তপন চক্রবর্তী,উত্তর দিনাজপুরঃ
উত্তর দিনাজপুর জেলার দিন মজুররা একশো দিন দুইশো দিনের কাজের কথাই শোনে, কিন্তু তা দিয়ে তাদের পেট ভরেনা।ভোট এলে এমন গালভরা প্রতিশ্রুতি র কথা শুনে শুনে তাদের কান পচে গেছে।একশো দিনের কাজের মধ্যে যারা বছরে দশদিন কাজ পায়না তাদের কাছে এমন গাল ভরা প্রতিশ্রুতির কি দাম থাকতে পারে।
তাই দিনমজুর দীনেশ,পরেশের মত আর সব দিন মজুরের দল এসব শুনতে ও চায়না বিশ্বাসও করেনা।গ্রামের দিন মজুরা খুব ভালো করেই বুঝে গেছে এসব তাদের জন্য নয়।তাদেরকে কাজের খোঁজ করে নিজেদের ভাগ্য নিজেদেরই তৈরী করে নিতে হবে।
পাঁচ বছর অন্তর ভোট এলেও ভোট বাবুদের কথার কোন গুরুত্ব অন্যদের কাছে থাকলেও তাদের কাছে এসব বিলাসিতা মাত্রই।আমাদের ধারণা একশো দিনের কাজ বুঝি গ্রামের দিনমজুরা প্রত্যেকেই পেয়ে থাকে।একথা একদম সঠিক নয়।গ্রামের পঞ্চায়েত থেকে যদিওবা জব কার্ড করে দেয় কিন্তু তারপর সেই কার্ড দিয়ে কাজ জোগাড় করতে মাথার ঘাম পায়ে পরলেও কোন কাজ জোগাড় হয়না।
আরও পড়ুনঃ কংগ্রেস কোনভাবেই সেলিমের হয়ে লড়বে না
আসলে গ্রামের দিনমজুরদের সবার জব করে দেবার মানেই সবার জন্য একশো দিনের কাজের বরাত নেই।সবার কার্ড হয়েছে মানেই গ্রামের দিনমজুরদের সবাইকে একশো দিনের কাজ দেওয়া হচ্ছে তা পঞ্চায়েত থেকে প্রচার করা হয়ে থাকে।অনেকের জব কার্ড থাকলেও তা দিয়ে তাদের কোন কাজ হয়না।গ্রামপঞ্চায়েত বাবুদের যারা তল্পিবাহক হতে পারবে তাদের ভাগ্য কিছুটা হলেও সুপ্রসন্ন হতে পারে।তবে কাজ যদিওবা কয়েকদিন পায় সেখান থেকে তাদের পঞ্চায়েত সদস্যদের খুশি রাখার ব্যবস্থাও করতে হয়। ।এই হচ্ছে গ্রাম্য ভারতের প্ৰকৃত চেহারা।
এখন ভোটের সময় গ্রামের হতদরিদ্র মানুষদের জন্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যে ভাবে ভোট প্রচারে এসে বক্তব্য রাখেন তাতে মনে হয় গ্রামের মানুষদের চেয়ে আরকেও সুখী নেই ভূভারতে।কিন্তু আসলেই কি তাই?একদম নয়।উত্তর দিনাজপুর শুধু নয় এই দৃশ্য রাজ্যের সর্বত্রই এক।গ্রামে যদি সারা বছর কাজই পায় তাহলে কোন দুঃখে ভোর হতে না হতেই একটি ভাঙা সাইকেলে ভর করে ডালা কোদাল নিয়ে দল বেঁধে শহরের উদ্দেশ্যে এসে পথের মোড়ে মোড়ে একটা কাজ পাবার অপেক্ষায় বসে থাকে।এই দৃশ্য নিত্যদিনের।
আমাদের একটা ধারণা আছে গ্রামের দিনমজুররা কিছুই বোঝেনা,আমরাই সব বুঝে থাকি।কিন্তু আমাদের চালাকিটা গ্রামের দিনমজুরেরা খুব ভালো করেই বুঝে ফেলেছে।গ্রামের একশো দিনের কাজ সবাই পায়না।গ্রামের একশো দিনের কাজ পেতে গেলে অনেক কাঠখর পড়াতে হয়।গ্রামের একশো দিনের কাজ জব কার্ড থেকেও তারা বঞ্চিত।গ্রামের একশো দিনের কাজ দীনেশ,আসারু ও পরেশদের কাছে শুধু স্বপ্ন ছাড়া আর কিছু নয়।
সরকার যাদের জন্য একশো দিনের কাজ দেয় তারা না পেয়ে কিছু কিছু ভাগ্যবান গ্রামেই আছে তারা এই সুযোগ পেয়ে থাকে।ফলে একশো দিনের কাজ যে উদ্দেশ্যে সরকার চালু করেছে সাফল্যের থেকে ব্যর্থতার পরিমান অনেকগুন বেশি।সরকার তথা শাসক দলের রাজনৈতিক নেতাদের উচিৎ একশো দিনের কাজকে একশো ভাগ পাবার ক্ষেত্র নিশ্চিত করে গ্রামের হত দরিদ্র দিন মজুরদের গ্রামের মধ্যেই কাজ যাতে পেতে পারে তা একশো ভাগ সুনিশ্চিত করে দিনমজুরদের মুখে হাসি ফোটানোর ব্যবস্থা করা।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584