সুদীপ পাল,বর্ধমানঃ
কথায় বলে ক্যান্সার রোগের কোন চিকিৎসা নেই। জটিল এই মারণ রোগ নিয়ে আতঙ্কে থাকেন সবাই। মানকর রামকৃষ্ণ পূর্ণানন্দ বিদ্যাপীঠের তরফ থেকে ‘টাটা মেডিকেল সেন্টার’, কলকাতা শাখার সহযোগিতায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ২৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সী মহিলাদের বিনামূল্যে ক্যান্সার জীবাণুর স্ক্রিনিং করা হল। ডাঃ অসীমা মুখার্জি আট জন মেডিকেল সেন্টারের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন।
জরায়ু মুখের ক্যান্সার স্ক্রিনিং কি এই প্রশ্ন করতে অসীমাদেবী জানান, জরায়ুর মুখে ক্যান্সার স্ক্রিনিং এর উদ্দেশ্য হলো ক্যান্সার হওয়ার আগে কোষের পরিবর্তনগুলি খুঁজে বের করা।কখনো কখনো অস্বাভাবিক কোষগুলি নিজে নিজে স্বাভাবিক কোষে পরিবর্তন হয়।
কিন্তু কোন কোন মহিলার ক্ষেত্রে এই অস্বাভাবিক কোষগুলি আগের অবস্থায় ফিরে না গিয়ে ক্যান্সারে পরিণত হয়। এই অস্বাভাবিক কোষগুলির ১০ থেকে ১৫ বছর আগে ক্যান্সারে পরিবর্তন হতে।
আরও পড়ুনঃ বিনামূল্যে চক্ষু পরীক্ষা শিবির
সেই কারণে সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার প্রতিরোধ করার জন্য এই অস্বাভাবিক কোষগুলির নিয়মিত পরীক্ষা করা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা করা দরকার।
জরায়ুমুখের ক্যান্সারের লক্ষণ কী?এর উত্তরে তিনি বলেন, দুটি মাসিকের মধ্যবর্তী রক্তস্রাব, শারীরিক সম্পর্কের পরে রক্তপাত, শারীরিক সম্পর্কের সময় কোন রকম অস্বস্তি অথবা যন্ত্রণা, স্থায়ীভাবে মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরেও রক্তপাত।
তিনি বলেন,এখানে যে স্ক্রিনিং করা হচ্ছে তাতে যাঁদের পজিটিভ আসবে তাঁদের কলকাতায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। যাঁদের নেগেটিভ আসবে তাঁদের আবার যখন দু’বছর পর ক্যাম্প করা হবে তখন পুনরায় স্ক্রিনিং করা হবে।
কিন্তু শুধু জরায়ুমুখের ক্যান্সার নিয়ে কেন এই সচেতনতা শিবির? ক্যান্সার তো শরীরের অন্যান্য অংশে হতে পারে! তিনি বলেন, মেয়েদের মধ্যে এটি সবথেকে স্বাভাবিক বা কমন। তবে এই টেস্ট ত্রিশ বছর বয়সের পর করলে যদি নেগেটিভ রেজাল্ট আসে তাহলে ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা অনেকখানি কমে যায়। বিদ্যাপীঠের শিক্ষক কৌশিক ভট্টাচার্য্য বলেন, মানকরে এর আগে এই ধরনের ক্যাম্প হয়নি।
খুব স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষের মধ্যে এই ক্যাম্প ক্যান্সার সম্পর্কে বিশেষভাবে সচেতন করল। এর আগে আই ক্যাম্প হয়েছিল তাতে মানুষ সাড়া দিয়েছিলেন। কিন্তু এই ক্যাম্পে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ তার কারণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মহিলারা এখানে এসেছেন এবং সচেতনতা শিবিরে অংশগ্রহণ করেছেন।
বিদ্যাপীঠের অধ্যক্ষা বেদাত্মা পুরী বলেন, প্রত্যেক সাত মিনিটে ভারতে একজন মারা যাচ্ছেন ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে। এই ধরনের শিবির এর মাধ্যমে মানুষের সেবা করতে পেরে আমরা ধন্য। টাটা মেডিকেল সেন্টারকে তিনি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান। অসীমাদেবী অবশ্য বিদ্যাপীঠকে ধন্যবাদ জানিয়ে এই ধরনের ক্যাম্প যাতে ভবিষ্যতে নিয়মিত আয়োজন করা যায়, তার ব্যবস্থা করার জন্য বলছেন।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584