সুদীপ পাল, বর্ধমানঃ
ঐতিহাসিকরা মনে করেন, ১৭৭৭ সালে ফরাসি বণিক লুই বোনার্ড এবং ইংরেজ বণিক কার্ল ক্লাসে ভারতের নীল চাষের সূচনা করেছিলেন। পরবর্তীকালে সারা ভারত জুড়ে নীল চাষের প্রসার ছড়িয়ে পড়ে। ১৮৩৬ সালে বাংলা জুড়ে এক হাজারেরও বেশি নীলকুঠি তৈরি করা হয়েছিল। সেই সময় অম্বিকা কালনাতেও গড়ে উঠেছিল নীলকুঠি। কালনার জাপট পাড়ার মিশন অঞ্চলে বেশ কয়েকটি নীলকুঠি ছিল। এছাড়া পাথুরিয়া মহলে কয়েকটি ভগ্নপ্রায় নীলকুঠি আজও দেখতে পাওয়া যায়।ইতিহাস শিক্ষিকা অপর্ণা সরকার বলেন, ‘বিভিন্ন নদী থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় কালনায় প্রতি বছর প্রায় ১৪০০ মন নীল রপ্তানি হতো। এই রপ্তানির প্রধান পথ ছিল ভাগীরথী নদী।’
আরও পড়ুন: পাঠাগার নেই বিপাকে পড়ুয়ারা
নীলকর মানেই অত্যাচারের ইতিহাস। চাষিরা দাদন নিতে না চাইলেও তাদের জোর করে দাদন দেওয়া হতো। ছলে-বলে একবার যদি দাদন দিয়ে দেওয়া যেত তাহলে সেখান থেকে আর বেরিয়ে আসার সাধ্য থাকতো না চাষীদের। তারপর নীল চাষ চলত বংশানুক্রমে। বলাবাহুল্য নীলকরদের সেই অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা পায়নি কালনার কৃষকরাও। তবে দীর্ঘদিন অত্যাচার সহ্য করার পর চাষিরা গর্জে উঠেছিলেন। কালনায় নীল বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শ্যামল মন্ডল নামে এক ব্যক্তি।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ছাত্র সুজিত মন্ডল বলেন, নীলকরদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রথম দিকে চাষিরা মুখ বুঝে সহ্য করলেও পরে সশস্ত্র প্রতিবাদে নেমেছিলেন। তাঁরা বহু নীলকুঠি আক্রমণ করে জ্বালিয়ে দিতে থাকেন। পরবর্তীকালে রাসায়নিক পদ্ধতিতে নীল উৎপাদন শুরু হলে নীল চাষ উঠে যায়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584