নিজস্ব সংবাদদাতা, মুর্শিদাবাদঃ
বিজেপির পৌরমন্ডল কমিটির নির্বাচনকে ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারপিটের ঘটনায় জখম হয়েছেন ১৩ জন কর্মী। মঙ্গলবার দুপুরে সৈদাবাদের একটি বেসরকারি সভাগৃহে বহরমপুর উত্তর ও দক্ষিণ পৌর মন্ডল কমিটির নির্বাচন ছিল।
নিয়ম অনুযায়ী, বুথের মন্ডল সভাপতির দায়িত্ব ছিল উত্তর ও দক্ষিণ টাউনের বুথ সভাপতি নির্বাচন করার। কিন্তু দেখা যায় উত্তরের মন্ডল সভাপতি বিভাস হাজরা বুথ সভাপতি নির্বাচনের জন্য যে যে নাম সুপারিশ করেন, তা সবই বহিরাগত।
বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, মন্ডল সভাপতি আগে থেকে ৭৪ জন বুথ সভাপতির নাম সুপারিশ করেন, এ দিন দলীয় সভায় তাঁদের একজনের নামও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
কাঞ্চন মৈত্র নামের একজন বহিরাগত কর্মী জেলার কিছু নেতাদের মদতে নিজে থেকে কিছু বুথ সভাপতির নাম সুপারিশ করেন, আর এই নিয়েই দুই পক্ষের মধ্যে বাধে ঝামেলা। এ দিন কাঞ্চন মৈত্রের তত্ত্বাবধানে বহিরাগত প্রচুর লোক এসে চড়াও হয় বিভাস হাজরা এবং তাঁর দলের অন্যান্য কর্মীদের উপর। ঝামেলা বেড়ে শেষ পর্যন্ত হাতাহাতি-মারধরে পৌঁছায়। জখম হন মন্ডল সভাপতি বিভাস হাজরা।
এই খবর পাওয়া মাত্র বিভাস বাবুর কলেজ পড়ুয়া ছেলে সেই সভাগৃহে এসে পৌঁছালে তাঁকেও বেধড়প মারধর করে বহিরাগত দলীয় কর্মীরা।
আরও পড়ুনঃ চরের দখল ঘিরে সংঘর্ষ ফারাক্কায়, মৃত ১
বিশ্বস্ত সূত্র থেকে আরও জানা গিয়েছে, বিজেপির বহিরাগত এই দলীয় কর্মীরা জেলার কিছু নেতাদের মদতেই এমনটা করার সাহস পেয়েছে, নাহলে এত ঔদ্ধত্য দেখানোর সাহস বিজেপির কোনও দলীয় কর্মীর নেই। এটি সম্পূর্ণ ভাবেই তাঁদের পার্টি ট্যাগলাইন এর বাইরে।
জানা গিয়েছে, কাঞ্চন মৈত্র এমন মন্তব্যও করেছেন, উত্তরকে দাবিয়ে দিলাম, এবার দক্ষিণের মন্ডলকেও দাবাতে হবে। পার্টি এথিক্স এর বাইরে গিয়ে দলীর কার্যকর্তাদের উপর এভাবে চড়াও হওয়ার ঘটনা আগে দেখা যায়নি। এমনকি জানা গিয়েছে, বহিরাগত দলীয় লোকেরা কালকে মদ্যপ অবস্থায় দলীয় সভাগৃহে এসেছিল। ঘেরাও করে রেখেছিল সভাগৃহ। তদুপরি, জেনারেল সেক্রেটারি বিশ্বনাথ গুহকে তারা গুলি করে খুন করার হুমকি দিয়েছে।
বচসা, হাতাহাতি এই পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে সভাগৃহের ভিতর চেয়ার-টেবিল ছোঁড়া-ভাঙা হয়। মন্ডল সভাপতি এবং অন্যান্য বুথ সভাপতিরা মনে করছেন, এই ঘটনা এভাবে চলতে থাকলে তাঁরা অন্য ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবেন। কারণ তাঁদের মতে, কাল তাঁরা যে ঘটনার সম্মুখীন হলেন, তা মোটেই বিজেপির কালচার না।
অন্যদিকে দক্ষিণ পৌর মণ্ডল সভাপতি সমরেন্দ্রনাথ দত্তের কথায়, তাঁদের জেলা অফিসে বাইরে থেকে কিছু তৃণমূল কর্মী এসে বিক্ষোভ দেখায়। এই ঘটনায় ৬ জন জখম হয়েছে।
তবে সমরেন্দ্র বাবুর এই কথা শোনার পর, শহরের তৃণমূল সভাপতি নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়, সমরেন্দ্র বাবুর কথা পুরোপুরি অস্বিকার করে জানান, শুনেছি নতুন-পুরনো বিজেপি কর্মীদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব হয়েছে, আর ওদের সাংগাঠনিক নির্বাচনে আমাদের লোক কেনই বা যাবে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584