শিবশঙ্কর চ্যাটার্জ্জী, দক্ষিণ দিনাজপুরঃ
একই পরিবারের তিন সদস্যের মর্মান্তিক খুনের ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানার হামজাপুর এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর থানার বাসুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের হামজাপুর এলাকার চায়নাবাজ গ্রামের একই পরিবারের তিন জন খুন হয়েছে গতকাল বিকালে।
মূলত পৈত্রিক সম্পত্তি দখলের জন্যই এই খুন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, বাবার সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে চাপ দিচ্ছিলেন অভিযুক্ত আবু তাহের মিয়া। জমি নিজের নামে লিখে নেওয়ার জন্য বোনেদের চাপাচাপির ফলে সকালে অভিযুক্তে আবু তাহের মিয়ার সঙ্গে তার বোন জামাইয়ের তীব্র বাদানুবাদ হয়। সেই সময় অভিযুক্ত আবু তাহের মিয়া তার জামাইবাবু ইদ্রিস আলিকে ব্যাপকভাবে মারধর করে এবং তার মাথা ফাটিয়ে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
এখন তিনি স্থানীয় গঙ্গারামপুর হাসপাতালে ভর্তি। কাল সকাল থেকেই বাড়ির পরিবেশ বেশ থমথমে ছিল। গতকাল বিকেল নাগাদ অভিযুক্ত আবু তাহেরের তিন বোন রোজিনা বিবি মেনকা বিবি ও ঢাকো খাতুন বাড়ির বারান্দায় বসে আলোচনা করছিলেন চিকিৎসাধীন রোজিনা বিবির স্বামী ইদ্রিস আলিকে হাসপাতালে দেখতে যাওয়ার জন্য। সেইজন্য রোজিনা বিবি হাসপাতালে যাওয়ার টোটো ডাকতে মূল রাস্তায় পর্যন্ত যান। ঠিক সেই মুহূর্তে অভিযুক্ত আবু তাহের তার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে তার দুই বোন মেনকা বিবি, ঢাকো খাতুন এবং তার এক ভাগনি প্রিয়াঙ্কা খাতুনের উপর কোদাল নিয়ে আক্রমণ চালায়।
এলোপাথাড়ি কোদালের আঘাতে তার নিজের দুই বোন ও এক ভাগনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। মারা যাওয়ার পর অভিযুক্ত আবু তাহের মিয়া সেই মৃতদেহগুলোকে মাটি দিয়ে চাপা দিয়ে লুকোনোর চেষ্টা করে। ঠিক সেই মুহূর্তে রাস্তায় টোটো ডেকে বাড়ি ফিরে আসেন রোজিনা বিবি। বাড়িতে ফিরেই রোজিনা বিবির চক্ষু চড়কগাছ। তিনি দেখতে পান তার চোখের সামনে তাঁর মেয়ে এবং দুই বোনকে খুন করে মাটি চাপা অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে।
রোজিনা বিবির চিৎকারে আশেপাশের গ্রামবাসীরা ছুটে আসেন এবং অভিযুক্ত আবু তাহের মিয়াকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। গ্রামবাসীরা গণপ্রহার দিয়ে স্থানীয় গঙ্গারামপুর থানায় খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে এসে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে গঙ্গারামপুর থানায় নিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে মৃতদেহ তিনটিকে গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ উদ্ধার করে গঙ্গারামপুর থানায় নিয়ে যায়। জানা যায় আগামীকাল মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্ত হবে। ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584