হোটেলেই কন্ট্রোল রুম খুলে বসলেন মুখ্যমন্ত্রী

0
136

নিজস্ব সংবাদদাতা,পশ্চিম মেদিনীপুরঃ

the chief minister start control room in hotel
জেলা পরিষদের কন্ট্রোল রুম। নিজস্ব চিত্র

‘ ফণী’ মোকাবিলায় রাজনীতি নয়,মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সকলকে এক হয়ে কাজ করার আবেদন জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।নির্বাচনী কর্মসূচিতে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার বিকেলেই তিনি চলে আসেন পশ্চিম মেদিনীপুরে।শুক্রবার আরামবাগ লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী অপরূপা পোদ্দার ও ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী দেব ওরফে দীপক অধিকারীর সমর্থনে ঘাটাল ও চন্দ্রকোনার মাঝে ক্ষেত্ৰপালের মাঠে তাঁর নির্বাচনী সভা করার কথা ছিল।

বৃহস্পতিবার রাতেও জানিয়ে দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীর সেই সভা হচ্ছে।সকাল সাড়ে ন’টার সময় তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি সংবাদ মাধ্যমকে জানান,প্রবল দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের সভা বাতিল করা হয়েছে।৪ মে দাঁতনে যে সভা হওয়ার কথা ছিল তা স্থগিত করা হয়েছে।সভাগুলির পরবর্তী দিন পরে জানানো হবে।

সভা বাতিল করলেও মুখ্যমন্ত্রী বসে থাকেননি। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই তিনি খড়গপুরের যেখানে থাকছেন সেই গ্রিন ল্যান্ড হোটেলে কন্ট্রোল রুম খুলে বসেন।এই জায়গাটিকে বেছে নেওয়ার কারন,এখান থেকে পূর্ব মেদিনীপুর , পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম এই তিন জেলার পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা যাবে।
শুক্রবার সকাল থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর চোখ ছিল টিভির পর্দায়।

আরও পড়ুনঃ ফণী প্রতিরোধে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জেলা পরিষদের বিশেষ কন্ট্রোল রুম

যখন দেখছেন ফণীর তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছে পুরী সঙ্গে সঙ্গে জরুরি বৈঠেকে বসেন আধিকারিকদের সঙ্গে।হোটেলের বারান্দায় মুখ বাড়িয়ে দেখে নেন আকাশের মেঘ ঘন কালো।যেন মনে হবে রাত ঘনিয়ে আসছে। রাস্তার দিকে মুখ বাড়িয়ে দেখেন মানুষজন , যানবাহন চলাচল করছে কিনা,যদিও ফণীর আতঙ্কে এদিন সকাল থেকেই রাস্তায় মানুষজনের ও যানবাহনের যাতায়ত ছিল কম।

ফণীর মোকাবিলায় এবং দুর্যোগের খবর জানতে এদিন সকাল থেকেই নিজের নির্বাচনী কর্মসূচি বাতিল করে কন্ট্রোল রুম খুলে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।পূর্ব মেদিনীপুর ,পশ্চিম মেদিনীপুর , ঝাড়গ্রামে ঝড় বৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির খবর নেন।

রাজ্য জুড়ে পরিস্থিতির খবর নেন। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখেন। যোগাযোগ রেখে চলেন নবান্নে থাকা রাজ্যের মুখ্যসচিব ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের সঙ্গে এবং কলকাতার পরিস্থিতি জানতে বারবার খোঁজ নেন পুরমন্ত্রী ও মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে।

টেলিফোনে কথা বলেন পূর্ব মেদিনীপুর,পশ্চিম মেদিনীপুর , ঝাড়গ্রামের জেলা শাসক,পুলিশ সুপার ও জেলা পরিষদের সভাধিপতিদের সঙ্গে। তাঁদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে বলেন , সবসময় পরিস্থিতির দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।যেকোনো মুহূর্তে যা কিছু ঘটতে পারে। এনডিআরএফ টিম কোথায় ,তাঁরা মানুষজনকে বিপদসঙ্কুল স্থান,উপকূল থেকে সরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে গিয়েছে কিনা তাও খোঁজ নেন।

বিপজ্জনক বাড়ি থেকে মানুষজনেক সরানো হয়েছে কিনা,বিদ্যুৎ খুঁটির সামনে যাতে কেউ না থাকেন,যাঁদের বাড়ির ওপর গাছ রয়েছে তাঁদের যদি মাটির বাড়ি হয় তাঁদের যেন সেখান থেকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ঝড়ে যাঁদের বাড়ি ভেঙেছে তাঁদের যাতে অবিলম্বে ত্রাণ দেওয়া হয় এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয় তা দেখতে বলেন জেলা শাসক ও সভাধিপতিদের।এভাবেই শুক্রবার সারাদিন মানবিক ভাবে দুর্যোগ মোকাবিলা করতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রীকে।

এদিকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাপরিষদের কাছে বিকেল পর্যন্ত পাওয়া হিসেবে ধরা পড়েছে – জেলার দাঁতন -২ ব্লকে ২৫ টি বাড়ি ভেঙেছে, খড়গপুর- ২ ব্লকে ভেঙ্গেছে ৪৭ টি বাড়ি,খড়গপুর- ১ ব্লকে ১৪ টি,মেদিনীপুর শহরে ৫১ টি,মেদিনীপুর সদর ব্লকে ১৪ টি ,নারায়নগড়ে ৫টি,শালবনীতে ৯টি, গড়বেতা -৩ ব্লকে তথা চন্দ্রকোনা রোডে ২০ টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।মোট ১৮৫ টি বাড়ি ভেঙ্গেছে প্রাক ফণী ঝড়েই।জেলা জুড়ে জারি হয়েছে হাই এলার্ট।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here