মনিরুল হক, কোচবিহারঃ
ভোটের ফল প্রকাশের পর অশান্ত কোচবিহার। তৃণমূল বিজেপি সংঘর্ষে আহত ৬ বিজেপি কর্মী। ঘটনাটি ঘটেছে দেওচড়াই গ্রাম পঞ্চায়েতের বক্সিরকুটি এলাকায়।ঐ ঘটনার পর আহতদের উদ্ধার করে তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।ওই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় তুফানগঞ্জ থানার পুলিশ। ওই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয় পুলিশ। ওই ঘটনায় তুফানগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।অভিযোগ, ভোটের ফল প্রকাশের পর বিজয় মিছিল শেষে বাড়ি ফেরার পথে বিজেপি কর্মীদের উপর বাঁশ-লাঠি বল্লম নিয়ে হামলার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে।ওই ঘটনায় বল্লমের কোপে মহম্মদ এরশাদ আলি নামে বিজেপি কর্মীর আঙুল কেটে যায়।
আরও পড়ুনঃ শীতলখুচিতে তৃণমূলের কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে
গুরতর আহত হয় আরও ৫ জন বিজেপিকর্মী।যদিও তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বরা।বিজেপি সূত্রে জানা যায়,আহত ওই ৬ জনের নাম মোক্তার আলি মিয়া(৫৬), মালেক মিয়া(৩৭),এন্দাদুল হক(৩২), মহম্মদ এরশাদ আলি(৩৬),গুণজর মিয়া(৪০), আব্দুল বারেক মিয়া(৪৫)।জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে সাড়ে ৮টা নাগাদ বিজেপি কর্মীদের বিজয় মিছিল করা হয়।
সেই মিছিল করে বক্সিরকূটি কিছু বিজেপি কর্মী সমর্থকদের সাথে দেখা করার জন্য মহম্মদ এরশাদ আলি আরও বেশ কয়েকজন যান।সেই সময় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যার বাড়িতে কিছু তৃণমূলের দুষ্কৃতী জমায়েত হয়।সেই সদস্যার বাড়ির কাছে যেতে না যেতেই তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা বাঁশ, লাঠি, বল্লম নিয়ে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলা চালায়। সেই ঘটনায় বল্লমের কোপে আঙুল কেটে যায় এক কর্মীর আহত হয় আরও ৫ জনের বেশি। তারা প্রত্যেকে বর্তমানে তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে বিজেপি কর্মী মহম্মদ এরশাদ আলি বলেন, “আমি বক্সির কুটি এলাকায় এক বিজেপি কর্মীর সাথে দেখা করতে যাচ্ছিলাম বেশ কয়েকজনের সাথে।সেই সময় দেওচড়াই গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৪৮ নং বুথের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যা মমতা বিবি বাড়িতে কিছু দুষ্কৃতী জমায়েত হয়েছিল।
তখন তাদের বাড়ি পাড় হতে যাওয়ার সময় আমাদের উপর আক্রমন চালায় বাঁশ, লাঠি, বল্লম, ফালা নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়।আমাদের স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা ছুটে আসেন তাদের কে ব্যাপক মারধর করে।”
মোক্তার মিয়া, মালেক মিয়া এন্দাদুল হক, আব্দুল বারেক মিয়া, গুণজর মিয়া তারা গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
কোচবিহার জেলা বিজেপির যুব মোর্চার সম্পাদক রাজিব সরকার বলেন, “আমরা শান্তি ভাবে বাইক মিছিল করে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলাম। তার কিছুক্ষন পরে শুনতে পেলাম আমাদের বক্সিরকুটি গ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভাইদের উপর হামলা করেছে তৃণমূল আশ্রিত কিছু দুষ্কৃতী।ওই ঘটনার খবর পেয়ে আমি আমাদের দলের পক্ষ থেকে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সব রকম সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি।”
যদিও ওই অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা মমতা বিবি জানান, “ওই ঘটনার সাথে আমাদের দলের কোন ব্যক্তি যুক্ত নয়। তার কারন আমরা সারা দিন বাড়ি থেকে কোথায় যাই নি।গতকাল রাতে সাড়ে ৮টা নাগাদ বিজেপির কয়েকজন কর্মী এসে আমার বাড়িতে হামলা করেছিল এবং এলাকার প্রায় ৬ টি বাড়ি ঘর ভাঙচুর করে।
তারপর স্থানীয় লোকজন তাদের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠে এবং তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।ভোট হয়ে যাওয়ার পর থেকে বিজেপি কর্মীরা আমাদের তৃণমূল কর্মীদের হুমকি দেখায়। তারপর ভোটের ফলাফল পেয়েই বিজেপি কর্মীরা এলাকার বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করেন।”
অন্যদিকে, সিতাই বিধানসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা সংগঠনের সম্পাদিকা ও সিতাই পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষের বাড়িতে বোমাবাজি ও ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় দুটি গাড়ি, তিনটি বাইক ভাঙচুর করা হয়। সকালে বাড়ির সামনে বেশ কয়েকটি বোমাও দেখতে পাওয়া যায়।পরে পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে ওই বোমা গুলি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584