নিজস্ব সংবাদদাতা, পূর্ব মেদিনীপুরঃ
গত কয়েকদিন আগে পেঁয়াজের দাম যেভাবে আকাশছোঁয়া হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাতে মধ্যবিত্তের কপালে প্রায় হাত পড়ার মতন অবস্থা বলা চলে।
মাসের শেষে একদিকে যেমন পকেটে টান তেমনি অপরদিকে পেঁয়াজের অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধি হওয়ার ফলে নাজেহাল আমজনতা। এই অবস্থাকে কাটিয়ে তুলতেই সরকারের তরফ থেকে টাস্কফোর্সের মাধ্যমে নজরদারি শুরু হয় রাজ্যের দোকানে দোকানে।
টাস্কফোর্সের তরফ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয় প্রতিটি পেঁয়াজ দোকানের সামনে টাঙিয়ে রাখতে হবে পেঁয়াজের দর। এমনকি যে কোনও সময় টাস্কফোর্সের দল পৌঁছে যাবে পেঁয়াজের দোকানে। আর এরপরেই হঠাৎ কমতে শুরু করে পেঁয়াজের দাম।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন সবজি দোকানে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি প্রায় ১০০ টাকা বা তারও উপরে হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এখন জেলার বিভিন্ন জায়গায় এই চিত্রের কিছুটা বদল ঘটেছে।
রবিবার সকালে বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা গেল কোথাও পেঁয়াজের দাম ৮০ টাকা আবার কোথাও ৭০ টাকা। ফলত ক্রেতারা আগের থেকে একটু নিশ্চিন্ত হয়েছেন মাসের শুরুতে।
আরও পড়ুনঃ গরু পাচার করতে গিয়ে ধৃত তিন বাংলাদেশি যুবক
তবে পেঁয়াজের দাম আরও কমবে এই আশাই করছেন সাধারণ মানুষ। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে যে সমস্ত সুফল বাংলা স্টলগুলি খোলা হয়েছিল সেখানেও অনেক কম দামে বিক্রি করা হয়েছিল পেঁয়াজ, যার ফলে কিছুটা হলেও সুরাহা মিলেছিল সাধারণ মানুষের। কিন্তু সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে পেঁয়াজ সরবরাহ না হওয়ায় ক্ষোভও ছিল সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে।
বর্তমানে এক ধাক্কায় এই রূপ পেঁয়াজের দাম কমায় এখন খুশি ক্রেতারা। পেঁয়াজের দাম কমাতে কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে এ দেশ থেকে সমস্ত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ একাধিক দাবি নিয়ে বাম-কংগ্রেস লংমার্চের আয়োজন
এমনকি মিশর থেকেও বেশ কিছু পরিমাণে পেঁয়াজ আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর জেরে অনেকাংশে পেঁয়াজের দাম কমবে বলে মত অর্থনীতি বিশেষজ্ঞদের।পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির ফলে যেমন সমস্যায় পড়েছিলেন ক্রেতারা, তেমনই বিক্রি কম হওয়ার জন্য ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন বিক্রেতারাও।
মহিষাদলের এক পেঁয়াজ বিক্রেতা সুভাষচন্দ্র মাইতি জানান, “দাম বেড়ে যাওয়ার সময় বিক্রি অনেকটাই কমে গিয়েছিল। যার ফলে অনেকটাই ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল। কিন্তু গত এক-দু’দিনে পেঁয়াজের দাম একটু কমায় এখন বিক্রিও কিছুটা বেড়েছে।”
অপরদিকে এক ক্রেতা সঞ্জয় সরকার বলেন, “একদিকে মাসের শেষ অন্যদিকে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি। ফলে আমাদের পেঁয়াজ খাওয়া বন্ধ করে দিতে বাধ্য হতে হয়েছিল। কিন্তু এখন পেঁয়াজের দাম কমায় কিছুটা সুবিধা হয়েছে।”
পেঁয়াজের এইরূপ অগ্নিমূল্য দামবৃদ্ধির ফল দেশীয় মুদ্রাস্ফীতির উপরেও প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। মহিষাদল রাজ কলেজের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সুবিকাশ মুখার্জি জানান, “এটি দীর্ঘস্থায়ী ভিত্তিতে কিছুটা মুদ্রাস্ফীতির ইঙ্গিত সূচক। কিন্তু আশা করা যাচ্ছে আগামী তিন মাসের মধ্যে এই পরিস্থিতির কিছুটা বদল ঘটবে”।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584