নিজস্ব সংবাদদাতা,আলিপুরদুয়ারঃ
স্বামী বায়ু সেনার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে চাকুরি করতেন অবসরের পর মারা গেছে।তাও দশ বছর হয়ে গেছে।তিন মেয়ে দুই ছেলে।তিনমেয়ের সকলেরই প্রতিষ্ঠিত পরিবারে বিয়ে হয়ে গেছে। দুই ছেলের বড় ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন।

দীর্ঘদিন বাড়ি ছাড়া।ছোট ছেলে ফটোগ্রাফির দোকান হাসিমারা গুরুদুয়ার এলাকায়।একা অবহেলা অনাদর আর অনাহারে জীবন কাটছে ষাটোর্ধ বৃদ্ধা মিলন পন্ডিতের।
যেদিন স্বামীর পেনটশের টাকা তোলার সময় আসে সেদিনটা অবশ্য একটু অন্যরকম কাটে এই বৃদ্ধার। ছেলে হাসিমারা থেকে আসেন।ছেলে আর ছেলের বউ মিলে নতুন পরিষ্কার কাপড় পড়িয়ে ব্যাংকে নিয়ে যান।

সেদিন পেনশন তোলার পর হোটেলে খাওয়া দাওয়া করা হয়।কিন্তু মাসের বাকি ২৯ দিনের জন্য ভরসা বাড়ির পাশের স্কুলের মিডডে মিল বা প্রতিবেশিদের দয়া দাক্ষিন্যে যা জোটে তাই দিয়ে।

আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া দক্ষিন জিতপুর এলাকার মিলন পন্ডিতের দিন যাপন এখন প্রতিবেশি সকলেরই চোখে জল আনে।কিন্তু কারও পক্ষেই কিছু করা সম্ভব হয় না।

আর সেই কারনেই তাদের আবেদন ছেলে মেয়েরা না দেখলে না দেখবে প্রশাসন এই মহিলাকে বাড়ি থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসা ও হোমের ব্যবস্থা করুক।
আরও পড়ুনঃ অসহায় মা মেয়ের পাশে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন

প্রতিবেশি প্রবীর সরকার বলেন, “ স্বামীর দেওয়া বাড়িতেই থাকেন মিলনদেবী।ঘরে আলো নেই।নেই বাড়িতে জলের কোন ব্যবস্থা।নোংরা মলিন কাপড়ে সব সময় এদিন ওদিক ঘুরে বেড়ায়।দেখে খুব কষ্ট হয়।
একসময় এই কাকিমা আমাদের ডেকে ডেকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে চা খাওয়াতো।আরও কত খাবার দিত।আর এখন ভোর হলে খিদেয় এর ওর বাড়িতে খাবার চেয়ে চিৎকার করতে থাকে।”
ছোটো ছেলে জ্যোতিষের স্ত্রী একই এলাকায় শ্বশুর বাড়িতে থাকেন।তিনি বলেন, “ আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাকে হোমে দেব। এতদিন হোমের ঠিকানা খুজে পাচ্ছিলাম না।
শনিবার সেই ঠিকানা খুজে পেয়েছি আমরা। মায়ের মাথা খারাপ হয়েছে। সেই কারনে গালিগালাজ করে। আমি খুব শিগগির মাকে হোমে দেব।”
এদিন বৃদ্ধাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি কিছুই বলতে চাইছিলেন না।শুধুই আউরে যাচ্ছেন ‘আমি খুব ভুল করেছি।’
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584