পিয়ালী দাস,বীরভূমঃ
আগামী কাল কৌশিকী অমাবস্যা।এই উপলক্ষে তারাপীঠে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম।ইতিমধ্যে প্রশাসন এবং তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের পক্ষ থেকে সমস্ত রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে,এ বারই প্রথম দু’রাত্রি ব্যাপী পুণ্যার্থীদের জন্য তারাপীঠ মন্দিরের দরজা খোলা থাকতে চলেছে।কথিত আছে, মহিষাসুর বধের পর শুম্ভ-নিশুম্ভের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন স্বর্গের দেবতারা।শেষে দেবতারা মহামায়ার তপস্যা শুরু করেন। সেই তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে দেবী নিজ কোষ থেকে উজ্জ্বল জ্যোতি বিচ্ছুরিত করে এক পরমাসুন্দরী দেবী মূর্তিতে আবির্ভূত হন। নিজ কোষ শরীর থেকে বের হওয়ার জন্য তিনি হলেন কৌশিকী।কৌশিকী দেবী আবার তারা ও কালীতে রূপান্তরিত হন।আবার শোনা যায়,কৌশিকী অমাবস্যার দিন তারাপীঠ মহাশ্মশানের শ্বেতশিমূল বৃক্ষের তলায় সাধক বামাক্ষ্যাপা সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন।
শনিবার দুপুর থেকেই বহিরাগত যানবাহন তারাপীঠে ঢোকা বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবছে প্রশাসন। রবিবার পর্যন্ত সেই নির্দেশ বলবৎ থাকবে। তারাপীঠ মন্দিরকে ঘিরে একাধিক ক্লোজ সার্কিট টিভি বসানো হয়েছে।ড্রোন ক্যামেরায় গোটা তারাপীঠের উপর নজর রাখা হবে।
অনেকেই বিশ্বাস করেন,ওই দিন মা তারার পুজো দিলে এবং দ্বারকা নদীতে স্নান করলে পুণ্যলাভ হয় এবং কুম্ভস্নান করা হয়।এই বিশ্বাসে আজও ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ওই দিনটিতে তারাপীঠে ছুটে আসেন। রেলপথেই বেশি মানুষ আসেন।অন্যান্য বারের থেকে এবার ভিড় বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ ছুটির দিনে শুরু হচ্ছে এই উৎসব।পায়ে হেঁটে তারাপীঠে যাওয়া যাত্রীদের জন্য রামপুরহাট মনসুবা মোড় থেকে তারাপীঠ পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করেছে তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ।তারাপীঠে ঢোকার মুখে তৈরি তোরণ রংবেরঙের আলোয় সাজানো হয়েছে।মন্দির চত্বর এলাকায় ৩০০ উর্দিধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশও রাখা হয়েছে। বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মহিলা পুলিশ মন্দির চত্বর থাকবে।
তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায় জানান,“এ বারই প্রথম দু’রাত্রি মন্দিরের দরজা খোলা থাকবে।সারা রাত ধরে পুণ্যার্থীরা মায়ের কাছে পুজো নিবেদন করতে পারবেন।তবে মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢোকার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।বাইরে থেকে মায়ের চরণ স্পর্শ করে পুণ্যার্থীদের সন্তুষ্ট থাকতে হবে।”
এর পাশাপাশি অবৈধ মদ ব্যবসায়ীদের উপরে কড়া নজর রাখা হচ্ছে। তবে সারা রাত্রি মদের দোকান খুলে রাখা যাবে না।আবগারি দফতরের রামপুরহাট মহকুমা আধিকারিক সুহৃদ রায় বলেন, “আমাদের প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চলছে। উৎসবের দু’দিন নজরদারি বাড়ানো হবে। কোনও ভাবেই অবৈধ মদ ঢুকতে দেওয়া হবে না। তবে মদের দোকান নির্দিষ্ট সময়েই বন্ধ করতে হবে”।তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান সুকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের কথা ভেবে আমরা সমস্ত রকম ব্যবস্থা নিয়েছি। পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অস্থায়ী শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে।কোনও হোটেলের খাবারে কেউ যাতে রং মেশাতে না পারে সেদিকে নজর দেওয়া হবে।শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হবে। তবে যদি গাড়ির চাপ কম থাকে তাহলে বিকেল ৪টে পর্যন্ত গাড়ি ঢোকানো হবে।”
আরো পড়ুনঃ ক্যান্সার সচেতনতা শিবির
WhatsApp এ নিউজ পেতে জয়েন করুন আমাদের WhatsApp গ্রুপে
আপনার মতামত বা নিউজ পাঠান এই নম্বরে : +91 94745 60584