মনিরুল হক, কোচবিহারঃ
“আর যাতে কেউ আমাকে ‘কাকা’ করে না ডাকে।” রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে কার্যত করজোড়ে এমনটাই আবেদন জানালেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। কিন্তু তাঁর এমন আবেদন কেন তা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে রাজি হননি মন্ত্রী মশাই। রাজনৈতিক মহলের ধারনা, একসময় মন্ত্রীর হাত ধরে রাজনীতিতে উঠে এসেছিলেন সাংসদ তথা দলের জেলা যুব সভাপতি পার্থ প্রতিম রায়। তিনি মন্ত্রীকে কাকা বলে সম্বোধন করেন। এছাড়াও আরও বেশ কয়েকজন অঞ্চল, ব্লক ও মহকুমা স্তরের তৃণমূল নেতা কর্মী রবীন্দ্রনাথ বাবুকে কাকা করেন ডাকেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দলীয় অন্তর কোন্দলে এই দুই কাকা- ভাইপোর সম্পর্ক কার্যত সাপে-নেউলে হয়ে উঠেছে। আর তাই এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে রবীন্দ্রনাথ বাবুর এহেন মন্তব্য সাংসদ পার্থ প্রতিম রায়কে উদ্দেশ্য করেই করা হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারনা।
তবে এনিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে খোলসা করে বলতে রাজি না হয়ে বরং বলেছেন, “এখন থেকে কাকার বদলে কারুর যদি কিছু সম্বোধন করে ডাকতেই হয়, তবে দাদা, জেঠু বা পিসা বলে ডাকুক। তাতে আমার কোন আপত্তি নেই।” এদিকে রবীন্দ্রনাথ বাবুর কাকা ডাকে আপত্তি প্রসঙ্গে সাংসদ পার্থ প্রতিম রায়কে প্রশ্ন করা হলে বলেন, “বাবা বাবাই হয়, কাকা কাকাই হয়। এর থেকে আর বেশী কিছু বলার নেই আমার।”
কোচবিহারে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠী মাদার-যুব’র লড়াই চরম আকার নিয়েছে। এক সময় শুধু দিনহাটায় ওই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে শুরু করলেও এখন সেই লড়াই মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিধানসভা এলাকা নাটাবাড়ি কেন্দ্রের দেওয়ানহাট, জিরানপুর ও পানিশালা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যেই পানিশালা গ্রাম পঞ্চায়েত দখল নিয়েছে যুব গোষ্ঠী। দেওয়ানহাট গ্রাম পঞ্চায়েত শেষ পর্যন্ত মাদার দখল করতে পারলেও অনেক কাঠ খর পোড়াতে হয়েছে। গতকাল দেওয়ানহাটে বেশ কিছু বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার পিছনেও ওই দুই গোষ্ঠীর লড়াইকেই দায়ী করছে বিভিন্ন মহল। আর এই অবস্থায় অনেকটাই রাজনৈতিক ভাবে চাপে পড়ে গিয়ে এমন মন্ত্রী এমন মন্তব্য করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ দিনহাটায় বেআইনি পিস্তল ও গুলি সহ গ্রেপ্তার সিভিক ভলেন্টিয়ার
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584