পুণ্যতিথিতে অজয় নদে স্নান সেরে রাধাবিনোদ মন্দিরে পুজাে পুণ্যার্থীদের

0
60

পিয়ালী দাস,বীরভূমঃ

temple | newsfront.co
নিজস্ব চিত্র

আজ মকর সংক্রান্তির পুণ্যতিথিতে অজয় নদে স্নান করলেন কয়েক হাজার মানুষ। স্নানের সুবিধার জন্য হিংলো বাঁধ থেকে জল ছাড়া হয়নি এবার। তবুও কোমর পর্যন্ত জল থাকায় অসুবিধা হয়নি। পুণ্যার্থীদের জন্য কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। অজয়ের চরেই চলছে জয়দেবের কেঁদুলি মেলা৷ মেলায় আগত দর্শনার্থীদের সুবিধার কথা ভেবে প্রশাসনের তরফে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়৷ পুণ্যস্নানের পর বীরভূমের রাধাবিনোদ মন্দিরে পুজাে দিচ্ছেন পুণ্যার্থীরা। কেঁদুলি মেলায় দূর-দুরান্ত থেকে আসেন সাধক,ফকির,বাউলরা।

বাউল গানের মরমিয়া সুরে ভেসে ওঠে মেলার মাঠ। এবার তার অন‍্যথা হলোনা প্রায় ১০০ টি স্থায়ী আখড়া বসেছে মেলায়। মেলায় পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে মোতায়েন রয়েছে প্রচুর সাফাই কর্মী। কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে রয়েছে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবাও৷ এই মেলায় কীর্তনীয়াদের সারাবছরের বায়না হয়ে থাকে। কলার কাঁদ বিক্রি হয়,কিন্তু এবার তা হয় নি। স্বাভাবিক ভাবেই অনেকের মন খারাপ।

mandir | newsfront.co
পুণ্য অর্জনের আশায় পুজো দিচ্ছেন পুণ্যার্থীরা। নিজস্ব চিত্র

কথিত আছে গীতগোবিন্দ রচয়িতা কবি জয়দেব দ্বাদশ শতকে ওই গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। অবশ্য অনেকের মতে, উড়িষ্যার কেন্দুলির শ্মশানে তাঁর জন্ম হয়। জয়দেব, লক্ষণ সেনের সভাকবি ছিলেন বলে মনে করা হয়। এই গ্রামে জয়দেব দ্বারা প্রতিষ্ঠিত রাধামাধবের মূর্তির পূজিত হয়ে আসছে। এমনকি যে আসনে বসে তিনি সিদ্ধিলাভ করেছিলেন বলে মনে করা হয়, তা সংরক্ষণ করা হয়েছে। মুঘল যুগে জয়দেব কেন্দুলি সেনপাহাড়ি পরগণার অন্তর্গত ছিল।

আরও পড়ুনঃ স্পেনের তাপমাত্রা নামল হিমাঙ্কের ২৫ ডিগ্রি নিচে, তুষারপাতের জেরে মৃত্যু ৭ জনের

ঔরঙ্গজেব দ্বারা জারি করা একটি ফরমানের পর পরগণা বর্ধমানের মহারাজা কৃষ্ণরাম রায়ের অধিকারভুক্ত হয়। এই গ্রামের যুগলকিশোর মুখোপাধ্যায় বর্ধমান রাজদরবারের সভাকবি ছিলেন। অনুমান, তাঁর অনুরোধে বর্ধমানের মহারাণী ব্রজকিশোরী ১৬৮৩ খ্রিস্টাব্দে এই গ্রামে জদেবের জন্মভিটেয় রাধাবিনোদ মন্দির স্থাপন করেন। ১৮৬০-এর দশকে নির্বাক বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের রাধারমণ ব্রজবাসী এই গ্রামে তাঁদের কুলগুরু জদেবের জন্মভিটেয় নির্বাক আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন।

আরও পড়ুনঃ মকর সংক্রান্তিতে রীতি মেনে পূণ্যস্নান গঙ্গাসাগরে

বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে রাধাবল্লভ মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে বেশ কিছু মন্দির ও আশ্রম পরিবেষ্টিত এই গ্রামটি একটি ধর্মীয় তীর্থস্থানে পরিণত হয়েছে। প্রতি বছর মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে এই স্থানে বাউল মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। মানুষের বিশ্বাস জয়দেব মকর সংক্রান্তি দিন কদমখন্ডির ঘাটে স্নান করেন। সেই বিশ্বাসেই আজও অনেক মানুষ পুণ্যলাভের উদ্দেশ্যে অজয় নদীতে স্নান সারেন।

নিউজফ্রন্ট এর ফেসবুক পেজে লাইক দিতে এখানে ক্লিক করুন
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here