও অনেকে।
পরিচালনায় শুভ্রজ্যোতি মাইতি, সুমন্ত চক্রবর্তী। গল্প সুশান্ত দাসের। চিত্রনাট্য লিখছেন সুশান্ত দাস, সায়ন্তনী ভট্টাচার্য, নন্দলাল মজুমদার। ক্যামেরায় গৌরাঙ্গ। বেহালা ফ্লাইং ক্লাবের এয়ারফোর্স কর্মী রাকেশ শর্মা এই ধারাবাহিকে উড়ান সংক্রান্ত খুঁটিনাটি ব্যাপারে অনেক সহায়তা করছেন বলে জানিয়েছেন সুশান্ত দাস।
সুশান্তের কথায়, লকডাউনের সামাজিক বিধি মেনেই চলছে শুটিং। কম সংখ্যক টেকনিশিয়ান এবং শিল্পীদের নিয়েই কাজ চলছে। সিনের সময় মাস্ক পরানো হচ্ছে না। অন্যসময়ে তার অন্যথা হচ্ছে না। সমসাময়িক পরিস্থিতিকে গুরুত্ব দিয়ে, সচেতনতার বার্তা দিতে ভার্চুয়াল বিয়েবাড়ির সিকোয়েন্স রাখা হয়েছে।
১৩ জুলাই থেকে প্রতিদিন সন্ধে সাড়ে ৬ টায় দেখতে ভুলবেন না ‘তিতলি’।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584