বিলুপ্তির পথে ঝিনুক থেকে চুন প্রস্তুতি শিল্প

0
305

নিজস্ব সংবাদদাতা,দক্ষিণ দিনাজপুরঃ

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর শহরের ১নং ওয়ার্ডের কাদিঘাট এলাকায় দীর্ঘ ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রাকৃতিক উপায়ে ঝিনুক থেকে চুন প্রস্তুত করছেন এখানকার তামলি সম্প্রদায়ের ৫ পরিবারের সদস্যরা।এই সদস্যদের চুন তৈরি করে রুজি রোজগার হয়।

নিজস্ব চিত্র

গঙ্গারামপুর-মালদহ ৫১২ নং জাতীয় সড়কের কাদিঘাট এলাকায় সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার ধারে দেখা যায় বড় বড় উনুনে ঝিনুক পুড়িয়ে চুন প্রস্তুত চলছে।এই বিষয়ে চুন প্রস্তুতকারী বিজয় তামলি ও বিমল তামলি জানান, “প্রাকৃতিক ভাবে এই চুন প্রস্তুত করা এবং নানান গ্রাম থেকে নদীর ঝিনুক আমরা কিনে নিয়ে সংগ্রহ করি এবং সেগুলো গাড়ি করে নিয়ে এসে সেখান থেকে চুন তৈরি করি।

নিজস্ব চিত্র

এই চুন তৈরি করার কাজটিও বেশ খাটুনির,২৪ ঘন্টা ধরে বড় বড় উনুনে পোড়ানো হয়,এরপর চুন তৈরি করার শেষে তাকে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে আবার তাকে জল দিয়ে রেখে তিন ঘন্টা ঘোলাতে হয়,তারপর কাপড়ে ছেঁকে রাখার পর সেটি যখন আস্তে আস্তে জমতে শুরু করে তখন বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয় এবং আমরা সেটিকে প্যাকেট করে গ্রামে গঞ্জে হাটে বাজারে বিক্রি করে থাকি।”

বড় উনুনে জাল দেওয়া হচ্ছে ঝিনুক শামুক।নিজস্ব চিত্র
সংগ্রহ করা ঝিনুক শামুকের খোসা । নিজস্ব চিত্র

এই বিষয়ে সঞ্জয় তামলি নামে আরেক চুন প্রস্তুতকারী জানান, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী চুনের উপর ঋণ থাকা সত্ত্বেও আমরা কোন সাহায্য পাইনি,পাশাপাশি আজো অব্দি আমরা কোন রকম সরকারি সহযোগিতা পায়নি, এলাকার নেতা-মন্ত্রীরা বা সরকারি কোন মানুষ আমাদেরকে গুরুত্ব দেননি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ বন্দর বে-দখলের প্রতিবাদে বিজেপির বিক্ষোভ

এই তামলি সম্প্রদায়ের ৫ পরিবারের সদস্যরা ১৫-২০ হাজার টাকা আয় করলেও গ্রাম থেকে ঝিনুক সংগ্রহ করতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয় তাতেই তাদের প্রায় সব চলে যায়।কোন রকমে টেনেটুনে সংসার চালাতে হয় তাদের।গ্রাম থেকে ২০০ টাকা করে ঝিনুক কিনে বাড়িতে নিয়ে এসে চুন প্রস্তুত করে ৩ টাকা প্যাকেট হিসেবে বিক্রি করে।

এই চুন শুধুমাত্র পানে খাওয়ার জন্য বিক্রি হয়।কিন্তু বর্তমানে পাথরের চুনয় বাজারে ঢুকে যাওয়ায় এদের ব্যবসা মার খেয়েছে পাশাপাশি লাভের মুখ খুব কমই দেখেছে এই পরিবার। এরা জানান, “সরকারি সহযোগিতা না থাকার ফলে আমাদের লক্ষ্মীর ভাঁড়ে টান পড়েছে ,তাই আমাদের কথা চিন্তা করে যদি সরকার একটিবার আমাদের সাহায্য করেন তাহলে আমরা খুব উপকৃত হব।”

বাপ-ঠাকুরদার আমলে চলে আসা তামলি সম্প্রদায়ের প্রাকৃতিক নিয়মে চুন প্রস্তুত ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি সাহায্যের করুন আর্জি জানান ৫ টি পরিবারের সদস্যরা।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here