শ্যামল রায়,কালনাঃ
বছরের পর বছর তাঁত শ্রমিকদের কোন মজুরি বৃদ্ধি হয়নি তাই চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছেন শ্রমিকরা।
কয়েকমাস পরেই পুজো,পুজোর মুখে চরম ব্যস্ততার মধ্যে তাঁত শ্রমিকরা কাজ করে চলছেন।কিন্তু মজুরি বৃদ্ধি না হওয়ার কারণে তাদের পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে ব্যর্থ হচ্ছেন বলেই অধিকাংশের অভিমত।
কালনা কাটোয়া মহকুমা এবং তৎসংলগ্ন নবদ্বীপ ব্লক শান্তিপুর ফুলিয়া বিপুল সংখ্যক তাঁত শ্রমিকদের বাসস্থান।
শ্রমিকরা জানাচ্ছেন যে,দীর্ঘ চার থেকে পাঁচ বছর ধরে কোন মজুরী বৃদ্ধি হয়নি উল্টে যা মজুরি ছিল তার থেকেও কম মজুরিতে কাজ করাচ্ছেন বহু মালিক।মজুরি বৃদ্ধি না হলে এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হতে হবে বলেই জানাচ্ছেন শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের আক্ষেপ,শুধু মাত্র মজুরির কারনেই কমছে তাঁত পণ্য উৎপাদনে যুক্ত শ্রমিকের সংখ্যা।নবদ্বীপ ব্লকেও তাঁত শ্রমিকরা মজুরির দাবিতে সরব।শুধু মজুরি নয় কোন আর্থিক সুযোগ সুবিধা থেকেই তারা বঞ্চিত বলে জানিয়েছেন।
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের প্রস্তুতি ও তারা নিচ্ছে বলে জানান।সেই আন্দোলনের প্রথম ধাপ হিসাবে নবদ্বীপ ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিককে ইতিমধ্যেই স্মারক লিপি জমা দিয়েছেন তাঁত শ্রমিকরা।রাজনৈতিকভাবে বাম শ্রমিক সংগঠনগুলিও তাঁত শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনের কথা জানান।
কালনা মহকুমার কালনা ১ নং ব্লকের ধাত্রীগ্রাম সমুদ্রগড় নসরতপুর শ্রীরামপুর গ্রাম প্রভৃতি এলাকায় অধিকাংশ মানুষ তাঁতের উপর নির্ভরশীল।সমুদ্রগড়ে রয়েছে বিশাল তাঁতের হাট,এছাড়াও বর্তমান সরকারের তৎপরতায় ধাত্রীগ্রামে তাঁতের হাট করা হয়েছে।
এই তাঁত আরবান হাটে তার শ্রমিকদের এবং তাঁত মালিকদের জন্য সমস্ত রকম সুযোগ-সুবিধা রয়েছে এবং তাঁতের সরঞ্জামসহ শাড়ি বিক্রির বাজার রয়েছে এই দুই জায়গায়।অথচ যারা তাঁতের শাড়ি তৈরিতে শ্রম দেয় তাদের মুখে খাবার জুটছে না।নেই কোন সরকারি সুযোগ সুবিধা।
নবদ্বীপের তাঁত শ্রমিক নেতা হারাধন দেবনাথ জানিয়েছেন যে,দীর্ঘ চার থেকে পাঁচ বছর যাবৎ তার শ্রমিকদের কোন মজুরি বৃদ্ধি হয়নি বরং শ্রমিকদের মজুরি দিয়ে কাজ করাচ্ছেন মালিকপক্ষ তাই ইতিমধ্যেই আমরা দাবি জানিয়েছি তার শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি না হলে তারা কাজ বন্ধ করে দেবেন।
এছাড়াও হাতে বোনা তাঁতের কদর অনেকটাই কমে গিয়েছে তাই পাওয়ার লুমের বাড়বাড়ন্তে তার শ্রমিকরা এখন অনেকটাই বঞ্চিত অবহেলিত এবং কাজ হারাচ্ছেন।
পাওয়ার লুমের কাপড় দেদার বিক্রি হচ্ছে বাজারে তাই তাঁত শ্রমিকের মালিকরাও অভিযোগ করেছেন মজুরি বৃদ্ধি করলে তাদের কাপড় যে হারে বিক্রি করা দরকার বাজারে বিক্রি হচ্ছে না তাই তারাও সংকটের মধ্যে পড়েছেন অভিযোগ মালিকপক্ষের।
একদিকে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির সংকট অন্যদিকে তাঁত শাড়ি বিক্রির হার কমে গিয়েছে মালিকদের অভিযোগ অর্থাৎ দোদুল্যমান অবস্থায় চরম সংকটের মুখে তাঁত শিল্প।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584