শ্যামল রায় কালনা
দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা মেরামতের দাবি ছিল পূর্বস্থলী এক নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত এলাকার গ্রামবাসীদের। বেহাল রাস্তা মেরামত না হওয়ায় চলাফেরা করতে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে ছিলেন এলাকার বাসিন্দারা।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান সহ সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক কে বলা সত্ত্বেও বেহাল রাস্তা মেরামত হয়নি।
তাই এই পুজোর আগেই গ্রামের মানুষ ঠিক করে যে সকলে চাঁদা তুলে এই বেহাল রাস্তা মেরামত করা হবে। না হলে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে হাঁটু জল জমে যাওয়ায় রাস্তা যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পুজোর মুখে এলাকার ছেলেমেয়েরা এবং পরিবারের মহিলারা চরম সমস্যার মধ্যে পড়বেন।। তাই চাঁদা তুলে বেহাল রাস্তা মেরামত শুরু করে দিয়েছেন এলাকার মানুষ।
বৃহস্পতিবার এলাকার বাসিন্দা প্রশান্ত ঘোষ, অভিজিত ঘোষ ও বিধান জানিয়েছেন, “আমরা নিজেরাই ধান সহ বিভিন্ন সবজি বিক্রি করে চাঁদা তুলে আমরা এই বেহাল রাস্তা মেরামতে হাত দিয়েছি।
এমনকি দিদিকে বল কর্মসূচিতে আমরা এই বেহাল রাস্তার কথা এলাকার মানুষ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। আমরা গ্রামের মানুষ ঠিক করি যে রাজনীতির রং বাদ দিয়ে আমরা এই বেহাল রাস্তা মেরামত করব।”
রাস্তা মেরামতের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। পূর্বস্থলী ১ নং ব্লকের দোগাছিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন বেলগড়িয়া গ্রামের ঘটনা।
আরও পড়ুনঃ কাটমানি ফেরত ও সেই টাকায় রাস্তা মেরামতের দাবিতে অবরোধ
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ “আমাদের গ্রামের রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ এখনও মাটির রাস্তা, এবং ভাঙাচোরা, যা আমাদের সাধারণ গ্রামবাসীর জীবন বিপন্ন করে তুলছে। অসুস্থ রুগী, গর্ভবতী মহিলা, সাধারন ছাত্র ছাত্রী এবং আমাদের কৃষকরা, ছোট ব্যবসায়ীরা, যারা গ্রামীণ অর্থনীতির ভিত্তি তাঁদের জীবন বিপন্ন হয়ে উঠছে।
সাধারণ জীবন যাপন ব্যাহত হচ্ছে। মাত্র ৩ কিলোমিটার রাস্তা আজও মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়ন যজ্ঞের আওতায় আসেনি। দীর্ঘ এত বছর ধরে আমাদের মতন প্রান্তিক মানুষেরা বঞ্চিত হচ্ছেন। গর্ভবতী মহিলা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, কৃষকেরা নিজেরা ন্যায্য মুল্যের ধান বিক্রি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং ছাত্র ছাত্রীরা তাদের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, সাধারণ ছোট ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যাবসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।”
মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বারবার জানানো হয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েত কে জানিয়েও কোনও সুরাহা করতে হয়নি। এক হাঁটু কাদা এবং গর্তে পঞ্চায়েত সামান্য ইঁট বা মাটি দিয়েও রাস্তা সাধারণ মানুষের হাঁটাচলার উপযোগী করে তোলেননি এই উৎসবের মরসুমে।
বাসিন্দাদের আরোও অভিযোগ “দীর্ঘদিন পঞ্চায়েত আমাদের একটি মধ্যযুগীয় জীবন দিয়ে রেখেছে যেখানে অন্যান্য গ্রাম ঢালাই রাস্তা এবং সমস্ত সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে। আমাদের গ্রামও যাতে এই সুযোগ সুবিধা পায় এবং গ্রামের রাস্তাটি যদি সারিয়ে তোলা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি”। এই মর্মে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠিও পাঠিয়েছে গ্রামের মানুষ।
ইতিমধ্যেই বেলঘড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছ থেকে দাসপাড়া এবং ঘোষপাড়া হাটতলা পর্যন্ত মোট তিন কিলোমিটার রাস্তা গ্রামের মানুষ চাঁদা তুলে মেরামতের কাজ করছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584