সিমা পুরকাইত,দক্ষিন ২৪ পরগনাঃ
দক্ষিণ সুন্দরবন লাগোয়া কুল্পি বিধানসভা। হুগলী নদীর তটে পশ্চিম বরাবর রয়েছে কুলপি ব্লকের ছটি গ্রাম পঞ্চায়েত।
যেখান থেকে বেশকয়েকটি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকা বন্দর গড়ার পরিকল্পনা শুরু হয়েছে ।কুলপির হাঁড়া থেকে বেলপুকুর নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত চলছে বন্দর পরিকল্পনা।ইতিমধ্যে পরিদর্শন করেছে ভারপ্রাপ্ত সংস্থা আদানি। তার পর থেকে শুরু হয়েছে জল্পনা ।
সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে ডায়মন্ড হারবার ,মন্দিরবাজার জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী ঘোষনা করেন কুল্পি বন্দর গড়ার কথা।তারপর থেকে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর । ১৯৯৪ সালে পরিকল্পনা কুলপি বন্দর করা করা। বিশ্বব্যাপী বন্দর পরিচালনাকারী সংস্থা ডিপি ওয়ার্ল্ড প্রকল্পের অংশীদার।প্রস্তাবিত কুলপি বন্দরের পরিচালনা সংস্থায় বেঙ্গল পোর্ট-এর ৪৪.৫% অংশীদারিত্ব রয়েছে।
বাকিটা কিভেন্টার গ্রুপ এবং ডব্লিউবিআইডিসি-এর সাথে অংশীদারিত্ব।প্রথমে কুলপিতে মোট বিনিয়োগ ১২০০ কোটি টাকা হবে বলে ধরা হয়েছিল। যেখানে ৭০০ একর জমির প্রয়োজন হবে বলে পরিকল্পনা করা হয়েছিল।বন্দরটিতে মোট ১২ টি জেটি নির্মানের কথা ছিল।কুলপি বন্দরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের চুক্তি ২০০৪ সালের আগস্টে স্বাক্ষরিত হয়।
আরও পড়ুনঃ ফের রাজনৈতিক সংঘর্ষ উত্তপ্ত দুর্গাপুর
তবে কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের কাছ থেকে বেশ কিছু আপত্তি থাকার কারণে এটি বিলম্বিত হয়।কুলপি বন্দরের জন্য খসড়া চুক্তি ২০০৮ সালে মে মাসে জাহাজ মন্ত্রকের সচিবের উপস্থিতিতে চূড়ান্ত করা হয়।এর পর কেভেন্টার গ্রুপ অভিযোগ করেছে যে কেওপিটি কুলপি বন্দর প্রকল্পকে সামনে রেখে চলেছে । কিন্তু কেন্দ্রীয় জাহাজ-মন্ত্রক এই প্রকল্পে গতিশীলতা দেখাচ্ছে না।
এর পরে আদানি গোষ্ঠিও কুলপি বন্দর নির্মানে আগ্রহ দেখায়।২০১৯ সালের মার্চ মাসে রাজ্য সরকার কুলপি বন্দর নির্মাণের দায়িত্ব ডিপি ওয়ার্ল্ডকে দেয়।তার পর থেকে আশায় বুক বেঁধেছে সাধারন মানুষ।কুলপি ব্লকে ১৫টি গ্রামপঞ্চায়েতে লক্ষাধিক মানুষের বাস।
যেখানে ছয় থেকে সাতটি গ্রামপঞ্চায়েত রয়েছে নদীর উপকূলে।দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের চাষ আবাদ মিন ধরা আর ইট ভাটার উপর নির্ভর । ফলে আর্থিক সঙ্কটে অনেকে কলকাতায় পারিদেন রুটিরুজির কারনে। বন্দর গড়ে ওঠার প্রত্যাশা শুনলে আত্মহারা হয়ে ওঠেন অনেকে।
চাপানউতোর বাঁধে শাসক বিরোধীদের মধ্যে। শকুন্তলা পাইক সিপিএম নেত্রী প্রাক্তন কুল্পি বিধানসভার বিধায়ক জানান বন্দর হোক কুল্পিতে।বন্দর নিয়ে বর্তমান শাসক গোষ্ঠি তখন ছিল বিরোধী গোষ্ঠি।সে সময় জমি উচ্ছেদ করার ভয় দেখিয়ে বাঁধা দেয়।
তার পর বন্দ হয়ে পরে বন্দর।বাম আমলে যে পরিকল্পনা সেটা যদি বাস্তবায়িত হয় তাহলে অনেক কর্ম সংস্থান গড়ে উঠবে।শিল্প নগরি হয়ে উঠবে কুল্পি। যদিও কংগ্রেসে নেতা কৃত্তিবাস সরদারদাবি বন্দর কথাটা বাস্তবায়িত হয় সেটাই দেখার ।প্রত্যাশা, প্রতিশ্রুতিতে মানুষ বিতশ্রদ্ধ হয়েছে ।
কুল্পি বন্দর নিয়ে সরব হয়েছে বিজেপিও। বিজেপির কুল্পি ব্লকের কনভেনার প্রবীর রায় ( তনু ) দাবি, ‘বামপন্থি থেকে তৃণমূল পন্থি এরা প্রত্যেকে ব্যর্থ হবেন।তাই বন্দর যদি হয় যদি কেউ করে একমাত্র বিজেপি সরকার করবে ।’
যদিও আদানি গ্রুপ ৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়গ করবে বলে উদ্যোগ প্রকাশ করেন।হুগলী নদী পরিদর্শনের পর বেশ কয়েকটি গ্রাম পরিদর্শন করেছেন আদানি সংস্থা।
তারক নাথ প্রামানিক কুল্পি ব্লক তৃনমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘তৃণমূল পালাবদলের পর যে উন্নয়ন করেছে । সেটাকে পাথেয় করে কুল্পি মানুষের কথা ভেবে বাস্তবায়িত হবে বন্দর।
‘ রাজনৈতিক তর্জায় বন্দর ভবিষ্যৎ নিয়ে উঠছে নানান প্রশ্ন সাধারন খেটে খাওয়া মানুষরা বন্দর নির্মানের আর্জি রেখেছেন বরাবর।তাই কুল্পি শিল্প নগরী গড়ার অপেক্ষায় রয়েছেন এই এলাকার মানুষ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584