শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
পুলিশের নাম শুনে দুষ্কৃতী পালানোর ঘটনা নতুন কিছু নয়। কিন্তু রবিবার ভোরে যেভাবে পুলিশের নাম শুনে ঝাঁপ দিয়ে আবদুল হোসেন আত্মহত্যা করল, তার কারণ বুঝতে পারছেন না অনেকেই। তাহলে কি তার কাছে এমন কিছু ছিল, যা ফাঁস হয়ে গেলে বিপদ হতে পারত? আপাতত এই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্তে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে আবার একজন পুলিশ কর্মী।
পুলিশ সূত্রে খবর, ফ্ল্যাটটি মালদা জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পায়েল খাতুনের নামে কেনা হয়েছিল। কিন্তু শনিবার রাত থেকে ওই ফ্ল্যাটে ছিলেন পায়েলের স্বামী মহম্মদ ইয়াসিন। যদিও খাতায় কলমে তিনি আবার ফ্ল্যাটে ছিলেন না। পুলিশ বিমানবন্দর থেকে জানতে পেরেছে, শনিবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটের বিমানে জয়পুর গিয়েছেন। আর তাঁর ফ্ল্যাটে রেখে যান সেন্টিয়া-সহ তাঁর গাড়ির চালক এবং ফ্ল্যাট দেখাশোনা করার এক কর্মীকে। রেজিস্টার অনুযায়ী ১৬ অক্টোবর রাতেই বেরিয়ে যান ইয়াসিন। যদিও আবাসনের নিরাপত্তারক্ষী থেকে বাকি সকল প্রতিবেশীদের দাবি, ফ্ল্যাটে ছিলেন ইয়াসিন, তার গাড়িচালক, রাঁধুনি এবং আবদুল হোসেন, যাকে তিনি আসার সময়ে হুগলির সুগন্ধা মোড় থেকে তুলে আনেন।
আরও পড়ুনঃ টোটো চুরির ঘটনায় দিনহাটায় গ্রেফতার ৪ যুবক
এছাড়াও একজন পুলিশ অফিসারকেও আমন্ত্রণ দিয়ে ডেকে এনেছিলেন ইয়াসিন।জানা গিয়েছে, পায়েল খাতুন নিজে শিলিগুড়িতে গিয়েছেন এবং তার স্বামী আজমের শরিফে যাবেন বলে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু কলকাতায় আসার পরিকল্পনা করে হুগলির সুগন্ধা মোড় থেকে আবদুলকে গাড়িতে তুলে নেন। পুলিশ জানতে পেরেছে, হুগলির চাঁপদানি এলাকায় তোলাবাজি দিয়ে অপরাধ শুরু করেছিল আবদুল। একসময়ে হুব্বা শ্যামলের শাগরেদ ছিল সে। হুব্বা শ্যামলের মৃত্যুর পর শাসকদলের ছত্রচ্ছায়ায় থেকেই নানা ধরনের অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছিল।
আরও জানা গিয়েছে, চিৎপুরের ওই অভিজাত আবাসনে চার কামরার ফ্ল্যাটে শনিবার রাতে মদ্যপান ও ফুর্তির ঢালাও বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। ফুর্তি করার জন্য সোনাগাছির যৌনপল্লি থেকে ফ্ল্যাটে নিয়ে আসা হয়েছিল দুই তরুণীকে। প্রচুর মদ্যপানের সঙ্গে বাজছিল বিশাল আওয়াজে গানবাজনার শব্দও।
আরও পড়ুনঃ তৃতীয়াতেই মুক্ত করে দেওয়া হল বলবিন্দর সিংকে
রাতের দিকে গোলমাল ও ভাঙচুর শুরু হয়। অন্যান্য প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ভাঙচুরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় চিৎপুর থানার পুলিশ। এদিকে ওই ফ্ল্যাটে আশ্রয় নেওয়া কুখ্যাত হুগলির চাঁপদানির মোস্ট ওয়ান্টেড ও কুখ্যাত দুষ্কৃতী আবদুল হোসেন ওরফে শান্তিয়ার ধারণা হয়, পুলিশ তাকে ধরতে এসেছে। পুলিশের হাত থেকে পালাতে চারতলার ফ্ল্যাট থেকে লাফ দেয় সে। তারপরেই তার মৃত্যু হয়।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584