সিমা পুরকাইত,দক্ষিন ২৪ পরগনাঃ
নোনা মাটির দেশে এবার কৃমির আক্রমন।গাছে কৃমি আক্রমনে ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষিরা।ভু
বিশ্ব উষ্ণায়নে কৃমির প্রকোপে হারাতে বসেছে দক্ষিন সুন্দরবনের ঐতিহ্যবাহী চাষ।
চাষিদের কথা মাথায় রেখে তাই এদিন কৃমি নাশকের সচেতনতা নিয়ে এগিয়ে এলেন বিধানচন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাশোসিয়েন ফর অ্যাডভান্সমেন্ট ইন প্ল্যান প্রোটেকশান।
কৃমি নাশকে চাষিদের এক যোগে জানাতে এই অভিযান।একটা সময় দক্ষিন সুন্দরবনে অর্থকারী ফসল হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছিল তরমুজ,লঙ্কা,উচ্ছে,পান ও ধান চাষ।
আজ চিরতরে হারিয়ে গেছে তরমুজ ও লঙ্কা চাষ। উচ্ছে পান আর ধান যা পরে আছে সুন্দরবনের নোনামাটিতে।সচেতন না হলে এগুলো চিরকালের জন্য হারিয়ে যাবে দক্ষিন সুন্দরবনের মাটি থেকে,এমনি অভিমত বিজ্ঞানীদের।দোয়াশ ও এঁটেল মাটিতে কৃমি আক্রমন লক্ষ্য করা যায়।
তবে দোঁয়াশমাটিতে বেশি।সুন্দরবনে যে আক্রমন হয়েছে মূলত পাতা ও গাছের শিকরে।মাটিতে অবস্থানকারী কৃমির আক্রমণের ফলে আক্রান্ত স্থলের কোষগুলো দ্রুত বৃদ্ধি পায় ও সে স্থান স্ফিত হয়ে নট বা গিটের সৃষ্টি করে।
আক্রান্ত গাছ দুর্বল,খাট ও হলদেটে হয়ে যায়।আক্রান্ত গাছের বৃদ্ধি স্বাভাবিকের তুলনায় কম হয়। গাছের গোড়ার মাটি সরিয়ে শিকরে গিটের উপস্থিতি দেখে সহজেই এ রোগ শনাক্ত করা যায়। চারা গাছ আক্রান্ত হলে সব শিকড় নষ্ট হয়ে যায় ।
আরও পড়ুনঃ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা শিবির
দিনের বেলায় গাছ ঢলে পড়ে। ফুল ও ফল ধারণ ক্ষমতা একেবারেই কমে যায়।
আক্রমনের ফলে গাছের গুনগত মান নষ্ট হয়ে পরে। দিনের পর দিন কৃমি আক্রমনে হারাতে বসেছে মাটির উর্বরতা। দক্ষিন সুন্দরবনে ডাল জাতীয় কলাই ,ধান ও সবজি গাছের শিকরে লক্ষ্য করা গেছে কৃমি।ছত্রাক বা ব্যকটেরিয়া আক্রমনের থেকে উদ্ভিদের ভয়ঙ্কর আক্রমন করে কৃমি শত্রু।
ভারতসরকারের সর্বভারতী সমন্বিত অনুসন্ধান প্রকল্পের মধ্যো দিয়ে চাষিদের সচেতনতা সঙ্গে সর্তকতা নিয়ে শিবিরের আয়জন করেন বিধান চন্দ্র বিশ্ব বিদ্যালয় ।
কাকদ্বীপ ব্লকের কাকদ্বীপ বিধানচন্দ্র বিশ্ববিদ্যাশয়ে শতাধিক চাষিদেরকে হাতে কলমে প্রশিক্ষন দেন কৃষি গবেষনাগার কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা।১৯৮৮ সাল থেকে শুরু হয়েছে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পথ চলা।
তারপর গোটা রাজ্য কৃমি সমন্বিত অনুসন্ধানে নামেন বিজ্ঞানীরা।দক্ষিন বঙ্গের নদীয়া ,হুগলী ,দুই ২৪ পরগনায় কৃমির প্রকোপ পরেছে ১০ থেকে ১০০ ভাগ।উচ্চ তাপমাত্রা (২৫-২৮ সে.) ও হালকা মাটি এদের বসবাস ও বংশবিস্তারের জন্য খুবই সহায়ক।
পূর্বের খবর: সরকারি প্রকল্পের উপভোক্তাদের সচেতনতা শিবির
বৃষ্টি ও সেচের জলে এবং কৃষি যন্ত্রপাতির মাধ্যমে এদের বিস্তার হয়।বেশি প্রভাব দক্ষিন সুন্দরবনের উপকূল বর্তী এলাকায় ।কাকদ্বীপ মহকুমা সাগর , পাথরপ্রতিমা,কাকদ্বীপ ,নামখানা চারটি ব্লক থেকে আসা চাষিরা কৃমি নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা কর্মসুচিতে যোগদেন।যেখানে হাতে কলমে প্রশিক্ষনদেন প্রশিক্ষকেরা।
কৃমি দমনে চাষিদের প্রশিক্ষনে উঠে আসে একঘেয়েমি চাষ বাদ দিয়ে চাষ পরিবর্তনের কথা। চাষের মাঝখানে গাঁদা অথবা হলুদ চাষ ,শস্য পর্যায়ে কিছু চাষ করা। পাশাপাশি রাসায়নিক সারের মাত্রা কমিয়ে চাষ করা । জৈব সারে চাষ শুরু কথা বলেন প্রশিক্ষকেরা।
যা চাষের জমিকে উরবরতা সঙ্গে কৃমি আক্রমনের হাত থেকে দূর করা যাবে । সম্ভব হলে জমি পতিত রাখতে হবে।জমি জলাবদ্ধ রাখলেও কৃমি মারা যায়।
তাই সম্ভব হলে জমি কয়েক সপ্তাহ কয়েক মাস পর্যন্ত জলাবদ্ধ রাখতে হবে।বীজ তোলা রৌদ্রপূর্ণ দিনে সূর্য কিরণে স্বচ্ছ পলিথিন দ্বারা কমপক্ষে ৩-৪ সপ্তাহ ঢেকে রাখতে হবে।অর্ধ কাঁচা মুরগির বিষ্ঠা হেক্টরপ্রতি ৪-৫ টন চারা লাগানোর ২১ দিন আগে জমিতে প্রয়োগ করে মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে।
প্রশিক্ষনে চাষ নিয়ে এমন সচেতনতায় উপস্থিত থাকতে পেরে খুশি চাষিরা।চাষ পরিবর্তনের অনেক চাষিরা দ্বিমত প্রকাশ করেছেন।যদিও সচেতনা সঙ্গে সর্তকতা মধ্যে দিয়ে কৃমি শত্রুর হাত থেকে সুন্দরবনের চাষিরা কতোখানি রক্ষা পাবে এখন সেটাই দেখার।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584