শুভম বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতাঃ
লকডাউনে আর্থিক অনটন বাড়ছে অনেক পরিবারেই। এই আর্থিক অনটন-সহ স্ত্রী ছেলের অসুস্থতার দুশ্চিন্তার জেরে সপরিবারে আত্মঘাতী হলেন বেহালার ঠাকুরপুকুরের সত্যনারায়ণ পল্লির এক বৃদ্ধ। মঙ্গলবার সকালে প্রতিবেশীরা কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে বাড়ির দরজা ভেঙে তাঁদের দেহ উদ্ধার করেন। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতরা হলেন গোবিন্দ কর্মকার(৮০), স্ত্রী রানু কর্মকার (৭০) এবং ছেলে দেবাশিস ওরফে বুলা কর্মকার (৫০)।

আরও পড়ুনঃ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন থেকে উধাও কো-মরবিড পরিসংখ্যান! উঠছে প্রশ্ন
সুইসাইড নোটে, মৃত্যুর জন্য স্ত্রী ছেলের অসুস্থতা ও আর্থিক অনটনকেই দায়ী করেছেন গোবিন্দবাবু। তাঁর স্ত্রী রানু কর্মকার (৬৫) দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। শারীরিক প্রতিবন্ধকতারও শিকার ছিলেন তিনি। ছেলেরও কোনও রোজগার ছিল না, তিনিও আংশিক ভাবে পক্ষপাতগ্রস্থ ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মত, সব মিলিয়েই অবসাদে ভুগছিলেন এই পরিবারের সকলে।

বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। ঘটনাস্থলে একটি বাটি পাওয়া গিয়েছে। তার গায়ে চক দিয়ে লেখা ‘সাবধান, বিষ।’ এমনকি পাওয়া গিয়েছে গোবিন্দবাবুর হাতে লেখা একটি সুইসাইড নোট পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিক ভাবে মৃতদের দেখে এবং পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমাণ থেকে মনে করা হচ্ছে, বিষ খেয়েই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনজন।
আরও পড়ুনঃ করোনা আক্রান্ত বিজেপি নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া
এলাকাবাসীরা জানাচ্ছেন, গোবিন্দ বাবুর স্ত্রী এবং ছেলে দুজনেই পক্ষাঘাতগ্রস্ত ছিলেন। গোবিন্দ কর্মকারের স্ত্রী রানু কর্মকার কিছুদিন আগেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন। তার অস্ত্রোপচার হয়। কিন্তু তার জন্য বেশ কিছু টাকা খরচ হয়ে যায় গোবিন্দ বাবুর। গত রবিবার গোবিন্দবাবু অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রতিবেশীরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তৃপক্ষ ফিরিয়ে দেয়। গায়ে জ্বর ছিল বলেই হাসপাতাল নিতে চায়নি, জানান গোবিন্দবাবুর প্রতিবেশীরা। বহু অনুরোধ করেও কোনও সুরাহা না করতে পেরে তাঁরা রোগী নিয়েই বাড়ি নিয়ে চলে আসেন।
তারপর থেকেই গোবিন্দ বাবু মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। মঙ্গলবার সকালে প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করলে কোনও সাড়়াশব্দ না পেলে দরজায় ধাক্কা দেন। তিনজনের নিথর দেখে হতভম্ভ এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেন।
ঠাকুরপুকুর থানার পুলিশ এসে পরিবারের তিনজন সদস্য দেহ উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ঠাকুরপুকুর থানার পুলিশ। এর পাশাপাশি এদিন নারকেলডাঙা থানার বেলেঘাটা রোডেও রেল কোয়ার্টারেও একটি রুবি যাদব (১০) নামে একটি শিশুর আত্মহত্যারও খবর মিলেছে।
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584