পিয়ালী দাস,বীরভূমঃ
মেধা তালিকায় চতুর্থ কলা বিভাগে প্রথম বীরভূমের সাঁইথিয়া টাউন হাই স্কুলের রাকেশ দে।তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৯২।
সোমবার উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ঘোষণার পর সাঁইথিয়ার বাসিন্দা রঘুনাথ দের বাড়িতে আনন্দে ভেসে যায় পরিবারের সদস্যরা। তবে এই ফল দেখে মুখে হাসি নিয়ে রাকেশ জানায়, আশা করেছিলাম ভালো ফল হবে, এতটা ভালো হবে সেটা ভাবি নি, তবে এখনো অনেক পথ এগোনো বাকি। প্রথমত সে একজন আদর্শ মানুষ হতে চায়।একই সাথে হতে হবে ইতিহাসের অধ্যাপক, বাজি রাখতে হবে ভারতের ঐতিহাসিক ঐতিহ্যকে।
রাকেশ জানায় ইতিহাস নিয়ে পড়া স্বপ্ন ছোটবেলা থেকেই ছিল,ইতিহাস সবসময় ভাল লাগতো,কখনো ইতিহাস পড়তে গিয়ে বিরক্তি আসেনি, জীবনের রসদ খুঁজে পেতাম ইতিহাসের মধ্যে। তাই মাধ্যমিকে যখন দশম স্থান অধিকার করি তখনই ঠিক করে নি ইতিহাসের অধ্যাপক হওয়া ছাড়া অন্য কোনো কিছু আর হব না।
তাই সেই লক্ষ্যেই ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছি। চ্যালেঞ্জটা নিজেই নিজেকে দিয়েছিলাম, সায়েন্স নিয়ে তো সবাই ভালো ফল করে, কিন্তু আর্টস নিয়ে সেভাবে ভালো ফল করে না,তাই আমি সেই চ্যালেঞ্জটা নিয়ে সফল হয়েছি বলে ভালো লাগছে।
আরও পড়ুনঃ চিকিৎসক হওয়ায় আগামীর লক্ষ্য পূর্ব মেদিনীপুরের তন্ময় মাইকাপের
বাবা-মা, স্কুলের শিক্ষক, সহপাঠীদের,অনেক সহযোগিতা পেয়েছি, তাই আজকে আমি এই ফল করতে পেরেছি।কৃতি ছাত্র রাকেশ দের বাবা রঘুনাথ দে পেশায় বি.এস.এন.এল কর্মী, তিনি বলেন ছেলে ছোটবেলা থেকেই খুব বই মুখো, পড়তে ভালবাসে।
কখনো পড়তে বাধা দিইনি। লমাধ্যমিক পাস করার পর বলল ইতিহাসের অধ্যাপক হতে চাই, প্রথমে একটু অবাকই হয়েছিলাম, এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে প্রত্যেকটা ছাত্র ছাত্রী যেখানে ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, অথবা কোন বেসরকারি সংস্থার সিইও হতে চায় সেখানে আমার ছেলে ইতিহাসের অধ্যাপক হতে চায়, অত্যন্ত ব্যতিক্রমী লেগেছিল, কিন্তু পরে ভেবে দেখলাম ব্যতিক্রমী রাই ইতিহাস তৈরি করে। তাই কোন আপত্তি না জানিয়ে ছেলেকে উৎসাহ যুগিয়েছি।
রাকেশের মা কাকলি দে, তিনি বলেন, আমি গৃহবধূ, কোনদিনও ছেলেকে পড়াশোনা নিয়ে একটি শব্দও খরচা করতে হয় নি। উল্টে পড়ার জন্য আমাকে গিয়ে ওকে খাইয়ে দিতে হতো। পাশে থেকেছি উৎসাহ দিয়েছি কিন্তু আজকের কৃতিত্ব ছেলের নিজের।
সাঁইথিয়া টাউন হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বল কুমার সাহা বলেন,ছোট থেকেই অত্যন্ত মেধাবী রাকেশ। অত্যন্ত ক্ষুরধার বুদ্ধি সম্পন্ন ছাত্র।অসীম ধৈর্য, তাইতো ইতিহাসের অধ্যাপক হতে চেয়েছে। শিক্ষক হিসেবে খুবই আজ গর্বিত বোধ করছি, কারণ আজকাল ছাত্রছাত্রীরা অনেক কিছুই হতে চায় কিন্তু ইতিহাসের অধ্যাপক হতে চায় না। তাই ভালো লাগছে রাকেশ অধ্যাপক হতে চেয়েছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584