পিয়ালী দাস, বীরভূমঃ
তখন ছোট্টো এক মেয়ে। হেসে খেলে ঘুরে বেড়ায় আর পাঁচজনের মতোই। অক্ষর পরিচয়, পুতুল খেলা, মামাবাড়ি ভারী মজা, অনুভব গুলিও সেই একইরকম চেনা চেনা। বেড়ে ওঠার সেই সময়টার অনেকটাই কেটেছিল রামপুরহাটের কুসুম্বা গ্রামে,মামা বাড়িতে। সেই ঘর, উঠোন, বাগান অনেকাংশই রয়ে গিয়েছে একই রকম। কিন্তু বদলে গিয়েছে সেই ছোট্ট মেয়েটা। জীবনের অনেক গুলো পর্ব পার করে এখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তিনি। হাজার ব্যস্ততায় এখন বরং মামাবাড়িই তাঁর কাছে দূরে। দীর্ঘ ৫ বছর পরে কুসুম্বা গ্রামের সেই মামাবাড়ি আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৩০ শে জানুয়ারি। মামাবাড়ির পাশেই বিয়ের নিমন্ত্রণ মুখ্যমন্ত্রীর। একই সঙ্গে মামাবাড়িতে রেখে আসা ছেলেবেলার স্মৃতির ধুলো সরানোর অবসর। মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চই খুশি। তবে দ্বিগুণ খুশি কুসুম্বা গ্রামের এই পরিবার দুটিও। মুখ্যমন্ত্রীর মামাবাড়িতে এই মুহূর্তে রয়েছেন তাঁর মামা অনিল মুখোপাধ্যায়, ভাই নীহার মুখোপাধ্যায় ও ভাইয়ের স্ত্রী পম্পা মুখোপাধ্যায়। মামি মারা গিয়েছেন। ভাগ্নি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী । সময় হয় না। সবই জানা আছে। তবুও স্নেহের প্রত্যাশা তো থেকেই যায়। এত দিন পরে মমতা আসবে, ভাবতেই আলো আলো গোটা বাড়ি।
আরও পড়ুন: কালনা সাহিত্য মজলিসের উদ্যোগে কবিতা উৎসব
নেহাতই মধ্যবিত্ত গ্রাম কুসুম্বা। বেশির ভাগ মানুষের জীবন চলে চাষের ভরসায়। মমতার মামা অনিলবাবুও কৃষিজীবী। জমির উপর নির্ভর করেই চলে সংসার। তার ছেলে, অর্থাৎ মমতার মামাতো ভাই নীহারবাবু, বীরভূম জেলা পরিষদের সদস্য। এইটুকু রাজনৈতিক পরিচয় ছাড়া মোটের উপর সাদামাটা জীবনযাত্রা গোটা পরিবারের। এখানেই বেড়াতে আসবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসা আদরের ভাগ্নি। আনন্দের সঙ্গে গর্ব মিশতে তো তাই বাধ্য।
মামার বাড়ির পাশেই থাকতেন মন্টু দাস। বহু বছর ধরে কালিঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতেই রয়েছেন তিনি। তাঁরই বড় ছেলে কৃশানুর বিয়ে। সেই অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে ঘুরে আসবেন মামা্য বাড়িও।
এ দিন কুসুম্বা গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, বিয়ে বাড়িতে সাজো সাজো রব। হবেই বা না কেন? নিমন্ত্রিত অতিথি যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। বাড়ির সামনে বিশাল প্যাণ্ডেল তৈরি করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীকে যে ঘরে বসানো হবে সেই ঘরের দেওয়ালে পড়েছে সুবজ রঙের প্রলেপ। গোটা বাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। সোমবার রাতেই কুসুম্বায় নিজের বাড়িতে চলে এসেছেন মন্টুবাবুও।
পাত্র কৃশানু বললেন, “দিদিতো আমাদের বাড়ির লোক। আমার বাবাই নিমন্ত্রণ থেকে সব কিছু ঠিক করেছেন। দিদি আসছেন এতেই আমরা খুশি। দিদির পছন্দের সব খাবারই বৌভাতের মেনুর তালিকায় রাখা হচ্ছে।’’
বিয়েবাড়ির জমকালো প্রস্তুতি তো রয়েছেই, মামাবাড়ির ঘরোয়া প্রস্তুতিও পাল্লা দিতে পারে তার সঙ্গে। আর কিছুতে না হোক, আন্তরিকতায় তো বটেই।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584