পিয়ালী দাস,বীরভূমঃ
সামনের সোমবার বীরভূমে ভোট।তার আগে শেষবেলার প্রচারে ব্যস্ত তৃণমূল প্রার্থী তথা বীরভূমের দু’বারের সাংসদ শতাব্দী রায়।মঙ্গলবার সিউড়ির লালদীঘিতে সভা রয়েছে শতাব্দীর।তার ঠিক আগেই ফের প্রকাশ্যে এল শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।
অভিযোগ,তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি আক্রান্ত হয়েছেন তৃণমূল কর্মীদের হাতেই।তাঁর বাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
মঙ্গলবার শতাব্দী রায়ের সভার ব্যাপারে কথা বলতে সেখানে গিয়েছিলেন সিউড়ির তিলপাড়া অঞ্চলের তৃণমূলের সভাপতি গণেশ রায়।সেই কথাবার্তা সেরে ফেরার পথেই তাঁর বিরুদ্ধে হামলা হয় বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
আহত অবস্থায় সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন গণেশবাবু।গণেশবাবু অভিযোগ করে বলেছেন, “কালকে শতাব্দী রায়ের প্রচারের ব্যাপারে বিকাশদার সঙ্গে কথা বলতে সিউড়ি গিয়েছিলাম।কথা বলে বাড়ি ফেরার সময় হুসনাবাদের কাছে মানস ঘোষ ও তার দলবল আমাকে মারধর করেছে।” কিন্তু হঠাৎ করে তাঁর উপর কেন চড়াও হলেন মানস ঘোষের দলবল?এই ব্যাপারে গণেশবাবু বলেন, “জানি না কেন আমাকে মারধর করা হলো।আমাকে কিছু বলার সুযোগই দেওয়া হয়নি।কিছু বলার আগেই আমাকে মারধর শুরু হরে দিল ওরা।” মানসবাবুর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ করে গণেশবাবু বলেন, “ওরা সমাজবিরোধী।বিজেপি বা তৃণমূল কিছু নয়।ওরা সমাজবিরোধী।পুলিশের খাতায় দেখতে পারেন।”
আরও পড়ুনঃ পথদুর্ঘটনায় দুই তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু,বাতিল মানসের মিছিল
তবে শুধু মারধরই নয়, গণেশবাবুর বাড়িতেও ব্যাপক বোমাবাজি করা হয়েছে বলে খবর।বোমার আঘাতে বাড়ির একতলা ও দোতলার জানলার কাঁচ ভেঙে পড়েছে। এ ছাড়াও বাড়ির বাইরে বেশ কিছু জায়গায় ক্ষতের দাগ স্পষ্ট।বাড়ির লোকেরা আতঙ্কে রয়েছেন।পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন গণেশবাবু।পুলিশ জানিয়েছে, বাড়িতে যাতে আর হামলার ঘটনা না হয়,সেটা তাঁরা দেখবেন।
কিন্তু যাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ,সেই মানসবাবু কী বলছেন?এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত মানস ঘোষের বক্তব্য, “আমি একজন সাধারণ তৃণমূল কর্মী।এই ঘটনার সঙ্গে আমার কোনও যোগাযোগ নেই। অঞ্চল সভাপতি গণেশবাবু বিগত পাঁচ বছরে কোনও কাজ করেননি।এলাকার কোনও উন্নয়ন করেননি।আর তাই তাঁর উপর অঞ্চলের সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ছিল। তবে কী কারণে এই হামলা হয়েছে।বা কারা করেছে,তা আমি বলতে পারব না। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমি গণেশবাবুর বিভিন্ন অসামাজিক কাজের প্রতিবাদ করেছিলাম বলে আমার নাম নেওয়া হচ্ছে।”
এই ঘটনায় স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার বক্তব্য,“দলের মধ্যে কোনও বিভেদ নেই। বিরোধীরা সাধারণ মানুষের সামনে এটা তুলে ধরার চেষ্টা করছে,যে এখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আছে।কিন্তু মানুষ সব জানে। এসব করে কোনও লাভ হবে না।” অন্যদিকে বীরভূম জেলার এক বিজেপি নেতার বক্তব্য, “এই ঘটনা বুঝিয়ে দিচ্ছে, তৃণমূলের কারও সঙ্গে কারও বন্ধুত্ব নেই।সবাই ক্ষমতা দখলের জন্য মরিয়া। এতদিন নিজের আখের গুছিয়েছে। কিন্তু এখন মানুষ সব জেনে গিয়েছেন। ওরা বুঝে গিয়েছে, আর মানুষকে ভুল বোঝানো যাবে না। আর তাই এই ধরণের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ঘটনা আরও বেশি করে বাইরে আসছে।”
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584