আর্থিক অনটনের মধ্যেও কণ্ঠে এখনো অম্লান তরজা গান

0
132

সিমা পুরকাইত,দক্ষিন ২৪ পরগনাঃ

peaceful melodies song | newsfront.co
গোপাল চন্দ্র হালদার, শিল্পী।নিজস্ব চিত্র

আধুনিক যুগে হারিয়ে যেতে বসেছে কবিয়ালদের কবিগান ও তরজা গানের অাসর। শিল্পীদের কদর কমেছে দিনে দিনে।অনেক শিল্পির সরকারি ছিঁটে ফোঁটা সাহায্য মিলেছে ঠিকই কিন্তু আজও অনেক তরজা শিল্পীরা অন্ধকারেই জীবন কাটাচ্ছেন।অন্ধকারে থেকে লন্ঠনের আলোর মতো দিক দিক করে জলছে এক তর্জা শিল্পী।তরজা শিল্পীদের মধ্যে যার গানের মাহাত্ত পেয়েছিল একটা সময় গোটা সুন্দরবন জুরে, যার গানের শব্দে ঘুম ভাঙতো এলাকাবাসির।

peaceful melodies song | newsfront.co
ভাগ্যদয় হালদার,ছেলে।নিজস্ব চিত্র
peaceful melodies song | newsfront.co
বৈশাখি হালদার।শিল্পীর পুত্রবধূ।নিজস্ব চিত্র

সরকারি সাহায্য ছাড়া অভাব অনটনে হারিয়েছে সেই শিল্পীর তরজা গান। তাইসব সব হারিয়ে সেই শিল্পী শেষ গান ধরেছে ‘আমার দুঃখের জ্বালা গিরিবালা আর কতো বাকি’। দক্ষিন সুন্দরবনের মথুরাপুর দু’নম্বর ব্লকের কাশিনগর গ্রাম।একচিলতে টালিঘরে বাস তর্জাশিল্পী পঁচাশি বছরের গোপাল চন্দ্র হালদারের।বাবা ধীরেন চন্দ্র হালদারের আদুরে কবিয়াল ছিলেন গোপাল চন্দ্র হালদার।

নিজস্ব চিত্র
peaceful melodies song | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

ছোট থেকে গানের প্রতি ছিল তার আগ্রহ ও ভালোবাসা।মাত্র বারো বছর বয়সে কবিগানের তালিম ধরেন তৎকালিন সনামধন্য গাইয়ে গবিন্দ স্বর্নকারের হাত ধরে।পরিবারের অজান্তে ধিরে ধিরে কবিয়াল হয়ে ওঠা।

peaceful melodies song | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র
peaceful melodies song | newsfront.co
মোমেন্টো।নিজস্ব চিত্র

একটা সময় জঙ্গলে ভরা গোটা সুন্দরবন দাপিয়ে বেরিয়েছিল তার তর্জা কন্ঠে।নিজেই গরে নিলেন দল জেলা ছাড়িয়ে ভিনজেলা এমনকি এপার বাংলা ছাড়িয়ে ওপার বাংলায় চলে গেলেন এই তর্জা শিল্পি ।রামায়ন,মহাভারত নিয়ে একের পর এক তর্জা গানের আসর কাঁপিয়ে ছিলেন তিনি।

peaceful melodies song | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

শুধু তাই নয় সামাজিক জীবন জাপন নিয়ে গান বেঁধে ছিলেন এই শিল্পী।একের পর এক মেডেল , মোমেন্টো ,সার্টিফিকেট সুনাম অর্জন করেছিলেন ।আজ তর্জা গানের মাহাত্ত হারাতে বসেছে।অভাব যখন এই শিল্পীর দুয়ারে আসে।রোগ জীর্ন শরীর বার্ধক্য হারাতে বসে তর্জা শিল্পীর কন্ঠের গান।স্ত্রী,ছেলে ভাগ্যদয় হালদার ও বৌমা বৈশাখি হালদারকে নিয়ে কোন ক্রমে বেঁচে আছেন শিল্পী গোপাল চন্দ্র হালদার।

আরও পড়ুনঃ বোলান গান ঘিরে উদ্দীপনা

অভাবের দরুনে নিজের পুরস্কৃত সামগ্রি বেচেছেন।চিকিৎসা করার মতো পরিস্থিতি নেই তার,মিলছেনা সরকারি কোন সাহায্য।নিজের অভাব ঢাকতে ছেলেকে এই পেশায় নিযুক্ত করেননি।দিন আনা দিন খাওয়া শিল্পীর অতীতের স্মৃতি ছাড়া আর কিছু নেই।

তোপরানো গালে চামড়া কোঁচকানো কম্পন হাত আর থর থর করা পায়ের নাচে আজও গেয়ে চলেন নিজের তর্জা গান।যা আজও শুনিয়ে বেড়ান গ্রামের মানুষদের।বাবার তর্জাগান অতীত হয়ে গেলেও আজও গর্বিত ছেলে ভাগ্যদয়।বাবার শিল্পী নামে যখন যশ পান তখনি সব দুঃখ সব বেদনা ঘুচে যায় ভাগ্যদয়ের।

বৃদ্ধ তর্জা কন্ঠ শিল্পীর বৌমা বৈশাখি হালদারের শ্বশুড়ের অভাব থাকলে নাম আর যশে অনেকটা দুর করেন।সরকারি ভাবে যদি সাহায্য মেলে। তাহলে রোগ জীর্ন তর্জা শিল্পীর শেষ বয়সে ভালো হতো বলে দাবি তার।সব অাশা সব আকাঙ্খা নিয়ে সরকারি সাহায্য ছাড়া আজও গেয়ে বেড়ান সুন্দরবনের তরজা শিল্পী গোপাল চন্দ্র হালদার।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here